ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

নির্বাচনকে আঘাত দেওয়া হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: কামাল

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নির্বাচনকে আঘাত দেওয়া হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন,   জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে যদি কোনো আঘাত দেওয়া হয় তবে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে।

বুধবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ড. কামাল হোসেন বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তবে দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমি দেখতে পাচ্ছি। আর তা না করে যদি নির্বাচনকে আঘাত দেওয়া হয় তার পরিণতি হবে ভয়াবহ। এটা সবাইকে মনে রাখতে হবে।

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস-২০১৮ ও বিজয়ের ৪৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফেডারেশন এ আলোচনা সভার আয়োজন করেন।

নির্বাচন কমিশনকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ এ নেতা বলেন, নির্বাচনের আর যে ১০দিন আছে, এই সময়ে দেশের মানুষ ও স্বাধীনতার জন্য নির্বাচন কমিশন ক্ষমতার পুরোপুরি ব্যবহার করুন। নিজেদের ক্ষমতাকে কাজে লাগান। সরকার নির্বাচন পরিপন্থী কিছু করলে তবে তা থেকে বিরত রাখার, আদেশ দেওয়ার ক্ষমতা আপনাদের (ইসি) আছে। পুলিশকে সরান। পুলিশ যেভাবে ভয়ভীতির সৃষ্টি করছে এটা থেকে মানুষকে রক্ষা করা অপরিহার্য বলে আমরা মনে করি। ভোটাররা স্বাধীনভাবে ভোট দেবে, এটা তাদের সাংবিধানিক অধিকার। এগুলো আপনাদের (ইসি) অবশ্যই জানা আছে। তবুও স্বরণ করিয়ে দিচ্ছি। আপনাদের (ইসি) ক্ষমতাগুলো কাজে লাগান।

পুলিশের ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অবিলম্বে পুলিশকে তাদের পরিপন্থী কাজ করা থেকে বিরত থাকতে বলুন। ইসিকে বলেছি পুলিশকে কি আপনারা রাস্তায় রাস্তায় আক্রমণ করতে, বাধা দিতে দায়িত্ব দিয়েছেন? রাস্তায় রাস্তায় কেন এত পুলিশ? কিসের জন্য দাঁড়িয়ে আছে? আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি এমন অবস্থায় চলে গিয়েছে যে, রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকবে? এটাকে যদি কেউ সুশাসন বলে, তবে আমি বলবো সে মিথ্যা বলছে। যে বলবে দেশে এখন সুশাসন আছে আমি বলবো সে মিথ্যুক। পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে এ কথা বলবো। পারলে ধরে নিয়ে যান আমাকে।’

সরকারের উদ্দেশ্যে ড. কামাল বলেন, লক্ষ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন সংবিধান পেয়েছি। এটা ভুলে গেলে চলবে না। তথাকথিত নির্বাচনে যদি আপনারা ৩০০ সিট চান তাহলে বলেন আমরা দিয়ে দেই। আপনারা চান আমরা দিয়ে দেই। সবাই হাত তুলে সম্মতি জানিয়ে দিয়ে দেই। আপনারা তো ইতিমধ্যে বলেছেন অসম্পন্ন কাজ করতে আরো ৫ বছর থাকতে চান। ওই ৫ বছর পর অসম্পন্ন কাজ থাকলে বলেন প্রয়োজনে আরো ৫ বছর সময় আপনাদের দেওয়া হবে। এটা নির্বাচনের নামে প্রহসন।

‘আজকে যে মানবাধিকারের কথা আমরা বলছি, সংবিধানে সে কথা স্পষ্ট করে বলা আছে যে, সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন  করতে পারবে না, পুলিশের এই ভূমিকা থাকবে না। বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত সংবিধানের মানবাধিকার, আইনের শাসনের কথা যেভাবে বলা আছে সেগুলো লঙ্ঘন করলে তাদের অসম্মান করা হয়, স্বাধীনতার লঙ্ঘন করা হয়।’

কামাল হোসেন বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরের দিকে আমরা এগিয়ে চলেছি। এ অবস্থায় আইনের শাসন, মানবাধিকার, ঐক্য সংগঠিত করে, ভোটাধিকার যেন সকলে প্রয়োগ করতে পারি সেসব নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু আমি যেটা দেখছি, ভোটাধিকার নিয়ে শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। ভোটাধিকার মানুষ প্রয়োগ করুক, স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করুক, সাধারণ মানুষ নিজের ভোট সুষ্ঠু সুন্দরভাবে প্রয়োগ করুক- এসব সংবিধানের কথা, স্বাধীনতার কথা। স্বাধীন দেশে মানুষ যদি স্বাধীনভাবে ভোট দিতে ব্যার্থ হয় তবেই এটা স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এই আঘাত দেওয়া উচিৎ না। কেননা, এই আঘাত দেশদ্রোহীতার শামিল। কেউ যদি মনে করে দেশদ্রোহীতা করে পার পেয়ে যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।

ফেডারেশনের সভাপতি ড. মো. শাহজাহানের সভাপতিত্বে  সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের (জানিপপ) চেয়ারম্যান ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার ইকতেদার আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ডিসেম্বর ২০১৮/মেহেদী/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়