নুসরাতের প্রতিবাদকে সামাজিক প্রতিরোধে রূপ দেওয়ার আহ্বান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : মাদ্রাসার অধ্যক্ষের যৌন নিপীড়ন ও আগুনে পুড়িয়ে মারার বিরুদ্ধে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির একক প্রতিবাদকে সামাজিক প্রতিবাদ-প্রতিরোধে রূপ দিতে সকল গণসংগঠন ও সামাজিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি।

শনিবার বিকেলে তোপখানা রোডে ওয়ার্কার্স পার্টির কার্যালয়ে বিভিন্ন গণসংগঠনের সঙ্গে যৌথ সভায় তিনি এ আহ্বান জানান।

নুসরাত জাহানের আত্মদানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে রাশেদ খান মেনন বলেন, কেবল নারী অধিকারের বিষয়েই নয়, ইউটিউবে প্রচারিত বিভিন্ন ওয়াজ-মাহফিলে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত, নববর্ষের অনুষ্ঠানের মতো প্রতিষ্ঠিত বিষয়ে কেবল বিষোদগার করাই হচ্ছে না, বরং এ বিষয়ে সরকারকে চ্যালেঞ্জ করা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত এ ধরনের রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী প্রচারের ব্যাপারে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জড়িতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যথাযথ কাজে ব্যবহার হচ্ছে না। পক্ষান্তরে সংবাদপত্রে দুর্নীতির রিপোর্ট করার জন্য সম্প্রতি যুগান্তরের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ রিমান্ডে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

প্রাক্তন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, অপকর্মের বিরুদ্ধে নুসরাত প্রতিবাদ করতে গিয়ে জীবন দিয়ে যে অনন্য উদাহরণ রেখে গেলেন তা আমাদের জন্য যেমন পীড়াদায়ক ঠিক তেমনই তা রাষ্ট্র ও সমাজকে নতুনভাবে জাগ্রত করবে। ওই যৌন নিপীড়ন ও আগুনে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পরও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন ও দলীয় নেতারা ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা চালিয়েছেন। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এসব ক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রশ্নকে সামনে এনে অপরাধ আড়াল করার প্রচেষ্টা রাষ্ট্র ও প্রশাসনকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

তিনি বলেন, ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নৈতিকতা সম্পর্কে যারা উচ্চকণ্ঠ তাদের ধারণাও যে ভুল, মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাতের ওপর ধারাবাহিক যৌন নিপীড়ন ও শেষে তার প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে গুড়িয়ে দিতে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা তার প্রমাণ দেয়।

ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর কমিটির সভাপতি আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় নুসরাতকে যৌন নিপীড়ন ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যার বিরুদ্ধে আগামী ১৬ এপ্রিল দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে সভায় পয়লা বৈশাখে বর্ষবরণকেও উৎসব আনন্দের পাশাপাশি প্রতিবাদ-প্রতিরোধের অনুষ্ঠানে পরিণত করার আহ্বান জানানো হয়।

যৌথ সভায় নারী মুক্তি সংসদ, গার্হস্থ্য নারী শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, জাতীয় কৃষক সমিতি, খেতমজুর ইউনিয়ন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন ও নতুন কথার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৯/নঈমুদ্দীন/রফিক