ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ভিয়েতনামের চারায় দক্ষিণাঞ্চলে নারকেলের আবাদ

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১১ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভিয়েতনামের চারায় দক্ষিণাঞ্চলে নারকেলের আবাদ

মুহাম্মদ নূরুজ্জামান, খুলনা : ভিয়েতনামের উন্নতজাতের চারায় দক্ষিণাঞ্চলের চার জেলায় নারকেলের আবাদ হয়েছে। দু’ বছর আগের লাগানো এ আবাদকে ঘিরে চাষিরা এখন নতুন স্বপ্নে বিভোর।

চার হাজার চারা রোপন করা হয়েছে নড়াইল, বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার সকল উপজেলায়। এক বছর পর ফলন ধরা শুরু হবে। একটি গাছ থেকে বছরে ফলন হবে ২০০টি। যা দেশি জাতের তুলনায় চারগুন। উপকূলের মাটি, পানি ও আবহাওয়ার সাথে খাপ খাইয়ে বেড়ে উঠছে ভিনদেশি নারকেলের জাত।

অধিক উৎপাদনের আশায় বাড়ির আঙ্গিনায় উঁচু জায়গায় ভিয়েতনামের নারকেলের চারা রোপন করেছেন দিঘলিয়ার সেনহাটি গ্রামের সার্জেন্ট ইলিয়াস তালুকদার, নাসিমা সুলতানা, মো. শামীম, ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা গ্রামের আকরাম গাজী, ধোপাখোলা গ্রামের রবিউল ইসলাম, খুলনার পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি গ্রামের প্রশান্ত বিশ্বাস, বটিয়াঘাটা উপজেলার রমেন গাইন, দৌলতপুরের মো. হাবিব, বাগেরহাটের কচুয়ার শিশির দাসসহ সহস্রাধিক কৃষক।

সূত্র জানায়, ‘সিয়াম গ্রীন কোকোনাট’ নামক এ জাতটি ২০০৫ সালে ভিয়েতনামে উদ্ভাবন হয়। সমুদ্র পথে ২০১৫ সালে এ দেশে আমদানি হয়। হলুদ রংয়ের এ নারকেলের ওজন আনুমানিক দেড় কেজি। প্রতিটি গাছ থেকে বছরে ১৫০ থেকে ২০০ ফলন হয়। চারা রোপণের তিন বছরের মাথায় ফলন দেওয়া শুরু হয়। প্রতিটি গাছের জন্য ৪০ কেজি পঁচা গোবর, ১০ কেজি ছাই, দু’ কেজি করে কেঁচো সার, হাঁড়ের গুড়ো, ৬শ’ গ্রাম করে ইউরিয়া, এমওপি, ৩শ’ গ্রাম টিএসপি, ১শ’ গ্রাম জিপসাম ও ৫০ গ্রাম ব্রোন, ৫০ গ্রাম ফুরাডান প্রয়োজন হবে। চারা রোপনের তিন মাস পর পর সার প্রয়োগ করতে হয়।

 



খুলনার দৌলতপুর হটিকালচার সেন্টারের উদ্যান তত্ববিদ মো. শাহীন ইসলাম জানান, নতুন জাতের নারকেলের চারা সরাসরি ভিয়েতনাম থেকে জাহাজে করে দেশে আনা হয়। ২০১৫ সালে প্রথম দফায় খুলনার চার জেলায় ১৮০০ এবং ২০১৬-২০১৭ অর্থ বছরে আরও ২৭০০ চারা আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই চার হাজার চারা বিক্রি হয়েছে। বাকি ৮০০ চারা হটিকালচার সেন্টারে রয়েছে। প্রতিটি চারার মূল্য ৫০০ টাকা।

সেন্টারের উপ-সহকারী উদ্যান কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কৃষকরা এ জাতের চারা রোপণের পর উপজেলা পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা মনিটরিং করেন। এর আগে চারা রোপণের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী পরিচর্যা সম্পর্কে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

ফুলতলা উপজেলার গাড়াখোলা গ্রামের আকরাম গাজী ছয় মাস আগে বাড়ির আঙ্গিনায় পাঁচটি চারা রোপণ করেছেন। প্রয়োজনীয় সার ব্যবহার করায় গাছগুলো বাড়ছে দ্রুত। তিনি আশাবাদি আর ১৯ মাস পর থেকে ফল পাবেন। বছরে ২০০ করে ফলন পাবেন বলে আশাবাদি।

দিঘলিয়ার সেনহাটি গ্রামের চাষি সার্জেন্ট ইলিয়াস তালুকদার জানান, দু’ মাস আগে একটি নারকেলের চারা রোপন করেছেন। নতুন করে পাতা গজিয়েছে। তিনি আশাবাদি, দেশীয় নারকেলের তুলনায় অনেক বেশি ফলন পাবেন।



রাইজিংবিডি/খুলনা/১১ মার্চ ২০১৭/ মুহাম্মদ নূরুজ্জামান/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়