ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

মাগুরার শজনে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২৮, ২১ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাগুরার শজনে যাচ্ছে বিভিন্ন জেলায়

মাগুরা প্রতিনিধি : বসতবাড়ির আশপাশে অনাদরে বেড়ে উঠা শজনে এখন ফেলনা নয়। শজনে সবজি হিসেবে যেমন উপাদেয়, এর ভেষজগুণও অসাধারণ। ব্যাপক চাহিদা থাকায় মাগুরার কৃষকেরা এখন পতিত জমিতে পরিকল্পিতভাবে শজনের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে শজনে চলে যাচ্ছে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সদর উপজেলা, মহম্মদপুর উপজেলা, শ্রীপুর উপজেলা ও শালিখা উপজেলায় আগে কৃষকেরা বসতবাড়ির আশপাশে নিজেদের খাওয়ার জন্য শজনে গাছ রোপণ করতেন। অযত্ন অবহেলায় বেড়ে উঠত সেই গাছ।

নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনদের জন্য পাঠানো হতো শজনে। এখন অবস্থা ভিন্ন। শজনে এখন দামি সবজির স্থান লাভ করেছে। মৌসুমের শুরুতে প্রতি কেজি শজনে বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায়। এখন দাম কমে গেলেও তা বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৭০ টাকায়।

কৃষকরা জানান, গত কয়েক বছর শজনের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তারা বসতবাড়ির আশপাশে ও ক্ষেতের আইলে শজনে গাছ রোপণ করছেন। অন্য সবজি বিক্রি করতে বাজারে যেয়ে বসে থাকতে হলেও শজনে ব্যাপারিরা বাড়ি এসে চড়া দামে কিনে নিয়ে যায়। ব্যাপারিরা শজনে ঢাকা, বরিশাল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, খুলনা, নড়াইল, ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও  চুয়াডাঙ্গা জেলায় পাঠায়।

কৃষি বিভাগ জানায়, বসন্তের আবাহনে ফুলে ফুলে শুভ্র হয়ে উঠে শজনে গাছের প্রতিটি শাখা। বকের মতো সাদা নতুন ফিকে সবুজ পাতার মধ্যে অজস্র ফুল চোখে প্রশান্তি এনে দেয়।

ফাল্গুনের শেষ ও চৈত্রের শুরুতে কচি শজনে ডাঁটা খাওয়ার উপযোগী হয়। সাধারণত শাখা কেটে রোপণ করার মাধ্যমে শজনের বংশবিস্তার করা হয়। রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গাছ থেকে শজনে সংগ্রহ করা যায়। শজনে ডাঁটার পাশাপাশি ফুল ও পাতা সবজি হিসেবে উপাদেয় এবং জনপ্রিয়।

শজনে সবজি হিসেবে যেমন উপাদেয়, এর ভেষজগুণও তেমন অসাধারণ। মৌসুমী নানা রোগব্যাধির নিরাময় ও শরীরে এসব রোগের প্রতিরোধক শক্তি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। বিশেষ করে বসন্ত, জন্ডিস, মূত্রসংক্রান্ত সমস্যায় প্রাচীনকাল থেকে শজনের নানা অংশের ব্যবহার করে আসছেন ইউনানি ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসকেরা।

মাগুরা সদরের কৃষক আমির হোসেন জানান, পরিকল্পিতভাবে পতিত জমিতে শজনে চাষ করে তিনি এ বছর প্রায় ২০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এ জন্য তাকে তেমন ব্যয় করতে হয়নি।

মহম্মদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম জানান, মূল্যবান ভেষজ হিসেবে শজনের কদর দিন দিন বাড়ছে, সেই সঙ্গে বাড়ছে দাম। এতে কৃষক শজনে চাষে আগ্রহী হচ্ছে।

মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতীম সাহা জানান,  জেলায় শজনে আবাদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে ২-৩টি শজনে গাছ আছে। দাম বেড়ে যাওয়ায় অনেকে পরিকল্পিতভাবে শজনের আবাদ করছেন।



রাইজিংবিডি/মাগুরা/২১ মার্চ ২০১৭/মো. আনোয়ার হোসেন শাহীন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়