ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কাজী আরেফসহ পাঁচ জাসদ নেতা হত্যার ১৮ বছর

কাঞ্চন কুমার || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কাজী আরেফসহ পাঁচ জাসদ নেতা হত্যার ১৮ বছর

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আজ বেদনাবিধুর ১৬ ফেব্রুয়ারি। এই দিনে কুষ্টিয়ায় জাতীয় পতাকার রূপকার ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদসহ পাঁচ জাসদ নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের কালিদাসপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাসবিরোধী এক জনসভায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক জাসদ সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদ, জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, স্থানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও শমসের মন্ডল সন্ত্রাসীদের গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সে সময় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় ও আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঘটনার দিনই পুলিশ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করে। মামলাটি পরদিন সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামির ফাঁসি ও ১২ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। রায়ের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ আপিল করলে ২০০৮ সালের ৫ আগস্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামির মধ্যে ৯ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। একই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামির সাজা মওকুফ করেন হাইকোর্ট।

এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির তিন আসামি রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু, আনোয়ার হোসেন ও সাফায়েত হোসেন হাবিব ওরফে হাবি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। ২০১১ সালের ৭ আগস্ট প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি শেষে আপিল করা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তদের ৯ জনের সাজা বহাল রাখেন।

পরে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ করলে তাও ২০১৪-এর ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দেন আদালত। এরপর গত ৭ জানুয়ারি গভীর রাতে যশোর কারাগারে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি আনোয়ার হোসেন, রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু ও সাফায়েত হোসেন হাবিবের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

নিহতের পরিবারের সদস্যরা তাতে স্বস্তি প্রকাশ করলেও তাদের দাবি এ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীরা আজও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ঘাতকদের অনেকেই এখনো গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা দানা বেঁধেছে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের মাঝে।

হত্যাকাণ্ডের নির্মম শিকার অ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলীর বড় ছেলে ইউসুফ আলী রুশো বলেন, ‘তিন ঘাতকের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় আমাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও এ হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য মূল পরিকল্পনাকারীরা আজও রয়েছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

সেদিনের ওই জনসভার সভাপতির দায়িত্ব পালনকারী স্থানীয় জাসদ নেতা হেলাল উদ্দিনও হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীদের চিহ্নিত করে জনসমক্ষে এনে বিচার করার দাবি জানান।

এদিকে কালিদাসপুর ট্র্যাজেডি স্থলে শহীদদের স্মরণে আজও একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মিত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাগণ ও এলাকাবাসী।

 

 

রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/কাঞ্চন কুমার/টিপু/এএন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়