ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্পর্শেই রোগ নিরাময়

ফজলে আজিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২২, ১৪ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্পর্শেই রোগ নিরাময়

প্রতীকী ছবি

ফজলে আজিম : জাপানি চিকিৎসা পদ্ধতি রেইকি। এখানে কোনো প্রকার ওষুধের ব্যবহার নেই। নেই শরীরের কোথাও শুঁই ফোটানো কিংবা অন্যকিছু। শরীরের চক্রগুলোকে সক্রিয় করে তোলার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের রোগব্যধি থেকে মুক্তির বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হচ্ছে রেইকি।

পাশ্চাত্যে এটি এনার্জি হিলিং নামে পরিচিত। আরবে রেইকি নূরে এলাহী নামে পরিচিত। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও রেইকি চিকিৎসা ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিভিন্ন হাসপাতালে প্রচলিত চিকিৎসার পাশাপাশি রেইকি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে করে রোগীর আরোগ্য হচ্ছে দ্রুত।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বেশ কয়েকটি রেইকি ক্লিনিক ও হাসপাতাল রয়েছে। যেখানে এনার্জি হিলাররা বিভিন্ন জটিল ব্যাধির ক্ষেত্রে একক ও যৌথ হিলিং করে থাকেন। রোগীও দ্রুত আরোগ্য লাভ করছেন।

শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি সব ধরনের মানসিক সমস্যা থেকে আরোগ্যের ক্ষেত্রেও রেইকি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আত্মবিশ্বাসহীনতা, দুশ্চিন্তা, ভয়, জড়তা বা সংকোচ ইত্যাদি সমস্যা থেকে আরোগ্যের ক্ষেত্রেও রেইকি সুন্দর কাজ করে। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও রেইকির ফলাফল চমকপ্রদ।

কীভাবে করা হয় রেইকি চিকিৎসা:

রেইকিতে দুই ধরনের পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয়। রেইকি প্রথম ডিগ্রি কোর্স সম্পন্ন করার পর যে কেউ স্পর্শ করে অন্যকে নিরাময় করতে পারেন। রেইকি দ্বিতীয় ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর দূরবর্তী যেকোনো স্থানের রোগীর আরোগ্য লাভের জন্য হিলিং করা যায়। এক্ষেত্রে স্পর্শ করার প্রয়োজন হয় না।

এ সম্পর্কে রেইকি সেন্টার বাংলাদেশের রেইকি গ্র্যান্ডমাস্টার এম মহিউদ্দীন ইসলাম বলেন, রেইকি প্রথম ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর একজন রেইকি চ্যানেল পরিচিত যে কারো শরীরের অসুস্থ স্থানে রেইকি দিতে পারেন। এতে করে অসুস্থ ব্যক্তি শারীরিক ও মানসিকভাবে আরাম অনুভব করেন। প্রথম ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর একজন রেইকি চ্যানেল নিজের ও অন্যের রোগ নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। নিজের পাশাপাশি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের যেমন বাবা মা, ভাই বোন, স্ত্রী ও সন্তানের যেকোনো সমস্যার ক্ষেত্রে রেইকি ব্যবহার করে সাফল্য পেতে পারেন।

রেইকি সেকেন্ড ডিগ্রি সম্পন্ন করার পর দূরবর্তী যে কাউকে রেইকি দেওয়া যায়। নিয়মিত কয়েকদিন রেইকি দেওয়া হলে রোগী দূরবর্তী যেখানেই থাকুন না কেন তার শরীরে রেইকির শক্তিপ্রবাহের সঙ্গে সাড়া প্রদান করে। ধীরে ধীরে শারীরিকভাবে রোগযন্ত্রণা উপশম হয়।

আমাদের এখানে ব্যাকপেইন, অ্যাজমা, আথ্রাইটিস, গ্যাংগ্রিনসহ বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা নিয়ে লোকজন আসেন। আমরা শিখিয়ে দিই কিভাবে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা শক্তিপ্রবাহকে সক্রিয় করে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকা যায়। নিজে ভালো থাকার পাশাপাশি অন্যকে ভালো রাখা যায়।

তিনি আরো জানান, যে কেউ চাইলে রেইকি শিখতে পারেন ও চর্চা করতে পারেন। এজন্য বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। দরকার একান্ত বিশ্বাস ও নিয়মিত অনুশীলন। এটি হচ্ছে এক ধরনের আধ্যাত্মিক চিকিৎসা পদ্ধতি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ওয়াশিংটনপোষ্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি নার্স রেইকি হিলিং করছেন। ৬০টির বেশি হাসপাতালে অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি রেইকি চিকিৎসা চালু রয়েছে। প্রায় ৮০০টি হাসপাতালে রেইকি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু রয়েছে। আর তাই প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতির মূল ধারায় রেইকি ও অধিকাংশ রোগীর নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

২০০৮ সালে আমেরিকান হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনের এক জরিপে ৮৪ ভাগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, রোগীরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতিতে বেশি আগ্রহ প্রকাশ করছেন। তার মধ্যে রেইকিও রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত রেইকি প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কেউ চাইলে দেশে বসেও রেইকি শিখতে পারেন। এ বিষয়ে জানতে ভিজিট করতে পারেন www.reikicenterbd.net

লেখক: রেইকি প্রাকটিশনার, সেকেন্ড ডিগ্রি চ্যানেল

 

অ্যাপ্লাইড রেইকি ট্রেইনিং (এআরটি) প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মার্চ ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়