ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ঈদ আনন্দে খাবার গ্রহণে সতর্কতা

ডা. পলাশ বসু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০০, ২৪ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদ আনন্দে খাবার গ্রহণে সতর্কতা

ডা. পলাশ বসু : ঈদ সমাগত। দীর্ঘ একমাস রোজা পালনের পর ঈদ আসে আনন্দের উপলক্ষ নিয়ে। আর সে আনন্দে স্বাভাবিকভাবেই নতুন পোশাক পরে ঘোরাঘুরির সাথে আবশ্যিকভাবে যুক্ত হয় নানা উপাদেয় খাবারের আধিক্য।

রসনাবিলাসি সে খাবার খেতে মন উসখুস করবে এটাই স্বাভাবিক। যাদের শারীরিক তেমন কোনো সমস্যা নেই তারা একদম ইচ্ছে মতো মন জুড়িয়ে পেট ভরে সুস্বাদু এসব খাবার খেতে পারেন। কিন্তু যারা হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি বা বদহজমজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা নানা পদের খাবার খেয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করবেন ঠিকই তবে তা হতে হবে অতি অবশ্যই, আবারও বলছি অতি অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে। আর যদি কোনো খাবার গ্রহণে চিকিৎসকের নিষেধাজ্ঞা থেকে থাকে তাহলে তা একদম এড়িয়ে চলুন। কারণ আনন্দের এ সময়ে অযথা খাবার খেয়ে নিরানন্দ কেন টেনে আনবেন? নানা পদের মুখরোচক খাবার দেখে তাই মন না চাইলেও জিহ্বাকে সংযত করুন অযথা শারীরিক জটিলতা এড়িয়ে পরিপূর্ণভাবে ঈদ আনন্দ উপভোগ করার জন্য।

ধরুন যারা হৃদরোগে ভুগছেন তারা এ সময়ে আগের মতো নিয়ম মেনে ওষুধ খান। কোথাও ঘুরতে গলে প্রয়োজনীয় ওষুধ সাথে নিয়ে যান। খাসির মাংস, গরুর মাংস, রিরিয়ানি তেল এবং চর্বিজাতীয় খাবার একদম কম খান। কোল্ড ড্রিংকস, চিপস, আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। পাতে আলগা লবন খাবেন না। সালাদ বেশি করে খান।

যারা ডায়াবেটিসজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা ডায়াবেটিসের ওষুধ খেতে বা ইনসুলিন নিতে ভুলবেন না। যাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত থাকে তারা চিনি, মিষ্টি, সেমাই মোটেও খাবেন না। তবে যাদের সুগার মোটামুটি সবসময় নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং নিয়মিত ব্যায়াম করেন তারা চাইলে একদম অল্প করে খেতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীরাও কোল্ড ড্রিংকস, চিপস, আইসক্রিম এড়িয়ে চলুন। আর যদি মনে হয়ে ঈদের সময়ে খাবার দাবার গ্রহণে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তাহলে ঈদের পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আবার আপনার চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন। কারণ আবার হয়ত রক্তে সুগারের পরিমাণ কমানোর জন্য ওষুধের ডোজ বাড়ানো লাগতে পারে বা নতুন কোনো ওষুধ যোগ করাও লাগতে পারে।

যারা দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ মতো নির্দিষ্ট পরিমাণ পানি পূর্বের মতো পান করুন। সব ধরনের মাংস এড়িয়ে যান। পাতে আলগা লবন খাবেন না।

যদি সম্ভব হয় পারলে এখন আবার (যদি অনেকদিন চিকিৎসক না দেখিয়ে থাকেন) আপনার চিকিৎসকের সাথে দেখা করুন। তার পরামর্শ নিন। সেগুলো মনে রাখুন এবং সে অনুযায়ী চলার চেষ্টা করুন। আশা করি সতর্ক থাকলে অসুস্থতাজনিত জটিলতা এড়িয়ে নিরাপদে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে সমস্যা হবে না।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ, এনাম মেডিক্যাল কলেজ

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জুন ২০১৭/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়