ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সাইনাস ইনফেকশনের ৪ লক্ষণ

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাইনাস ইনফেকশনের ৪ লক্ষণ

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : আপনি শ্বাস নিতে পারেন না, আপনার নাক বন্ধ অথবা আপনার নাক তরলে থিকথিক করছে। মনে হচ্ছে ঠান্ডা লেগেছে, তাই না?

হ্যাঁ এটি ঠান্ডা হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। যা আপনি ঠান্ডা বলে ভাবছেন, প্রকৃতপক্ষে তা সাইনাস ইনফেকশন হতে পারে। সাইনাস ইনফেকশন ধূর্ত হতে পারে, তাই লোকজন এটিকে ঠান্ডা বা অন্য কোনো অসুস্থতা ভেবে ভুল করেন। সাইনাস ইনফেকশনের যে বিষয়টি সম্পর্কে সবাই অবগত নন তা হচ্ছে, এ সমস্যায় মাথায় শ্লেষ্মা জমতে পারে।

আপনার সাইনাস এমন গহ্বর যা নাকে শ্লেষ্মা নিঃসরণ করে। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের ওটোল্যারিঙ্গোলজি- হেড অ্যান্ড নেক সার্জারির ক্লিনিক্যাল অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর এবং নিউ ইয়র্ক সিটির সাইনাস স্পেশালিস্ট রিচার্ড নাস বলেন, ‘কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া অথবা বিরলক্ষেত্রে ফাঙ্গাস এক বা একাধিক সাইনাসের স্তরে প্রবেশ করলে সাইনাস ইনফেকশন হয়ে থাকে।’

সাইনাস ইনফেকশনকে ঠান্ডা মনে করার অন্য একটি কারণ হচ্ছে, প্রায়ক্ষেত্রে সাইনাস ইনফেকশন ঠান্ডার পরে হয়ে থাকে। সিটল অ্যারিয়ার ওটোল্যারিঙ্গোলজিস্ট এবং ফেসিয়াল প্লাস্টিক সার্জন এরিক টি. ওয়াল্টারম্যান বলেন, ‘আপনার সাইনাসের স্তর ঠান্ডার পরে বেশি করে ইনফেকশনের আওতায় চলে আসে, যেহেতু আপনার সাইনাসের ছিদ্র ফুলে যাওয়ার প্রবণতাযুক্ত।’

ঠান্ডা সাধারণত পাঁচদিনের মধ্যে চলে যায়, কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো উপসর্গ ১০ দিনের বেশি সময় স্থায়ী হলে তা সাইনাস ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ডা. নাস বলেন, ‘সাইনাস ইনফেকশন অ্যাকিউট (প্রায় চার সপ্তাহ স্থায়ী) অথবা সাবঅ্যাকিউট (চার থেকে ১২ সপ্তাহ স্থায়ী) কিংবা ক্রনিক (১২ সপ্তাহ বা তারও বেশি সময় স্থায়ী) হতে পারে।’ ডা. ওয়াটারম্যান বলেন, ‘অ্যাকিউট বা সাবঅ্যাকিউট ইনফেকশনের চিকিৎসা করা না হলে তা ক্রনিক ইনফেকশনে রূপ নিতে পারে।’

এ প্রতিবেদনে সাইনাস ইনফেকশনের চারটি লক্ষণ উল্লেখ করা হলো।

* মুখে ব্যথা

আপনার কপালে, দুই চোখের মাঝখানে এবং চোখের নিচে আপনার সাইনাসসমূহ অবস্থিত। ডা. ওয়াটারম্যান বলেন, ‘তাই কোন সাইনাসটি সংক্রমিত হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে কোনো সাইনাস ইনফেকশন গালের ওপরে, দুই চোখের মাঝখানে, কপালের ওপর এবং এমনকি দাঁতে প্রেসার বা ব্যথার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে।’ ডা. নাস বলেন, ‘যদি আপনার গালের নিচে অবস্থিত ম্যাক্সিলারি সাইনাস সংক্রমিত হয়, আপনার দাঁত ব্যথা অনুভব হতে পারে। যদি ফ্রন্টাল সাইনাস সংক্রমিত হয়, আপনার মাথাব্যথার চেয়েও বেশি ব্যথা হতে পারে।’

* নাক বন্ধ
সাইনাস ইনফেকশন নাকের ভেতর পরিষ্কার হওয়া প্রতিরোধ করে নাকে ও সাইনাসে শ্লেষ্মা জমা করে। ডা. নাস বলেন, ‘এর ফলে আপনার নাক থেকে শ্লেষ্মা ঝরে অথবা আপনাকে প্রায়সময় নাক ঝাড়তে হয় এবং যে শ্লেষ্মা বের হয়ে আসে তা ঘন বা বর্ণহীন হতে পারে।’

* পোস্ট ন্যাজাল ড্রিপ
ডা. নাস বলেন, `সাইনাস ইনফেকশনের সময় আপনার নাকে নিঃসৃত হওয়া শ্লেষ্মা নাকের পিছনে অথবা গলায় জমা হতে পারে, যার ফলে কর্কশ কণ্ঠস্বর, গলাব্যথা, ঘ্রাণানুভূতি হারানো অথবা শ্লেষ্মাসহ কাশির মতো সমস্যা হতে পারে।’ আপনার প্রায়সময় গলা পরিষ্কার করার প্রয়োজন হতে পারে এবং কাশির সঙ্গে ঘন ও বর্ণহীন শ্লেষ্মা বের হতে পারে।

* দুর্গন্ধযুক্ত শ্বাস
ডা. নাস বলেন, ‘সাইনাস ইনফেকশনের ফলে নিঃসৃত হওয়া শ্লেষ্মা গলায় চলে গেলে শ্বাস দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে।’ নাক বন্ধ হলে আপনাকে মুখের মাধ্যমে শ্বাসকার্য চালাতে হতে পারে, যে কারণে শ্লেষ্মা শুকিয়ে যেতে পারে এবং শ্বাস আরো বেশি দুর্গন্ধযুক্ত হতে পারে।

* সাইনাস ইনফেকশন হলে কি করবেন?
যদি আপনার এসব উপসর্গের যেকোনো একটি ১০ দিন বা তারও বেশি সময় ধরে থাকে তাহলে সাইনাস ইনফেকশন আছে কিনা তা জানতে ডাক্তারের কাছে ভিজিট করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন ডা. নাস। ডাক্তার এন্ডোস্কোপ দিয়ে আপনার গলা পরীক্ষা করতে পারেন এবং কোনো ন্যাজাল স্প্রে অথবা অন্য কোনো ওভার-দ্য-কাউন্টার ওষুধ কিংবা প্রেসক্রিপশন ওষুধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন। ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকও প্রেসক্রাইব করতে পারেন। সাধারণত এসব চিকিৎসা আপনার সাইনাস সমস্যা দূর করতে যথেষ্ট।

তথ্যসূত্র : ম্যান’স হেলথ

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়