ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

প্রাকৃতিক ভাবে দাঁত সাদা করার ১০ উপায়

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:২১, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
 প্রাকৃতিক ভাবে দাঁত সাদা করার ১০ উপায়

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব কসমেটিক ডেন্টিস্ট্রি অনুসারে, লোকজন হাসিতে পরিবর্তন আনার জন্য যা সবচেয়ে বেশি করে তা হচ্ছে, নিজেদের দাঁত সাদা করা। এ প্রতিবেদনে প্রাকৃতিক ভাবে দাঁত সাদা করার ১০টি উপায় উল্লেখ করা হলো।

* চূর্ণিত স্ট্রবেরি

চূর্ণিত স্ট্রবেরি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার বিষয়টি আপনার কাছে উদ্ভট মনে হতে পারে, কিন্তু এটি দাঁত সাদা করার একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপায়। স্ট্রবেরির অ্যাসিডিক উপাদান হালকা ব্লিচিং অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করে। একটি বা দুইটি পাকা স্ট্রবেরি চূর্ণ করুন, এতে আপনার টুথব্রাশ চোবান এবং তারপর স্বাভাবিক ভাবে আপনার দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত ব্রাশ করা শেষ হলে মুখের অ্যাসিডিটি হ্রাস করতে এবং দাঁতকে যেকোনো ধরনের ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে সোডার এক চিমটি বাইকার্বনেট দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

* নারকেল তেল

অয়েল পুলিং হচ্ছে, প্রাচীন ভারতীয় পদ্ধতি যেখানে মুখে তেল রেখে কয়েক মিনিট ধরে কুলকুচা করা হয়- সাধারণত আপনি যেভাবে মাউথওয়াশ ব্যবহার করেন সেভাবে। নারকেল তেল প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারক হিসেবে বিবেচিত এবং সাম্প্রতিক এক গবেষণা এর মৌখিক স্বাস্থ্য উপকারিতাকে সমর্থন করছে। নারকেল তেল ব্যবহার করে অয়েল পুলিং প্রকৃতপক্ষে দাঁতে প্লেকের গঠন ও মাড়ির রোগ হ্রাস করতে সাহায্য করে।

* বেকিং সোডা ও লেবুর রসের পেস্ট

লেবু কি আসলেই দাঁত সাদা করে? সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ! লেবুতে উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে যা আপনার দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। তবে এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। কিন্তু এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে যথেষ্ট বেকিং সোডা দিয়ে তৈরিকৃত পেস্ট প্রকৃতপক্ষে ঘরে দাঁত সাদা করার একটি কার্যকরী ও নিরাপদ উপায়। বেকিং সোডা হালকা ক্ষয়কারী (যা দাঁতের ওপর পড়া নোংরা প্রলেপ বা দাগ দূর করতে পারে) এবং খুব ক্ষারীয়, যা লেবুর রসের প্রাকৃতিক অ্যাসিডিটি প্রশমিত করতে সাহায্য করে।

* অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা

যদি আপনি প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারকের খোঁজ করেন, তাহলে আপনার জন্য অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা হতে পারে অন্য একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়। অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা তৈরি হয় অক্সিজেন ও ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের সঙ্গে কাঠকয়লা প্রক্রিয়াজাত করে এবং এটি এর অতিশয় শোষণকারী বৈশিষ্ট্যের কারণে কার্যকরী দাঁত সাদাকারক অ্যাজেন্ট হিসেবে বিবেচিত। দাঁতের ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা ট্যানিন শোষণে চমৎকার ভূমিকা পালন করে। ট্যানিন হচ্ছে কফি, চা ও ওয়াইনে থাকা পদার্থ যা দাঁতে দাগ ফেলে। আপনার টুথব্রাশে অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লার পাউডার লাগান এবং দাঁতের দাগ দূর করার জন্য স্বাভাবিকভাবে দাঁত ব্রাশ করুন।

* কমলার খোসা

কমলার খোসার ভেতরটা দিয়ে দাঁত ঘষা হচ্ছে, দাঁত সাদা করার একটি নিরাপদ ও প্রাকৃতিক উপায়। খোসার সাদা অংশ বা অ্যালবেডোতে লিমোনিন থাকে- লিমোনিন হচ্ছে ন্যাচারাল সলভেন্ট ক্লিনার এবং প্রকৃতপক্ষে তা অনেক বাণিজ্যিক দাঁত সাদাকারক প্রোডাক্টে ব্যবহার করা হয়। কমলার মাংসল অংশের মতো এর খোসা অ্যাসিডিক নয়, তাই দাঁতের এনামেল ড্যামেজ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই বলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ।

* তুলসী পাতা ও সরিষা তেল

শুকনো তুলসী পাতা চূর্ণ করে পাউডারে পরিণত করুন এবং ঘরে দ্রুত ও কার্যকরী উপায়ে আপনার দাঁত সাদা করার জন্য তা সরিষার তেলে মিশান। আপনি সতেজ তুলসী পাতাও ব্যবহার করতে পারেন: সতেজ তুলসী পাতাকে পিষে পেস্ট বানান এবং টুথব্রাশের মাধ্যমে তা সরাসরি দাঁতে প্রয়োগ করুন। বলা হয়ে থাকে যে, তুলসী পাতা মাড়িকে রক্ষা করে এবং সরিষা তেলের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে- যা আপনার মৌখিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।

* আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগারের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে (যেমন- এটির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে), কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি যে দাঁত সাদা করতে পারে তা সম্পর্কে অনেকে অবগত নন। দাঁতের দাগ দূর করতে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার চেষ্টা করতে পারেন এবং তারপর নির্মল শ্বাসের জন্য ও মাড়ির ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচা করতে পারেন।

* সামুদ্রিক লবণ ও বেকিং সোডা

বেকিং সোডা বা সোডিয়াম বাইকার্বনেট এটির ক্ষারীয় গুণ এবং দাঁতের যেকোনো দাগ মৃদুভাবে দূর করার ক্ষমতার কারণে প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারক হিসেবে বিবেচিত। এর সঙ্গে সামুদ্রিক লবণ যোগ করে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ট্রুথ স্ক্রাব করতে পারেন, যা মুখে অ্যাসিড প্রশমিত করে এবং ব্যাকটেরিয়াও নির্মূল করে।

* হলুদের গুঁড়া

দাঁত সাদাকারক হিসেবে হলুদ ব্যবহার করা যায়। হলুদ হচ্ছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যার ফলে দাঁতের সমস্যা যেমন- মাড়ির রোগের চিকিৎসায় এটি কার্যকরী। হলুদের সূক্ষ্ম গুঁড়া মৃদুভাবে দাঁতের দাগ দূর করে এবং তাৎক্ষণিক দাঁতকে সাদা করে তুলে। এক টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া আঙুল দিয়ে দাঁতে ঘষুন, পরিষ্কার টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন এবং মুখ ধুয়ে ফেলুন।

* ঘরে তৈরিকৃত টুথপেস্ট

আপনি দাঁত সাদাকারক টুথপেস্ট ঘরে নিজে নিজে তৈরি করতে পারেন। নারকেল তেলের সঙ্গে সোডার বাইকার্বনেট, অল্প পরিমাণে লেবুর রস এবং এক ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল বা পুদিনা তেলের সমন্বয় হতে পারে শক্তিশালী দাগ-দূরকারী পেস্ট, যা প্রকৃতিগতভাবে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়