ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

ঈদের খাবার কী খাবেন, কতটুকু খাবেন

শবনম মোস্তফা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:২১, ১৫ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঈদের খাবার কী খাবেন, কতটুকু খাবেন

শবনম মোস্তফা : দিন পেরিয়ে রাত গড়ালেই কাল পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে ঘোরাফেরা, সাথে খাওয়া-দাওয়া। ঈদে সবার বাসাতেই কম বেশি বিভিন্ন শাহী খাবার রান্না হয়। ঈদে তাই অবশ্যই খাবেন;  কিন্তু চাই পরিমিতি জ্ঞান ও সংযম। চাই স্বাস্থ্য সচেতনতা।

# মিষ্টি খাবার ছাড়া ঈদ অসম্পূর্ণ। আর মিষ্টি খাবারের মধ্যে সেমাই অন্যতম। সেমাই ছাড়া আবার ঈদ হয় নাকি? ঈদে সেমাইয়ের পাশাপাশি ফিরনি, পায়েস, জর্দা, কাস্টার্ড, পুডিং ও দুগ্ধজাত বিভিন্ন মিষ্টি খাবারের বিশেষ একটি স্থান রয়েছে। তবে এসব মিষ্টি জাতীয় খাবার প্রস্তুতিতে অবশ্যই কনডেন্সড মিল্ক এড়িয়ে যেতে হবে, পাশাপাশি অতিরিক্ত ঘি এবং চিনির ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া এ জাতীয় খাবারে টপিং হিসেবে শুষ্ক ফল কিংবা বিভিন্ন বাদামের ব্যবহার কিন্তু পুষ্টি মান অনেক বাড়িয়ে দেয়।

# মাংসের বেকড রান্না অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। কাবাবের একটা সুবিধা হচ্ছে ঝলসানোর কারণে রান্না মাংসের থেকে কাবাবে চর্বির পরিমাণ কমে যায়। তবে খেয়াল রাখবেন কাবাবের মাংস যেন আধা-সেদ্ধ না থাকে, না হলে ফিতা কৃমি হওয়ার ভয় থেকে যায়। এছাড়া কাবাবের সাথে নান-রুটি, পরোটা পরিহার করাই ভালো। পরিবর্তে কাবাবের সাথে এক প্লেট ফ্রেশ সালাদ হতে পারে একটি চমৎকার কম্বিনেশন।

# এই ঈদে অতিথি আপ্যায়নে কোল্ড ড্রিঙ্কের বদলে দই নিয়ে আসুন। সাথে রাখুন ঘরে তৈরি বোরহানি, লাবাং, মাঠা ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর পানীয়। অবশ্যই খাওয়া শেষে দই খাবেন। দই প্রবায়োটিকসের খুব ভালো উৎস। শুধু তাই নয়, ভুড়ি ভোজের পরে টক বা মিষ্টি দই খেলে সেদিনের মতো গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।

# খাবার পর ডেসার্ট হিসেবে একবাটি ফ্রুট ককটেল রাখলে সেটি অনেক বেশি স্বাস্থ্যসম্মত হবে, পাশাপাশি ভিটামিনস এবং মিনারেলসের চাহিদাও পূরণ করবে।

# কোষ্ঠকাঠিন্য ঈদের সময়ের আরেকটি সাধারণ সমস্যা। এক্ষেত্রে ঈদের আগের রাতে বা ঈদের সকালে ইসবগুলের ভুষি পানিতে মিশিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। এর সাথে প্রচুর পানি পান করবেন। ঈদের দিন দুপুর ও রাতে অবশ্যই সবজির একটি পদ রাখবেন। আর সব খাবারের ফাঁকে পানি বা অন্যান্য স্বাস্থ্যকর পানীয় পান করতে ভুলবেন না।

# যাদের ইউরিক এসিড বেশি কিংবা যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত, তারা অবশ্যই একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী মাংস খাবেন। এছাড়া যারা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ কিংবা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তারা অবশ্যই পরিমাণমত খাবেন। অতিরিক্ত তেলমশলা এড়িয়ে যাবেন। পোলাও/ বিরিয়ানি যে কোনো একটি একবেলা খাবেন; মগজ/কলিজা এড়িয়ে যাওয়া ভালো; খাবারের সাথে সালাদ, টক দই, লেবু খাবেন। দিনের কোন একসময় অবশ্যই ৩০মি হেঁটে নিবেন। অবশ্যই ঈদের পরদিন থেকে স্বাভাবিক খাবারে ফেরত আসবেন।

# যারা নিয়মিত ওষুধ সেবন করছেন, উৎসব-আনন্দে তাদের ওষুধ সেবন যেন বাদ না পড়ে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

সব ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা এড়িয়ে পুষ্টিসমৃদ্ধ পরিমিত মজাদার খাবারের সাথে সবার ঈদ হয়ে উঠুক আনন্দময়; সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

লেখক: বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিউট্রিশন কনসালটেন্ট



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুন ২০১৮/তারা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়