ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

এখানে দেবী দুর্গার রং লাল।। এম এ হামিদ

এম এ হামিদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১৯ অক্টোবর ২০১৫   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এখানে দেবী দুর্গার রং লাল।। এম এ হামিদ

মায়ের লাল রূপ

জেলার রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁওয়ে উদযাপিত হয় উপমহাদেশের একমাত্র লাল বর্ণের ‘জাগ্রত’ দুর্গাপূজা। প্রায় তিনশ বছর ধরে লালবর্ণের প্রতিমায় পূজা করে আসছে সাধক সর্বানন্দ দাসের বংশধররা।

প্রায় আড়াই থেকে তিনশ বছর আগে সাধক সর্বানন্দ দাস লাল বর্ণের দুর্গাপ্রতিমায় পূজার প্রচলন করেন। এখানে দেবী ‘স্বশরীরে’ হাজির হন বলে কথিত আছে। পূজার সময় দুই হাজারেরও অধিক বিভিন্ন প্রজাতির পশু মায়ের নামে বলি দেওয়া হয়।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এশিয়া মহাদেশের একমাত্র লাল বর্ণের মূর্তির পূজা দেখতে প্রতি বছর দেশি-বিদেশি হাজার হাজার ভক্ত এ মন্দিরে আসেন। এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মের মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়।

লাল প্রতিমায় দুর্গাপূজার মূল প্রবর্তক সাধক সর্বানন্দ দাস। প্রায় আড়াইশ থেকে তিনশ বছর আগে তিনি ভারতের কামরূপ কামাখ্যায় গিয়ে মায়ের সাধনা করেছিলেন। কথিত আছে, তার সাধনায় প্রসন্ন হয়ে মা দুর্গা তাকে দেখা দেন। সাধক সর্বানন্দ দাসের আমন্ত্রণে দেবী দুর্গা রাজনগরের পাঁচগাঁওয়ে আসেন। পূজার একপর্যায়ে সাধক সর্বানন্দ দাস মায়ের কাছে আকুতি জানান, তিনি (মা দুর্গা) যে এখানে এসেছেন তার প্রমাণ কী?  তখন মা তার হাতের পাঁচ আঙুলের লাল ছাপ তৎকালীন নির্মিত কাচা ঘরের বেড়ায় লেপ্টে দেন। মায়ের মাথার স্বর্ণের টিকলি ও কানের দুল রেখে যান। সে থেকেই এখানে লাল মূর্তিতে দেবীর পূজা হয়ে আসছে।
 


পূজার সময় এখনো মায়ের রেখে যাওয়া গয়না পরানো হয় দেবীকে। সাধক সর্বানন্দ দাসের বংশধর সঞ্জয় দাস ১৪১৫ বঙ্গাব্দে নতুন জায়গায় মন্দির স্থাপন করলে পূর্বের সেই স্মৃতিচিহ্ন আর চোখে পড়ে না। যুদ্ধের  সময় পাকিস্তানের হানাদার বাহিনী মন্দিরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। মন্দির পুড়ে গেলেও মায়ের রেখে যাওয়া গহনা অক্ষত ছিল।

পাঁচগাঁও পূজা মণ্ডপের পুরোহিত সুশান্ত চক্রবর্তী জানান, এখানে প্রতি বছর সপ্তমী ও নবমী তিথিতে ছয়টি মহিষ, হাজারের অধিক পাঠা, কবুতর ও অন্যান্য প্রাণী মায়ের নামে বলি দেওয়া হয়।

তিনি আরো জানান, তারা বংশ পরম্পরায় যুগ যুগ ধরে এখানে পুরোহিত হিসেবে পূজা করে আসছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় যজ্ঞ হয় এখানে। যজ্ঞে ১১০১টি বেল পাতা ও প্রচুর ঘি পুড়ানো হয়।


 

 

রাইজিংবিডি/মৌলভীবাজার/১৯ অক্টোবর ২০১৫/এম এ হামিদ/রণজিৎ/উজ্জল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়