ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি : সরাসরি সুবিধা পাবে দরিদ্ররা

শায়েখ হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৪ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি : সরাসরি সুবিধা পাবে দরিদ্ররা

শায়েখ হাসান : সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে শুরু করে সব ধরনের জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সরাসরি সুবিধা পাবে দরিদ্র জনগণ। এতে দারিদ্র্য দূরীকরণ সহজ হবে।

এ লক্ষ্যে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের সরাসরি বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় আনাতে ন্যাশনাল হাউজহোল্ড ডাটাবেজ (এনএইচডি) প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মাধ্যমে দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার তথ্য সংগ্রহ করে একটি জাতীয় তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। এজন্য সারা দেশে পরিচালনা করা হচ্ছে খানা তথ্যভাণ্ডার শুমারি।

এর মাধ্যমে পরিবার ভিত্তিক দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিতদের চিহ্নিত করা হবে। একই সঙ্গে এই জরিপের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের উন্নয়ন সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা পাবে সরকার। পাশাপাশি সরকারের নেওয়া বিভিন্ন সেবামূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। দেশের উন্নয়ন ও আর্থ সামাজিক পরিস্থিতির সঠিক তথ্য সরকারের হাতে থাকবে। ফলে দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণ ও উন্নত দেশ গড়া সহজ হবে।

এ ছাড়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচি প্রকল্পের উপকারভোগী নির্বাচনে দ্বৈততা রোধ করা সম্ভব হবে। অতিদরিদ্র জনগোষ্ঠীর উদ্দেশ্য বাস্তবায়িত বিভিন্ন কর্মসূচির অপব্যবহার রোধ করা যাবে। এর ফলে সরকারের বিপুল অর্থের সাশ্রয় হবে এবং দারিদ্র্য বিমোচন সহজ হবে। এতে সাধারণ জনগণের কাছে সরকারের পাঠানো সেবা দ্রুত ও নির্ভুলভাবে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। ব্যুরোর তত্ত্বাবধানে শুমারি কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা টিএমএসএস ও ভারতীয় আইটি সংস্থা জিরোক্স। প্রকল্পটির কাজ ২০১৮ সালে শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।

এই বিষয়ে ব্যুরোর মহাপরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক মো. আমীর হোসেন বলেন, বাংলাদেশের ২৩টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের আওতায় ১৪২টি সমাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছে সরকার। এ সব কর্মসূচির মাধ্যমে যে সব সুবিধা রয়েছে তার কোনো নীতিমালা বা ডাটাবেজ নেই। ফলে সমাজিক নিরাপত্তাগুলোতে কোনো পরিবার একাধিক সুবিধা পায় আবার কোনো পরিবার বঞ্চিতও হয়।

এসব সমস্যার সমাধান করতে এনএইচডি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দেশের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর দেওয়া তথ্য মতে, কাজের গুণগতমান নিশ্চিত করার জন্য এনএইচডি প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩ কোটি ৫০ লাখ খানার তথ্য তিন ফেজে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। প্রকল্পের আওতায় তথ্য সংগ্রহের অংশ হিসেবে প্রথম ধাপে রংপুর বিভাগে ৮টি জেলা, বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলা এবং ময়মনসিংহ বিভাগের ৩টি জেলাসহ মোট ১৭টি জেলায় তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

ব্যুরোর উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, শুমারি কার্যক্রম পরিচালনায় মার্চ মাসে উপজেলা সমন্বয়কারী, জোনাল কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ১ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ১৭টি জেলায় ইউনিয়ন পর্যায়ে ১ হাজার ৫৯৫টি কেন্দ্রে প্রায় ৫৩ হাজার ৭০০ জন সুপারভাইজার ও গণনাকারীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রথম ধাপে ১৭টি জেলায় ৪ এপ্রিল (আজ মঙ্গলবার) থেকে ২৩ এপ্রিল তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে খুলনা, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগ এবং তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগ এবং নেত্রকোনা জেলার তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

তিনি বলেন, গণনাকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খানার তথ্য সংগ্রহ করবে। এ জন্য দু’জন জেলা শুমারি সমন্বয়কারীর তত্ত্বাবধানে ৬ জন উপজেলা সমন্বয়কারী, ৮৪ জন জোনাল কর্মকর্তা, ১ হাজার সুপারভাইজার ও ২ হাজার ৫০০ গণনাকারী মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ এপ্রিল ২০১৭/ইভা/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়