দিয়াবাড়ী খালে উদ্ধারপ্রাপ্ত অস্ত্রের রহস্য আজও অজানা
মাকসুদুর রহমান : উত্তরার ১৬ নম্বর সেক্টরে বৌদ্ধমন্দিরের পাশ ঘেষে দিয়াবাড়ী খাল। এই খাল থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করেছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
এ ঘটনায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) তদন্ত করছে। কিন্তু অস্ত্রের গায়ে প্রস্তুতকারক দেশের নাম খোদাই না থাকায় কোন কিনারা করা যাচ্ছে না। এই বিপুল পরিমান অস্ত্র কোন উদ্দেশ্যে এখানে মজুদ রাখা হয়েছিলো সে রহস্য উদঘাটন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই অস্ত্র উদ্ধার হওয়ার পর এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা কাজ করলেও শেষ পর্যন্ত পুরো তদন্তভার পায় ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গোয়েন্দা শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদুর রহমান জানান, সম্ভাব্য সব সূত্র ধরে তদন্ত কাজ চলছে।
তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এটি একটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত। এই অস্ত্র মজুদের পেছনে অবশ্যই অনেকে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা, অস্ত্র ও গোলাবারুদের পরিমান অনেক। এগুলো কোন পথ দিয়ে কীভাবে দেশে এসেছে এবং উত্তরা পর্যন্ত কীভাবে আসতে পেরেছে সে রহস্য উদঘাটনে তদন্ত চলছে।’
রাইজিংবিডির এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘কবে শেষ হবে তদন্ত তা বলতে পারছি না। তবে ঘটনার প্রকৃত কারণ, কারা জড়িত তা তদন্ত প্রতিবেদনে থাকবে। সে জন্য অপেক্ষা করুন।’
ঘটনার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, এ যাবৎকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেসব অস্ত্র বিশেষ করে বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেগুলোর গায়ে লেখা ছিলো কোন দেশে তৈরি। এটা তদন্তে বেশ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। কোন দেশ থেকে এসেছে, কারা এনেছে এবং অর্থের উৎস কী, সে সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া গেছে। কিন্তু উত্তরায় দিয়াবাড়ী খালে অস্ত্র উদ্ধারের ক্ষেত্রে তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। কেননা, অত্যাধুনিক এসব অস্ত্রের গায়ে কোন দেশে তৈরি হয়েছে তা লেখা নেই। যদি নাম লেখা থাকতো তাহলে ওই দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করে কারা এনেছে তা পাওয়া যেত। সে ক্ষেত্রে অস্ত্রের গন্তব্য, উদ্দশ্য কি ছিল তাও বের হয়ে আসতো। ’
তিনি বলেন, ‘এ ধরণের অস্ত্র তৈরিতে পারদর্শী কয়েকটি দেশের সঙ্গে ইতোমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে। কিন্তু তেমন কোন তথ্য মিলছে না। তবে অস্ত্রগুলো যে বড় ধরনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আনা হয়েছে সে ব্যাপারে অনেকখানি নিশ্চিত হয়েছেন গোয়েন্দারা।’
গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঘটনার দিন কালো রংয়ের একটি পাজেরো জিপ উদ্ধার করা হয়। কিন্তু সেটির নম্বর প্লেট নেই। পরে বিআরটিএ তে যোগাযোগ করেও গাড়ির মালিককে পাওয়া যাচ্ছে না। গাড়ির মালিককে পেলে তদন্ত অনেক দূর এগোনো যেত। কিন্তু তা হচ্ছে না। এ কারণেও তদন্তে একটু সময় লাগছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৮ জুন আটটি কাপড়ের ব্যাগের মধ্যে ৯৭টি পিস্তল, ৪৫২টি ম্যাগাজিন, ১০টি বেয়নেট ও ১ হাজার ৬০টি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ আগস্ট ২০১৭/মাকসুদ/শাহনেওয়াজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন