ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পর্যটনের বিকাশে বর্ডার ট্যুরিজম

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৪৭, ৯ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পর্যটনের বিকাশে বর্ডার ট্যুরিজম

আহমদ নূর : দেশের পর্যটন খাতকে আরো গতিশীল করার পরিকল্পনায় যোগ দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি তারা সীমান্ত এলাকায় পর্যটনকে বিকশিত করার জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে আরো বেগবান, জনপ্রিয় করে তোলা এবং এই খাতকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে তারা। তাদের এই প্রকল্পের স্লোগান রাখা হয়েছে ‘সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় সাচ্ছন্দ ভ্রমণ’। বিজিবি ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের অধীনে বর্ডার ট্যুরিজম নামে এ প্রকল্প পরিচালিত হবে।

সূত্র জানিয়েছে, বর্ডার ট্যুরিজম বেসরকারিভাবে পরিচালিত হবে। এর মূল উদ্দেশ্য থাকবে সীমান্ত এলাকায় বেকারত্ব নিরসনে সহায়তা করা। প্রকল্পটির সঙ্গে স্থানীয়রা সম্পৃক্ত হতে পারবেন।

ইতিমধ্যেই বর্ডার ট্যুরিজম নামে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেছে বিজিবি। সেখানে বাংলাদেশের চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্ত সংলগ্ন দর্শনীয় জায়গাগুলোর সকল তথ্য পাওয়া যাবে। বিজিবির ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত রিসোর্টগুলোর ভিডিও এবং স্থির চিত্র দেওয়া থাকবে সেখানে। ঢাকা বা অন্যান্য স্থান থেকে সে সব রিসোর্টে যাওয়ার জন্য যারা আগ্রহী হবেন তাদের জন্য ট্যুরের প্যাকেজ, অনলাইন বুকিং ও পেমেন্ট সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য থাকবে।

দেশের দর্শনীয় স্থানগুলো সম্পর্কে বিদেশে প্রচার করা ও পর্যটন খাতকে বিকশিত করতে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ বর্ডার ট্যুরিজম নিয়ে কাজ করছে।

বিজিবির জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহম্মদ মহসিন রেজা জানান, ইতিমধ্যে ওয়েবসাইটের কাজ শেষ হয়েছে। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন এটি উদ্বোধনও করেছেন। ওয়েবসাইটে দর্শনীয় জায়গাগুলোর তথ্য রাখা হয়েছে। তবে এটি এখনো প্রকাশ করা হয়নি। শিগগিরই সবাই এটি দেখতে পাবেন।

তিনি জানান, বর্ডার ট্যুরিজমের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয়েছে। তাকে জানানো হয়েছে যে, এটি সীমান্ত এলাকায় বেকারদের কর্মসংস্থান তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি তিনি দেখেছেন এবং এর সাফল্য কামনা করেছেন।

বেকারত্ব দূরীকরণে বেসরকারিভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বর্ডার ট্যুরিজম- এমন প্রত্যাশা করছেন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। আর এতে সীমান্ত এলাকায় অপরাধের হার বিশেষ করে চোরাচালান কমে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

তিনি বলেছেন, আস্তে আস্তে কাজটি শুরু করছি। এটি সীমান্ত এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখবে। কারণ, তারাই এটি চালাবে। বিজিবি শুধু সহায়তা করবে। এটি বিজিবি কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে পরিচালনা করা হবে।

তিনি বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় অনেক দর্শনীয় জায়গা রয়েছে। পর্যটনের ব্যাপারে আমাদেরও সক্ষমতা রয়েছে। সব জায়গায় আমাদের লোক আছে। রেস্ট হাউজ আছে। সেখানে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার সঙ্গে ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের সেবা দেওয়া হবে।’

মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘সীমান্ত এলাকায় বেকারত্বের কারণে ও অল্প সময়ে বাড়তি আয়ের লোভে চোরাচালানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে যান কিছু মানুষ। এ প্রকল্প সম্পূর্ণভাবে চালু হলে চোরাচালান বাদ দিয়ে অনেকে ট্যুরিজমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হবেন। এতে অপরাধের হার কমে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রাথমিক টার্গেট দেশীয় ট্যুরিস্ট। তবে বিদেশীরা যেতে চাইলে তাদের জন্যও ব্যবস্থা করা হবে।’

বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বর্ডার ট্যুরিজমকে আরামদায়ক করতে সব ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য থাকছে যে, ভ্রমণকারী বাসায় বসে শুধু ইচ্ছে পোষণ করবেন। এরপর তাকে ভ্রমণে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব থাকবে বর্ডার ট্যুরিজমের। এজন্য শুধু বর্ডার ট্যুরিজমের ওয়েভ সাইটে প্রবেশ করে নির্দিষ্ট প্যাকেজটি সিলেক্ট করে নিতে হবে।

মেজর জেনারেল আবুল হোসেন বলেন, ‘বর্ডার ট্যুরিজম এরকম হবে যে, আপনি চাইলেন ঢাকা থেকে কক্সবাজার যাবেন। এটা শুধু বাসায় বসে উইশ করলেই হবে। বাকিটা বর্ডার ট্যুরিজম করবে।’

তিনি বলেন, ‘বর্ডার ট্যুরিজমের ফিলোসফি হলো- পয়সা বড় কথা না। বেকারদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিই বড় কথা।’

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৭/নূর/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়