ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাজধানীর ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় পুলিশের নজরদারি

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২৫ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজধানীর ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় পুলিশের নজরদারি

মাকসুদুর রহমান : ঈদুল আজহা আসন্ন। ঈদকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে ছিনতাইকারী চক্র। এ কারণে আগে থেকেই রাজধানীর ছিনতাইপ্রবণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি করছে পুলিশ। ধরা পড়ছে ছিনতাইকারীরা।

গত সোমবার রাজধানীর তেজগাঁও ও গুলশান থানা এলাকা থেকে ছিনতাইকারী চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আবু সালেহ মুসা ওরফে তাহের, শফিক, তরিকুল, মো. জগলুল হায়দার, মো. আব্দুল্লাহ ও মো. রিপনকে ছিনতাইকালে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক।

চলতি মাসের শুরুর দিকে ওয়ারীতে জাকির (৩৫) ও ইস্রাফিল মিয়া (৩৮) নামের দুই মুদি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ৫২ হাজার টাকা ছিনতাই করে ছিনতাইকারীরা। আহত অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে কদমতলী এলাকায় মো. সুমন নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে ৫ লাখ টাকা ছিনতাই করে মোটরসাইকেল আরোহী ছিনতাইকারী গ্রুপ। টিকাটুলী এলাকায় বোমা ফাটিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের শরিফ হাফিজুর রহমানকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৭৮ হাজার টাকা ছিনতাই করা হয়। শুধু এরাই নয়, রাজধানীর অলিগলি থেকে শুরু করে সর্বত্র জনসমক্ষে ছিনতাই হচ্ছে।

এদিকে ভুক্তভোগীদের বেশিরভাগই ঝামেলার কথা চিন্তা করে পুলিশের কাছে অভিযোগ করছেন না। এ কারণে নির্দিষ্ট করে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না বলে পুলিশ জানিয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ছিনতাই প্রতিরোধে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ কাজ করছে। নিরাপত্তা কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। রাস্তায় পুলিশের টহল এবং মার্কেটকেন্দ্রিক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।’

ছিনতাইকারীদের অভয়ারণ্য কোন কোন এলাকা এবং সেগুলোতে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে? রাইজিংবিডির এ প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট এলাকা নেই। রাজধানীর সবখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তারপরও একাধিকবার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে, এমন এলাকায় আমরা বিশেষ নজরদারি করছি। এ কারণে ছিনতাই হচ্ছে না।’

পুলিশ জানায়, ছিনতাই রোধে রাজধানীতে বিশেষভাবে কাজ করলেও বেশকিছু এলাকাকে বিশেষ টার্গেটে রাখতে হয় সব সময়। যাত্রাবাড়ী, শ্যামপুর, ওয়ারী, সূত্রাপুর, কদমতলী, শনির আখড়া, ডেমরা থানা এলাকার বিভিন্ন পয়েন্ট, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী মোড়, মতিঝিল, উত্তরা, মিরপুর, লালবাগ, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, শাপলা চত্বর ব্যাংক পাড়া, গুলিস্তান, অভিজাত এলাকা, মালিবাগের এসবি অফিসের সামনে থেকে কাকরাইল মোড়, রাজারবাগ পুলিশ লাইনের ১ নম্বর গেট থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের আগে পীর জঙ্গি মাজার, শান্তিনগর মোড় থেকে ইস্টার্ন প্লাজা মার্কেট, মিরপুর-১ নম্বর গোলচত্বর থেকে টেকনিক্যাল মোড়, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে গুলশান শুটিং ক্লাব, মহাখালী কাঁচাবাজার, মেরুল বাড্ডা থেকে রামপুরা ব্রিজ, মৌচাক থেকে মগবাজার মোড়, হাতিরঝিল এলাকাসহ রাজধানীর সাড়ে তিন শতাধিক স্পটে পুলিশের নিয়মিত টহল অব্যাহত আছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। বিশেষ বিশেষ এলাকায় ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরাও বসানো হয়েছে। এ কারণে এসব এলাকাতেই নয়, রাজধানীতে ছিনতাই হচ্ছে না বলে পুলিশ কর্মকর্তারা দাবি করছেন।

গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য আছে, কোরবানির ঈদকে ঘিরে রাজধানীতে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র এলাকা ভাগ করে নিয়ে ছিনতাইয়ের জন্য মাঠে নেমেছে। বাস টার্মিনাল, ফেরি ঘাট, লঞ্চ ও ট্রেন স্টেশন থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লার অলিগলি এমনকি প্রধান সড়কে জনসমক্ষেও তারা এ অপরাধ করতে পারে। এ কারণে পুলিশ ছিনতাই রোধে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। ছিনতাইকারী চক্রের একটি অংশে অধিকাংশ তরুণ। এরা কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী। নেশার টাকা জোগাড় করতে এসব তরুণ অপরাধ করছে।

ছিনতাই রোধে জনগণকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ আগস্ট ২০১৭/মাকসুদ/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়