ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আয়কর নিয়ে জটিলতা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০৯, ২১ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের আয়কর নিয়ে জটিলতা

কেএমএ হাসনাত : জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থার (জাইকা) সহায়তাপুষ্ট একটি প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে আয়কর নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাড়া না পাওয়ায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, জাইকার সহায়তাপুষ্ট ‘আরবান বিল্ডিং সেইফটি প্রজেক্ট (ইউবিএসআই)’ শীর্ষক প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগের ক্ষেত্রে চুক্তি অনুয়ায়ী জাপানের একজন এবং দেশী দুইজনসহ মোট তিনজন পরামর্শককে আয়কর অব্যহতি দেওয়ার কথা। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য গত বছর ১৯ অক্টোবর এনবিআর চেয়ারম্যানকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু এনবিআর থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় বাংলাদেশ ব্যাংক এ সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল এনবিআর চেয়ারম্যানকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রকল্পের এক্সিকিউটিং এজেন্সি এবং বাংলাদেশ ব্যাংক প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে ইআরডি’র সিনিয়র সচিব এবং জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত স্বাক্ষরিত  ‘ইউবিএসআই’ প্রকল্পের এক্সচেঞ্জ অব নোটস একটি নির্বাহী সম্মতিপত্র হিসেবে বিবেচিত।

এতে একটি ধারায় জাপানি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এবং পরামর্শক প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত জাপানি নাগরিকদের বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আয়কর অব্যাহতি দেওয়া হবে বলে উল্লেখ আছে। এরই আলোকে এনবিআরকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছিল বলে সূত্র জানায়।

সূত্র আরো জানায়, এরপর দীর্ঘ প্রায় আট মাস অতিক্রান্ত হলেও এনবিআর এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক উদ্ভুত সমস্যা নিরসনে সহযোগিতা চেয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গত ৭ জানুয়ারি একটি চিঠি দিয়েছে।

চিঠিতে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড দশ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে মতামত না দিলে ড্রাফটে যেমন প্রস্তাব আছে সেটি চুড়ান্ত হবে) অনুযায়ী অদ্যাবধি এনবিআরের কোন সিদ্ধান্ত/মতামত পাওয়া যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তা ছাড়া, বাংলাদেশ ব্যাংক বরাবর প্রেরিত এনবিআরের ২০১৭ সালের ২১ মার্চ লেখা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, ‘কর আইনে করযোগ্য কাউকে কর অব্যহতি সুবিধা দিতে হলে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর আওতায় অফিসিয়াল গেজেটে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তা প্রদান করতে হয়। আয়কর অধ্যাদেশের আওতায় প্রজ্ঞাপন জারি ব্যতিরেকে কোন নির্বাহী সম্মতিপত্রের মাধ্যমে সরাসরি কর অব্যাহতির সুবিধা প্রদানের আইনগত অবকাশ নেই। ফলে, কোন নির্বাহী সম্মতিপত্রে আয়কর অব্যাহতির বিষয়ে উল্লেখ থাকলে উক্ত সম্মতিপত্রে উল্লেখিত কর অব্যাহতির বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ, দপ্তর বা মন্ত্রণালয় আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর আওতায় এ সংক্রান্ত এস,আর,ও জারির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে অনুরোধ করতে পারে।

চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, এই নির্দেশনা অনুযায়ী অত্র প্রকল্প ইউনিট ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল এবং ১৯ অক্টোবর তারিখে এনবিআরকে চিঠি পাঠানো হলেও তার উপর এনবিআর কর্তৃক কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে কিনা- সে বিষয়ে এখনো জানা যায়নি বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিবকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, অর্থমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী অদ্যাবধি বিষয়টির উপর এনবিআর কর্তৃক কোন সিদ্ধান্ত/মতামত প্রদান করা হয়েছে কিনা তা অবহিত না হওয়ায় এ বিষয়ে অত্র ইউনিট কর্তৃক করণীয় বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা (যদি চুক্তি স্বাক্ষর করার পরামর্শ দেওয়া হয় তবে আয়কর কিভাবে পরিশোধ করা হবে সে বিষয়ে মতামতসহ) ও প্রকল্পের এক্সিকিউটিং এজেন্সি হিসেবে মতামত প্রয়োজন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জানুয়ারি ২০১৮/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়