ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

জাপার ৫ কোটি টাকার মহাসমাবেশে ৫ লাখ লোকের টার্গেট

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ২২ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জাপার ৫ কোটি টাকার মহাসমাবেশে ৫ লাখ লোকের টার্গেট

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন : আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসমাবেশ করবে এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি। মহাসমাবেশের বাজেট ধরা হয়েছে ৫ কোটি টাকা। আর বিশাল এই বাজেটের কর্মসূচিতে ৫ লাখ লোক সমাগমের টার্গেট নেওয়া হয়েছে।

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করতে চায় জাতীয় পার্টি। এজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৫ ফেব্রুয়ারি এই মহাসমাবেশ কর্মসূচি দেন দলটির চেয়ারম্যান এরশাদ।

জানা গেছে, স্মরণকালের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ ও ব্যাপক লোকসমাগম করে রাজনীতিতে আলোচনায় থাকতে চান এরশাদ। যাতে আগামী নির্বাচনে তাকে বড় দুটি দল সমীহ করে। এ কারণে মহাসমাবেশ সফল করতে জোর প্রস্তুতি শুরু করেছেন তিনি। এই মহাসমাবেশে কমপক্ষে পাঁচ লক্ষাধিক নেতাকর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চান এরশাদ। আর এই সমাবেশ আয়োজনে জাতীয় পার্টির খরচ করবে পাঁচ কোটি টাকা।

সোমবার বনানীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত দলের এমপি, উপদেষ্টা ও ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি নিজেই এই ঘোষণা দেন।

এ সময় এরশাদ বলেন, ১৫ ফেব্রুয়ারির মহাসমাবেশ সবচেয়ে বড় আয়োজন হবে। এই সমাবেশের বাজেট পাঁচ কোটি টাকা। এ বাজেট সংগ্রহ করতে হবে। দেখাতে হবে জনগণ আমাদের প্রতি আকৃষ্ট। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসবে। লঞ্চ, বাস, ট্রেন ভাড়া করতে হবে।

জানা গেছে, জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশে রাজধানী হবে জনসমুদ্র। এজন্য এরশাদ দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের প্রত্যেককে পাঁচ লাখ টাকা ও এলাকা থেকে কমপক্ষে তিন হাজার মানুষ নিয়ে আসার নির্দেশনা দিয়েছেন।

দলের বর্তমান এমপিদের পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে যারা জাপার মনোনয়নপ্রত্যাশী তাদের সবাইকে নিজ নিজ নির্বাচনী আসন থেকে কমপক্ষে তিন হাজার নেতাকর্মী-সমর্থক নিয়ে মহাসমাবেশে উপস্থিত থাকতে হবে। না হলে আগামীতে মনোনয়ন নিয়ে বিপাকে পড়তে হতে পারে এসব নেতাকে। এ বিষয়ে নজরদারি করা হবে, সতর্ক থাকতেও বলে দেওয়া হয়েছে তাদের।

শুধু এমপি, মনোনয়ন-প্রত্যাশীদের নয়, দলের সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে মহাসমাবেশ সফল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন জাপা প্রধান।

মহাসমাবেশ সফল করতে নেতাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন এরশাদ। কর্মসূচির সার্বিক বিষয় নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে রাত-দিন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি। তিনি কথা বলছেন জেলা নেতাদের সঙ্গে, প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দিচ্ছেন তিনি।

দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ হবে জনসমুদ্র। সেদিন জাতীয় পার্টির নতুন যাত্রা শুরু হবে। জাতীয় নির্বাচনে জনরায়ে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার মধ্যদিয়ে আমাদের যাত্রা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, পার্টির চেয়ারম্যান কষ্ট করে কীভাবে দলকে গড়ে তুলেছেন, সুসংগঠিত করেছেন, সেদিন জাতীয় পার্টির জনসমুদ্র তা প্রমাণ করবে। তিনি আমাদের প্রাণ, নেতাকর্মীদের অস্তিত্ব। সফল সাবেক এই রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে সরকার গঠন করে মানুষকে মুক্তি দিতে পারলেই তবে আমাদের কষ্ট-শ্রম সার্থক হবে।

এদিকে মহাসমাবেশ সফল করতে ইতিমধ্যে দেশের সব জেলা-উপজেলার জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্ততি শুরু করেছেন। প্রস্তুতি নিচ্ছেন পার্টির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারাও।

জাতীয় যুব সংহতি, জাতীয় ছাত্রসমাজ, জাতীয় কৃষক পার্টি, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টি, জাতীয় শ্রমিক পার্টি, মহিলা পার্টি, ছাত্রসমাজ কেন্দ্রীয় টিম সারা দেশ সফর করছে মহাসমাবেশের প্রচার কাজে।

জাতীয় পার্টির সিনিয়র নেতারাও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা সফর করে কর্মিসভা, বর্ধিত সভা ও সমাবেশ করছেন। আর এসব কর্মকাণ্ড দেখভাল করছেন জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এমপি।

মহাসমবেশে সফল করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। সমাবেশস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঢাকা মহানগর দক্ষিণ এলাকায় হওয়ায় এই সমাবেশ আয়োজনের বড় দায়িত্ব কাঁধে  পড়েছে দক্ষিণের নেতাকর্মীদের ওপর।

মহাসমাবেশে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য মহানগরের নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন। এর মধ্যে মহানগরের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্বাচনী এলাকা শ্যামপুর-কদমতলি থেকে ১৫ হাজার ও  ঢাকা দক্ষিণের অন্যান্য থানা থেকে ১৫ হাজার নেতাকর্মী অংশ নেবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল আলম রুবেল।

তিনি জানান, মহাসমাবেশ সফল করার জন্য পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও আমাদের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলার নির্দেশে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি।

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিরামহীনভাবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সব থানা ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পথসভা, প্রচার মিছিল ও চারটি জনসভা করা হবে। আমাদের পক্ষ থেকে দুই ধরনের পোস্টার-লিফলেট প্রকাশ করা হচ্ছে। এছাড়া পুরো শহরে টানা সাত দিন ধরে মাইকিংয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে জানিয়েছেন, প্রতিবারের মতো এবারও মহাসমাবেশে সবচেয়ে বড় জমায়েত যাবে আবু হোসেন বাবলার নিবার্চনী এলাকা থেকে। এই লক্ষ্যে শ্যামপুর-কদমতলি থানা জাতীয় পার্টি ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। প্রায় প্রতিদিন আমরা তিনটা-চারটা সভা সমাবেশ করে যাচ্ছি। একই সঙ্গে চলছে প্রচার মিছিল আর গণসংযোগ।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তরের পক্ষ থেকেও মহাসমাবেশে ব্যাপক জমায়েতের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উত্তরের সব থানা ও ওয়ার্ডে ওয়র্ডে চলছে  প্রস্তুতি সভা।

মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম ফয়সল চিশতী ও সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম সেন্টুর নেতৃত্বে বড় ধরনের লোক সমাগমের প্রস্তুতি নিচ্ছে মহানগর উত্তর জাতীয় পার্টি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ জানুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়