ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিএনপির প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সতর্ক প্রস্তুতি থাকবে আ.লীগে

নৃপেন রায় || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪১, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিএনপির প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সতর্ক প্রস্তুতি থাকবে আ.লীগে

নৃপেন রায় : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায়কে কেন্দ্র করে কোন ধরণের  নৈরাজ্য, সহিংসতা এবং নাশকতামুলক কাজ করার চেষ্টা করা হলে কঠোর হস্তে প্রতিহত করবে আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে বিএনপি নেতাদের আন্দোলনের হুমকি ও গতিবিধি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে দলটি। মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার পর বিএনপি ও তার শরিকদের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে সতর্ক প্রস্তুতি থাকবে আওয়ামী লীগে।

মামলা রায় বিপক্ষে গেলে বিএনপি কি ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে তা মোকাবিলার জন্য ঢাকা ও তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড। আর রায় ঘোষণার দিন রাজধানী ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ জেলা শহরের কৌশলগত পয়েন্টগুলোতে দলীয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় রাখার পরিকল্পনাও রয়েছে। ইতোমধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সফরে যাওয়া কেন্দ্রীয় নেতারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া শুরু করেছেন বলে দলীয় নীতিনির্ধারক সূত্রে জানা গেছে।

আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই সদস্য বলেন, রায় বিএনপি নেত্রীর পক্ষে না বিপক্ষে যাবে- এটা আমাদের ভাবার বিষয় না। রায় দেবে আদালত। আর ওই মামলাও আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হয় নাই। তারপরও বিএনপি জামায়াত সরকারবিরোধী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা রায় ঘোষণার আগেই আদালত ও সরকারকে প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে। আমরা বিএনপি-জামায়াতের অতীত ইতিহাস জানি। তারা যেকোন ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। যা ২০১৪ সালে গত নির্বাচনের আগে ও পরে পাঁচ শতাধিক স্কুল-কলেজ পুড়িয়েছে, আগুন সন্ত্রাস করে ও পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।

নির্বাচন পরবর্তী সময়ে টানা ৩ মাস হরতাল-অবরোধ দিয়ে দেশটাকে স্থবির করে রেখেছিল। তারা অবরোধ আন্দোলনের নামে সকল ধরনের সহিংস পন্থা অবলম্বন করে সরকারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু সরকার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জনগণের সহায়তায় তাদের সকল অপকর্ম প্রতিহত করেছে। তারা একের পর এক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ঢুকে পড়েছে। এখন আবার রায়কে কেন্দ্র করে দেশে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার চক্রান্ত করছে। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তারা সৃষ্টি করলে আমরাও পরিস্থিতি বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের প্রতিহত করার জন্য মাঠে থাকব।

এ ব্যাপারে ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় নিয়ে দলের অবস্থান জানতে চাইলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং প্রাক্তন আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু এমপি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এখানে আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি অবান্তর। কারণ, আদালত স্বাধীনভাবে রায় প্রদান করে। আদালত স্বাধীন। এখানে কোন পক্ষেরই কোন কিছু বলার নেই। উনি খালাস পেতে পারেন আবার ওনার শাস্তিও হতে পারে। এটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে; সাক্ষীদের উপর নির্ভর করবে। কারণ, সাক্ষী সাবুধের উপর নির্ভর করে রায় হয়। এখন সাধারণ পাবলিকসহ কোন পক্ষেরই কোন বক্তব্য থাকতে পারে না।’

এ ব্যাপারে দলের আরেক নেতা সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে মোকাদ্দমাটা হয়েছে; এই মোকাদ্দমা আওয়ামী লীগ করেনি। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) করেছে। আর ওই বাচ্চাদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল কিন্তু সেই খাবার বিক্রি করে সেই টাকা বিদেশে পাচার করেছে এবং তা ধরা পড়েছে। এর জন্য তো আওয়ামী লীগ দায়ী নয়। আদালত যদি তার বিপক্ষে রায় দেয় সেখানে তো আওয়ামী লীগের কোন দোষ থাকবে না। তারা কোন পদক্ষেপ নিতে চাইলে আমরা সর্বোচ্চভাবে সেটা ঠেকানোর চেষ্টা করবো। আমরা যথেষ্ঠভাবে রেডি আছি সে ব্যাপারে।’

দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও আমাদের কথা হচ্ছে। ৮ তারিখে যে রায় হবে সে রায়ের জন্য আওয়ামী লীগ দায়ী নয়। তারপরও সে যদি কিছু করতে চায় সেটা যেভাবে হোক আমরা ঠেকাবো।’

 বিএনপি নেত্রীর দুর্নীতির মামলার রায় ঘোষণার আগেই উভয় দলের নেতাদের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়েছে। খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করলে তা প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সিনিয়র নেতারা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ জানুয়ারি ২০১৮/নৃপেন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়