ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

কোটার পর্যালোচনা প্রয়োজন: রাশেদা কে. চৌধুরী

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৫, ৬ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কোটার পর্যালোচনা প্রয়োজন: রাশেদা কে. চৌধুরী

আবু বকর ইয়ামিন: দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালে চালু হয়েছিল চাকরিতে কোটা পদ্ধতি। তবে চাকরির নিয়োগে এখন কোটারই আধিপত্য। সম্প্রতি কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করছেন চাকরি প্রত্যাশীরা। কয়েক বছর ধরেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈষম্য দূর করতে ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতেই যে কোটা, তাতে যদি বৈষম্য থাকে তাহলে সংস্কার ছাড়া কোনও সমাধান হবে না। আর এ সংস্কার হতে হবে তথ্যভিত্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত। সময়ে সময়ে চাহিদা ও যোগানের ভিত্তিতে এর পর্যালোচনা প্রয়োজন।

কোটা প্রথা নিয়ে রাইজিংবিডির ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ দ্বিতীয় দিন কথা বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা, গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক, উন্নয়নকর্মী রাশেদা কে. চৌধুরী।

তিনি বলেন, ‘এর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। একটা হচ্ছে যৌক্তিকতা, আরেকটা হচ্ছে ন্যায্যতা। মূলত কাদের জন্য এটি ন্যায্য সেটি আমাদের দেখতে হবে। ন্যায্যতার সঙ্গে সব সময় যুক্তি মিলে না। এটির জন্য যারা যোগ্য তারাই সেটি পাবে। এ প্রক্রিয়া পৃথিবীর সর্বত্রই বিরাজমান।

কোটা পদ্ধতি সাময়িক বিশেষ কারণে করা যেতে পারে। যা চিরদিন চলে না। বিশেষ কারণেই মূলত এ বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়। এক কথায় পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য এ বিশেষ ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে। তবে সময়ের আলোকে সেটির পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।

আমাদের মেয়েদের জন্য কোটা রয়েছে, আদিবাসীদের জন্য রয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেটি রাখা হয়েছে সেটিতো আমাদের ঋণ শোধ করা, যেটি থাকতেই হবে। তবে সময়ের আলোকে এর চাহিদা ও যোগান পর্যালোচনা করতে হবে।  

আমার মতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বংশ পরমপরা পেতে পারে। কারণ, সর্বস্ব দিয়েও মুক্তিযোদ্ধাদের ঋণ আমরা শোধ করতে পারবো না। তবে এর শতকরা হার কত হবে সেটি সময়ের আলোকে পর্যালোচনা করতে হবে।

নির্দিষ্ট সময় পর পর দেশের পরিস্থিতির আলোকে এটি নিয়ে পুন:বিবেচনা করা প্রয়োজন। একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে, আগেকার সময়ে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হতো অষ্টম শ্রেণি পাস দেখে। সময়ের আলোকে সেক্ষেত্রে নিয়োগের যোগ্যতা বাড়ানো হয়েছে।’  

তিনি বলেন, ‘হুট করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। পর্যালোচনা করে তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে এটিকে সংস্কার করতে হবে।

আমরা দেখছি সর্বত্র এখন অনেক প্রতিযোগিতা। বিশেষ করে চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে। অনেককে পড়াশোনা শেষ করে দীর্ঘদিন চাকরির অপেক্ষা করতে হয়। যারা প্রশাসনে আসেন তারাই আমাদের দেশে ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবেন। বিশেষ করে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের সম্পর্ক বাড়াতে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন রয়েছে। তাই এসব ক্ষেত্রে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। অন্যথায় সেটি আমাদের সবার জন্যই ক্ষতির কারণ হবে।

নতুন প্রজন্মের মাঝে বেকারত্ব বাড়ছে। লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত বেকার রয়েছেন আমাদের দেশে। তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ এপ্রিল ২০১৮/ইয়ামিন/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়