ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

আইটি খাতে ২০% নগদ প্রণোদনা চায় বেসিস

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০২, ৭ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
আইটি খাতে ২০% নগদ প্রণোদনা চায় বেসিস

এম এ রহমান মাসুম : ২০২১ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তথ্যপ্রযুক্তি বা আইটি খাতে এবারো ২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা রাখার পক্ষে জোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)।

এছাড়া ডিজিটাল স্বপ্ন বাস্তবায়নে সরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট বাজেটের ৫ শতাংশ প্রযুক্তি খাতে খরচের বাধ‌্যবাধকতা রাখা, ভ‌্যাটমুক্ত ইন্টারনেট সেবা, উৎসে ভ‌্যাট প্রত‌্যাহারসহ বেশ কিছু প্রস্তাব এরই মধ‌্যে লিখিতভাবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) পেশ করেছে সংগঠনটি।

এনবিআর চেয়ারম‌্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া এনডিসি বরাবর পাঠানো ওই প্রস্তাব মার্চের প্রথম সপ্তাহে বেসিসের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর সই করা ওই প্রস্তাবনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন‌্য এরই মধ‌্যে এনবিআর চেয়ারম‌্যান নির্দেশনা দিয়েছেন।

প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, ২০১৭-১৮ সালের বাজেটে বেসিসের সুনির্দিষ্ট অনেকগুলো প্রস্তাবনা প্রতিফলিত হয়নি। অথচ প্রতিফলিত হলে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে গতি সৃষ্টি হতো। কারণ বর্তমান ক্রমপরিবর্তনশীল বিশ্ব প্রেক্ষাপটে বেসিস মনে করে আসন্ন জাতীয় বাজেটকে সামনে রেখে বিদ‌্যমান বিধানাবলির সুনির্দিষ্ট কিছু জায়গায় সংশোধন প্রয়োজন রয়েছে। এজন‌্য এবারো আসন্ন ২০১৮-১৯ জাতীয় বাজেটে এদেশের সফটওয়‌্যার ও তথ‌্যপ্রযুক্তি সেবা খাতের আগ্রযাত্রা আরো গতিশীলকরণে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা বিবেচনার জন‌্য দেওয়া হলো।

প্রস্তাবনাগুলো হলো-
২০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা :
বেসিস জানায়, সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত থেকে আগামী ২০২১ সাল নাগাদ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ  লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সফটওয়্যার ও আইটি সেবা খাতের কোম্পানিগুলোকে রপ্তানিতে নগদ অর্থ প্রণোদনা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই এই খাতে ২০ শতাংশ নগদ অর্থ প্রণোদনা রাখা প্রয়োজন বলে বেসিস মনে করে।

ইন্টারনেটে ভ‌্যাট মওকুফ : ইন্টারনেট ব‌্যবহার সহজলভ‌্য করতে ভ্যাট আইনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের মাধ্যমে সব পর্যায়ে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর ভ্যাট মওকুফ দরকার। সুলভে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে এনটিটিএনের পক্ষ থেকে আরোপিত ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বেসিস।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের মোট বাজেটের ৫ শতাংশ আইটি খাত অন্তর্ভুক্তকরণ : ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের লক্ষ‌্যে আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক মোট বাজেটের ন্যূনতম ৫ শতাংশ অর্থ সফটওয়‌্যার ও আইটিএস খাতে খরচ করার বাধ‌্যবাধকতার বিধান অন্তর্ভুক্তিকরণ। এতে করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোয় ডিজিটালাইজেশন ত্বরান্বিত হবে এবং অনেক বড় দেশীয় বাজারের সৃষ্টি হবে।

প্রেক্ষাপট হিসেবে্ প্রস্তাবনায়‌ উল্লেখ করা হয়, সরকারের সব মন্ত্রণালয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আইসিটি খাতে গৃহীত উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দকৃত বাজেটর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। এ বরাদ্দের অধিকাংশই অবকাঠামোগত উন্নয়নে ব‌্যয় হবে বিধায় সরাসরিভাবে দেশি সফটওয়‌্যার শিল্পের ব‌্যবসায় সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে স্বল্প ভূমিকা রাখবে।

সেবার ওপর উৎসে মূসক প্রত‌্যাহার : স্থানীয় সফটওয়‌্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে অপর স্থানীয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সফটওয়‌্যার এবং তথ‌্যপ্রযুক্তি সেবার ওপর আরোপিত উৎসে মূসক সম্পূর্ণরূপে প্রত‌্যাহার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি। সংগঠনটি বলছে, গত ১ জুলাই ভ‌্যাট সম্পর্কিত ঘোষিত সাধারণ আদেশে তথ‌্য-প্রযুক্তিনির্ভর সেবার ওপর ৪.৫ শতাংশ হারে উৎসে মূসক কর্তন আরোপিত হয়। যা তথ‌্য-প্রযুক্তি খাতের বিকাশে অন্তরায়। তাই ওই ভ‌্যাট সম্পূর্ণরূপে প্রত‌্যাহারের দাবি জানাচ্ছি।

ট‌্যাক্স এক্সেম্পশন সার্টিফিকেট : এনবিআর থেকে ট‌্যাক্স এক্সেম্পশন সার্টিফিকেট প্রদান প্রক্রিয়া অত‌্যন্ত সময়ক্ষেপণকারী হিসেবে আবেদনকারী সফটওয়‌্যার ও তথ‌্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় অভিযোগ করে থাকে। অনেক সময় মাসের পর মাস আপেক্ষা করেও সার্টিফিকেট পাওয়া যায় না। এজন‌্য আয়কর আইনের অধীন ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আয়করমুক্ত প্রাপ্ত সফটওয়‌্যার ও তথ‌্যপ্রযুক্তি পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতি বছর ট‌্যাক্স এক্সেম্পশন সার্টিফিকেট না নিয়ে ওই সময়ের মধ‌্যে একবারই সার্টিফিকেট নিতে আবেদন করবে। যা এক মাসের মধ‌্যে আবেদনকারীকে হস্তান্তর করতে হবে বলে বেসিসের প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সফটওয়‌্যার বা আইটি এনাবেল্ড সার্ফিসেসের আয়ের ‍ওপর কর্তনকৃত অগ্রিম আয়কর ফেরত, ইন্টারনেট ইন্টারফেস কার্ড, রাউটার, সার্ভার, ব্যাটারিসহ সব ইন্টারনেট ইকুইপমেন্টের ওপর বর্তমান আরোপিত ভ্যাট ও শুল্ক প্রত্যাহারসহ আরো কিছু দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

এ বিষয়ে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৭ এপ্রিল ২০১৮/এম এ রহমান/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়