ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘সুষ্ঠু নির্বাচনের সঠিক কোনো ডেফিনেশন নেই’

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ১ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘সুষ্ঠু নির্বাচনের সঠিক কোনো ডেফিনেশন নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের সঠিক কোনো ডেফিনেশন নেই। কিন্তু এটার আইন নির্ধারিত ডেফিনেশন আছে।

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

সার্বিক দৃষ্টিতে সুষ্ঠু, না আপনাদের দৃষ্টিতে আইনানুগ নির্বাচন, কোনটা মুখ্য? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভোটারদের সন্তুষ্টি ও যারা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে তাদের সন্তুষ্টি এবং তাদের গ্রহণযোগ্যতার ওপর ভিত্তি করেই আমাদের নির্বাচন করতে হবে। তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে, এজন্যই আমরা কাজ করতেছি। সুষ্ঠুর কোনো ডেফিনেশন নেই, কিন্তু আইন নির্ধারিত ওটার ডেফিনেশন আছে, ব্যাখ্যা আছে। এজন্য আমরা যখন কাজ করি, তখন আইনানুগ নির্বাচনের জন্য সমস্ত কাজ করি। আর আমরা আইননানুগ নির্বাচন হলে ধরে নেই, এটা মোটামুটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে কিন্তু অস্ত্র থাকে, লাঠি থাকে এবং ওদের আলাদা একটা পোশাকও থাকে। ওই লাঠি আর অস্ত্র দেখলেই আমরা ভয় পাই। এটা কিন্তু সেই মোঘল আমল থেকেই হয়ে আসছে। তবে নির্বাচনের সময়ে কিন্তু পুলিশ বা প্রশাসন আমাদের অধীনেই থাকে। কেউ কেউ বলছে, আমরা নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে পারিনি। আর আমরা বলছি, আমরা আইনানুগ পরিবেশ বজায় রেখেছি।

আইনানুগ হলে নির্বাচন পুলিশের কাছে চলে যাচ্ছে কি না? এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের অধীনে নির্বাচন চলে যাচ্ছে যদি বলা হয়, তাহলে এটা হয়তো ভুল বলা হবে। হয়তোবা কোনো কোনো ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতার কারণে দেখা যায় বাহিনীর সদস্য অতি উৎসাহী হয়ে কিছু করে ফেলতে পারে। এটা নিয়ে আমার বেশি কথা বলা ভুল হবে। ব্যক্তিবিশেষে এটা হয়।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ৪২ জন পোলিং এজেন্টকে তুলে নিয়ে অন্য এলাকায় ছেড়ে দিয়েছে, এমন তথ্য আমরা গণমাধ্যমে দেখতে পেয়েছি, এটা কি আপনার ওই আইনানুগ শব্দটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে না? এ প্রশ্নের তিনি বলেন, আপনারা ওই পোলিং এজেন্টদের নামের তালিকা দেন আমাদের কাছে। তারা ওই সকল কেন্দ্রের জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত ছিল কি না, সেটা জানান। যদি সবকিছু ঠিক থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।

অপর এক প্রশ্নে জবাবে রফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনা সিটির নির্বাচনে বাবার সাথে একটি দুই বছরের শিশু গেল ভোটকক্ষে। ভোটকক্ষ থেকে বের হয়ে শিশুটি উল্লাস প্রকাশ করতে করতে বলতে থাকে, সে ভোট দিয়েছে। এটা কিন্তু আমাদের ওপরে একটা কালিমা লেপে দিয়েছে। কিন্তু আসল বিষয় তো সে তার বাবার সাথে ভোট দিতে গেছে।

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন- এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উনি কমেন্টস করেছেন। দয়া কারে তিনি যদি তথ্য-উপাত্ত দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করেন এবং কেন এই কমেন্ট করেছেন তা বলেন, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচন আগের দুই সিটি নির্বাচনের চেয়ে খারাপ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, খুলনা ও গাজীপুরে কোনো ফায়ার আর্মস (গুলি ছোড়া) হয়নি। কিন্তু কুমিল্লা ও রংপুরে কিন্তু আমাদের ফায়ার আর্মস করতে হয়েছে। তার পরও ওটাকে বলছেন, সবকিছু ঠিক আছে; আর এটাকে বলতেছেন না। কেন বলতেছেন না, সেটা তো আমি বলতে পারব না। বরং আমার কাছে মনে হয়েছে, এ দুটো নির্বাচনে লাঠিচার্জও করতে হয়নি ও ফায়ার আর্মসও করতে হয়নি।

আগামী তিন সিটি নির্বাচন কেমন হবে, এটা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাজীপুরে কিছু অনিয়ম হয়েছে। এজন্য আমরা ৯টি কেন্দ্র বন্ধ করেছি। এমন অনিয়ম যেন না হয়, আগামী তিন সিটি নির্বাচনে যেন কেন্দ্র বন্ধ করতে না হয়, সে ব্যবস্থা আমরা নেব। এরপরও হলে আমরা এখানেও (তিন সিটিতে) কেন্দ্র বন্ধ করব। কিন্তু আমরা আইনের বাইরে তো যেতে পারি না। আমাদের আইনে যা আছে, সেভাবেই চলতে হবে।

গাজীপুরের সিটি নির্বাচনের বিষয়ে কমিশন এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রয়োজনে আমরা এখানেও তদন্ত কমিটি করব। আগে আমরা বসি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জুলাই ২০১৮/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়