ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

গৃহঋণ : পাঁচ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চলতি মাসেই

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:০০, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গৃহঋণ : পাঁচ ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক চলতি মাসেই

কেএমএ হাসনাত : সরকারি চাকরিজীবীদের সহজ শর্তে গৃহ নির্মাণ ঋণ দিতে চলতি মাসে দেশের পাঁচটি সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হবে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা গৃহঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ২০ বছরে পরিশোধযোগ্য এ ঋণের সুদের হার হবে ১০ শতাংশ। এর মধ্যে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৫ শতাংশ, বাকি ৫ শতাংশ ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করবে সরকার।

গত ২৮ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

যেসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ দেওয়া হবে সেগুলো হচ্ছে- সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী এবং বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)। এ ঋণের জন্য সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান মনোনীত করার আগে অর্থ বিভাগের অনুমতি নিতে হবে।

বৈঠকে একটি অভিন্ন আবেদনপত্র তৈরির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, চাকরির স্থায়ীকরণপত্র, বেতনের রশিদ, সম্ভাব্য পেনশন থেকে আয়, ব্যাংকের হিসাব বিবরণ ও অন্য ব্যাংকে যদি কোনো ঋণ নেওয়া থাকে তাহলে সেসব দলিল আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযোজন করতে হবে। ঋণ প্রক্রিয়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি মনিটরিং সেল তদারকি করবে। অনলাইনের মাধ্যমে মনিটরিং সেলে এ আবেদন করতে হবে।

তবে ২০তম থেকে দশম গ্রেডের চাকরিজীবীরা এ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন না। কারণ, মাসিক বেতনের ৮০ শতাংশ অনেক ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশের ওপর ঋণের কিস্তি জন্য দিতে হবে।

কর্মচারীরা (১০ থেকে ২০ গ্রেড) বলছেন, মাসিক বেতন থেকে ঋণের কিস্তি দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। আর বেতন থেকে কিস্তি পরিশোধ করতে হলে সংসার চালানো দুষ্কর হয়ে পড়বে। ২৩ লাখ সরকারি চাকরিজীবীর মধ্যে প্রায় ৭০ ভাগই কর্মচারী।

এ বিষয়ে ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্য বলেন, গৃহঋণের নীতিমালা তো আর বাইবেল না যে পরিবর্তন করা যাবে না। অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে পেনশনের টাকা এখানে কাজে লাগানো যেতে পারে। অন্যদিকে, কর্মকতাদের এ ঋণ নিতে কোনো সমস্যা হবার কথা নয়।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, বিনা সুদে এ ঋণ দিলে কর্মকতা ও কর্মচারীরা সবাই ঋণ নিতে হুমড়ি খেয়ে পড়বে। যার একটা ফ্ল্যাট আছে তারা আরো ফ্ল্যাট কেনার জন্য এ ঋণ নিবে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই শুধু তাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।

চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে গৃহঋণ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন। তা গত জুলাই মাসে জারিও হয়। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ঋণের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত জটিলতার কারণে আরো কিছু সময় লাগবে।

সরকারি চাকরিজীবীরা মাত্র ৫ শতাংশ সরল সুদে (সুদের ওপর কোনো সুদ আদায় করা হবে না) সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহ নির্মাণ ঋণ নিতে পারবেন। ৩০ জুলাই ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ এর প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, গৃহ নির্মাণ ঋণ নেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৬ বছর করা হয়েছে। চাকরি স্থায়ী হওয়ার পাঁচ বছর পর থেকে সরকারি চাকরিজীবীরা এই ঋণ পাওয়ার যোগ্য হবেন।

নীতিমালায় সর্বোচ্চ ঋণসীমা ৭৫ লাখ টাকা ও সর্বনিম্ন ঋণ ২০ লাখ টাকা করা হয়েছে। ঋণের বিপরীতে সুদের ওপর সুদ, অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ নেওয়া হবে না। এছাড়া কোনো প্রসেসিং ফি বা আগাম ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কোনো অতিরিক্ত ফি দিতে হবে না। ঋণ পরিশোধের মেয়াদকাল সর্বোচ্চ ২০ বছর।

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ সেপ্টেম্বর ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়