ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

টস ভাগ্য থেকে চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
টস ভাগ্য থেকে চ্যাম্পিয়ন মালদ্বীপ

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ভাগ্যদেবী কী বরটাই না দিল মালদ্বীপকে। যে মালদ্বীপ গ্রুপ পর্বে একটিও জয় পায়নি। দুই ম্যাচ থেকে মাত্র ১ পয়েন্ট সংগ্রহ করে সেমিফাইনালে যেতে পারবে কিনা সেটাও ছিল এক সময় অনিশ্চিত। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সমান পয়েন্ট, সমান গোল গড় ও কার্ড মিলিয়ে ছিল সমানে-সমান। এই সমতা ভাঙতে আয়োজকদের শেষ পর্যন্ত টসের আশ্রয় নিতে হয়। টস নামক ভাগ্য পরীক্ষায় মালদ্বীপ সেমিফাইনালে যাওয়ার টিকিট পায়।

এরপর কী খেলাটাই না খেলল তারা। সেমিফাইনালে সাফের দ্বাদশ আসরের সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দল নেপালকে ৩-০ গোলে গুড়িয়ে দিয়ে ফাইনালে ওঠে। আর ফাইনালে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে সফল দল ভারতকে ২-১ গোলে হারিয়ে সাফের দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে মালদ্বীপ। অথচ গ্রুপ পর্বে ২-০ ব্যবধানে ভারতের কাছে হেরেছিল দ্বীপরাষ্ট্রটি। ফাইনালে মধুর প্রতিশোধ নিল তারা। পাশাপাশি ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতের কাছে ফাইনালে টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে হারের প্রতিশোধও নিল পিটার সেগ্রেটের শিষ্যরা।

গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে মালদ্বীপ। এরপর ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ২-০ ব্যবধানে হেরে যায়। দুই ম্যাচ খেলে মাত্র ১ পয়েন্ট সংগ্রহ করায় মালদ্বীপের পত্রিকাগুলো কোচকে এক হাত নেয়। তাতে বেশ ক্ষুব্ধ হন মালদ্বীপের কোচ। সেমিফাইনাল পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তার ক্ষোভ ঝেরে বলেন আমরাই ফাইনাল উঠব। তার এমন উদ্যত ও অতি আত্মবিশ^াসী বক্তব্যে নেপালের সাংবাদিকরা তো বটেই, বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও মুখ চেপে খুব হেসেছিলেন। পরিকল্পনা করেছিলেন সেমিফাইনালে হেরে গেলে ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ধরবেন। অবশ্য সেগ্রেটের শিষ্যরা তার মুখ রাখেন। বৃষ্টি বিঘিœত ম্যাচে নেপালকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট পায় মালদ্বীপ। ম্যাচ শেষে চওড়া হাসি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন সিগ্রেট। করমর্দন করেন সকল সাংবাদিকদের সঙ্গে।



ফাইনাল ম্যাচের আগে অবশ্য তিনি অতি আত্মবিশ^াসী কথা বলেননি। ১৩৩ কোটি জনসংখ্যার ভারতকে বেশ সমীহ করেন। ভারতের ট্যালেন্টের প্রশংসা করেন। তবে ইঙ্গিত দিয়ে রাখেন সেরাটা দেওয়ারও। তার শিষ্যরা সেরাটা দিয়েছেও বটে। শনিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচের ম্যাচের ১৯ মিনিটেই লিড নেয় মালদ্বীপ। এ সময় মালদ্বীপের ফরোয়ার্ড নাইজ হাসান ডি বক্সের সামনে বল বল বাড়িয়ে দেন ইব্রাহিম হোসেনকে। তিনি ভারতের গোলরক্ষক বিশাল কাইথকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে পাঠান (১-০)। তার গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় মালদ্বীপ।

বিরতির পর আবারো ব্যবধান বাড়ায় মালদ্বীপ। এ সময় দুর্দান্ত এক গোল করেন মালদ্বীপের আলী ফাসির। ডি বক্সের সামনে তাকে বল বাড়িয়ে দেন হামজাত মোহাম্মেদ। বল নিয়ে দ্রুততার সঙ্গে ঢুকে পড়েন ফাসির। তার সামনে ছিল কেবল ভারতের গোলরক্ষক। তার ডান পাশ দিয়ে আলতো টোকায় বল পাঠিয়ে দিয়েই উল্লাসে মেতে ওঠেন ফাসির। জার্সি খুলে বুনো উল্লাস করতে থাকেন। অবশ্য তার আলতো টোকার বল রুখতে গিয়েছিলেন ভারতের নিখিল চন্দ্র শেখর। কিন্তু শেষ রক্ষা করতে পারেননি। তিনি বলের কাছে যাওয়ার আগেই বল গোললাইন অতিক্রম করে।

অবশ্য যোগ করা সময়ের শুরুতে একটি গোল করে ভারত আশা জাগিয়ে তুলেছিল। ম্যাচের ৯০+২ মিনিটে সুমিত পাসি গোল করে ব্যবধান কমান। তাকে গোলে সহায়তা করেন নিখিল। তবে তার গোলটি পরাজয় এড়ানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না।



২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বোতে এই ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে সাফের প্রথম শিরোপা জিতেছিল মালদ্বীপ। সেই ভারতের অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে শনিবার হারিয়ে দ্বিতীয় শিরোপা শোকেসে তুলল তারা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়