ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে দুঃসাহসিক পদক্ষেপ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:১৭, ৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে দুঃসাহসিক পদক্ষেপ

কেএমএ হাসনাত: ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শত সমালোচনার মুখেও বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে বেশ কিছু দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নেন। এ খাতের উন্নয়নে দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিশেষ আইন প্রণয়ন করা হয়।

এর ফলে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এতে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন গতি লাভ করে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ১০ হাজার ৭৩৫ মেগাওয়াট ক্ষমতা অর্জনে ৩৬টি এবং বেসরকারি খাতে মোট ৪ হাজার ৯২১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ৬০টি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। ২০২১ সালকে মাথায় রেখে সাড়ে নয় বছরে মোট ২৪ হাজার ৩৫১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ১৩৫টি বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণের জন্য চুক্তি হয়েছে যার ১০১টি চালু হয়ে জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। ফলে বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার মেগাওয়াটে। বর্তমানে ৫৩  লাখ সোলার হোম সিস্টেম বিদ্যুৎ সুবিধা দিচ্ছে ২ কোটি মানুষকে। অপরদিকে ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল মাত্র পাঁচ হাজার ২৫ মেগাওয়াট। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ লোক বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। বাকি ১০ শতাংশ গ্রামে বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম আগামী বছরের মধ্যেই শতভাগ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চলছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করতে এরই মধ্যে সঞ্চালন লাইন ৮ হাজার থেকে ১১ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করা হয়েছে। আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে সঞ্চালন লাইন ৩২ হাজার কিলোমিটারে উন্নীত করা হবে।

এছাড়া বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমানোর জন্য ডিপিডিসি কর্তৃক প্রায় সাড়ে আট লাখ প্রি-পেমেন্ট মিটার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর আগে প্রায় তিন লাখ মিটার স্থাপন করা হয়েছে এবং আরো প্রায় সাড়ে চার লাখ প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে। ক্রমান্বয়ে এ ধরনের প্রি-পেমেন্ট মিটার স্থাপন করা হলে বকেয়া বিলের হারও কমে আসবে। বিদ্যুতের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত হবে।

দেশব্যাপী সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে আরো সাড়ে পাঁচ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৪৫৬ কোটি টাকা। গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়নের আওতায় এই অর্থ খরচ করা হবে। এ বিষয়ে ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড (ইডকল) কর্তৃক একহাজার পাঁচশত সৌর বিদ্যুৎ চালিত সোলার সেচ পাম্প ও ৩০টি সোলার মিনি গ্রিড বসানো হবে। বর্তমানে ১৪ শতাংশ মানুষ সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে সেচের পাশাপাশি আরোও প্রায় এক কোটি গ্রামবাসী এই বিদ্যুৎ সুবিধা পাবে। তাছাড়া সেচের পাম্প চালানোর জন্য ৯ লাখ টন ডিজেল বছরে খরচ হতো এবং প্রতি লিটারে ২৪-২৬ টাকা হিসেবে ভর্তুকি দেওয়া হতো। ফলে বিগত বছরগুলোতে সরকার এখাতে যে ৬৫ কোটি টাকার মত ভর্তুকি দিয়েছে তা সাশ্রয় হবে সোলার পাম্প বসানো হলে।

**



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসনাত/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়