ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

গড়ে তোলা হচ্ছে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গড়ে তোলা হচ্ছে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল

কেএমএ হাসনাত : বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ বাড়াতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে একই সঙ্গে এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যাপক সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বাংলাদেশে বর্তমানে ৮টি ইপিজেড বা এক্সপোর্ট প্রসেজিং জোন রয়েছে। সমতার ভিত্তিতে অবহেলিত অঞ্চলসহ সব অঞ্চলের টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে যাচ্ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৩৭টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের অনুমোদন দিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে ওই অঞ্চলগুলি থেকে অতিরিক্ত ৪০ বিলিয়ন ডলার আয় করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের মাধ্যমে নতুন নতুন অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালু হবে; যা রপ্তানি আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। রপ্তানি শিল্পগুলোকে একসঙ্গে আনার মাধ্যমে শিল্পের প্রসার লাভ ও বিনিয়োগকারীদের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হবে। দেশি ও বিদেশি কোম্পানিগুলো একসঙ্গে কাজ করলে প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুযোগ থাকে যা দেশীয় শিল্প খাতকে অর্থনৈতিকভাবে প্রসার লাভ করতে সহায়তা করবে। তাছাড়া বিভিন্ন মডেল ও ফ্যাশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে ভিন্নতা আনতেও সহায়ক হবে। সর্বোপরি প্রায় এক কোটি লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রধান অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে চট্টগ্রামের মীরসরাই অন্যতম। মীরসরাইয়ের ৩০ হাজার একর জায়গার মধ্যে এক হাজার ১৫০ একর জমি ইতিমধ্যে দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। মীরসরাই ছাড়াও সরকার কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৪টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনা নিয়েছে। সেই অনুযায়ী এক হাজার ৪৩৮ একর, এক হাজার একর, ৮৩ একর এবং ৬৭৭ একর জমিতে বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি কোম্পানিকে ইতিমধ্যেই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়াও কক্সবাজারে আট হাজার ৭৮৫ একরের বিশেষ জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে। ফেনীতে দুই হাজার ২৫৬ একর এবং নাটোরে তিন হাজার ২২০ একর জায়গায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারাতে ৭৮৩ একর, মীরসরাইয়ে ৫০০ একর, নারাযণগঞ্জের আড়াই হাজারে এক হাজার ১১ একর এবং মীরসরাই, মোংলা ও ভেড়ামারা মিলে তিনটিতে মোট এক হাজার ৬২৪ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকারের অধিকৃত ২৪ হাজার ১৭ একর জমি থেকে এসব জায়গা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে।

এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, জাহাজ শিল্প, এলএনজি টার্মিনাল, বস্ত্র, গাড়ি তৈরিসহ অন্যান্য সেবা খাতে বিনিয়োগ করা হবে। দেশীয় কোম্পানি পিএইচপি মীরসরাইয়ে প্রায় ৫০০ একর জায়গার ওপর ইস্পাত কারখানায় চার বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশ-সিচুয়ান প্রতিষ্ঠান যৌথ সহযোগিতায় মীরসরাইয়ে প্রায় দেড় হাজার একর জায়গার ওপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির জন্য দেড় বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এ ছাড়া, চীন অন্যান্য স্থানে প্রায় পাঁচ বিলিযন ডলার বিনিয়োগ করবে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের আওতায় গাড়ি, কৃষি যন্ত্রপাতি, বস্ত্র, বিদ্যুৎ কেন্ত্র ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ করবে প্রতিষ্ঠানটি। এ পর্যন্ত ১৭ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে এবং আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ক্রমান্বয়ে কার্যকর হবে বলে আশা করছে সরকার। ইতিমধ্যে সরকার ব্যক্তিগত কারখানা তৈরির জন্য পাইলট প্রকল্প হিসেবে সিলেটের মৌলভীবাজারে ৩৫৩ একর, শেরপুর ছয় হাজার ৬১৫ একর, চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে ও আনোয়ারাতে এক হাজার ৩৮৯ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার জন্য প্রস্তুত করেছে যা আগামী ২০২২ সালের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া সম্ভব হবে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসনাত/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়