খালেদার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীসহ তিনজন রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অস্ত্র আইনের মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর প্রাক্তন স্কোয়াড্রন লিডার ওয়াহেদুন নবীসহ তিনজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

শনিবার শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ দিদার হোসাইন আসামিদের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ডে যাওয়া অপর আসামিরা হলেন- আবুল আরাফাত আমির ও আবদুল্লাহ আলী জাবিদ।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার এসআই মতলুবুল আলম আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের সাত দিন করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব জানতে পারে যে, আবুল আরাফাত আমির ও আবদুল্লাহ আলী জাবিদ তাদের ফেসবুক আইডি থেকে বিভ্রান্তিকর ও উস্কানিমূলক তথ্য ফেসবুকে প্রচার করে জনগণকে ধোকা দিয়ে বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীসহ দেশের সকল জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরির চেষ্টা করছেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানাধীন শ্যামলীস্থ রাজ হোটেল ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলে আসামি আবুল আরাফাত আমির ও আবদুল্লাহ আলী জাবিদের অবস্থানের সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। গত ২০ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে অভিযান চালিয়ে হোটেলের চতুর্থ তলার ৪১১ নম্বর রুম থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেহ তল্লাশি চালিয়ে আবুল আরাফাত আমিরের কাছ থেকে তিনটি ও আবদুল্লাহ আলী জাবিদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই আসামি জানান, তাদের সাইবার উপদেষ্টা হলেন ওয়াহেদুন নবী। ইমরান কাজলের সহযোগিতা ও পরামর্শে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের কাছে অসত্য ও গুজব প্রচার করছিলেন। ওই দুই আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তাদের সাইবার উপদেষ্টা ওয়াহেদুন নবী তাদের সঙ্গে দেখা করতে নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসছেন। তিনি ২১ ডিসেম্বর রাত ১২ থেকে ১টার মধ্যে ঢাকায় আসবেন। এরপর আসামি আরাফাত আমির ও জাবিদকে সঙ্গে নিয়ে ২১ ডিসেম্বর রাত ১২টা ৫ মিনিটের দিকে রাজধানীর মিরপুর রোড থেকে ওয়াহেদুন নবীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওয়াহেদুন নবীর দেহ তল্লাশি করে কোমরে লেদার কভারের ভেতর একটি আগ্নেয়াস্ত্র ও তিনটি ম্যাগজিন ও মোট ১৬টি তাজা গুলি পাওয়া যায়। এছাড়া, একটি মোবাইল ফোনও জব্দ করা হয়। অস্ত্রের লাইসেন্স দেখাতে চাইলে ওয়াহেদুন নবী একটি ১২ বোরের শটগানের লাইসেন্স দেখান এবং গাড়িতে শটগান আছে বলে জানান। তবে তিনি পিস্তলের লাইসেন্স দেখাতে ব্যর্থ হন।

ওয়াহেদুন নবী জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তার সহযোগী আরাফাত, জাবিদ ও পলাতক আসামি ইমরান কাজলের সহযোগিতায় তারেক জিয়া সাইবার ফোর্স, জিয়া সাইবার ফোর্স, জিয়া সাইবার ফোরাম, দেশনেত্রী সাইবার ফোরাম, দেশনেত্রী সাইবার ফোর্স, মুক্তাঙ্গণ পেজ, বি-ফোর্স (দ্য আর্মি অব লাইট) পেজের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী উস্কানিমূলক গুজব ফেসবুকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা করছে। ঘটনার মূল রহস্য ও অস্ত্রের উৎস ও আরো অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ একান্ত প্রয়োজন।

র‌্যাব-২ এর ওয়ারেন্ট অফিসার বাদী হয়ে রাজধানীর আদাবর থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

অপরদিকে, সারোয়ার জাহান ও মাসুদ এ চৌধুরী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানি করেন।

শুনানিতে তারা বলেন, আসামিকে যে অস্ত্র নিয়ে জড়ানো হয়েছে তার লাইসেন্স রয়েছে। আসামি দীর্ঘ ২০ বছর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। এ মামলায় রিমান্ডের প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন হলে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা যেতে পারে।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত  প্রত্যেক আসামির দুই দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ডিসেম্বর ২০১৮/মামুন খান/রফিক