ঢাকা     বুধবার   ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৪ ১৪৩১

ইন্দোনেশিয়ায় সুনামিতে ২২২ জনের মৃত্যু

সাইফুল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪৭, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইন্দোনেশিয়ায় সুনামিতে ২২২ জনের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালীর উপকূলীয় অঞ্চলে সুনামির আঘাতে কমপক্ষে ২২২ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন প্রায় এক হাজার।

শনিবার রাতে সুনামির আঘাতের পর অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। কয়েকশ ঘর-বাড়ি এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রোববার ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তর জানিয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হঠাৎ করেই এই সুনামির আঘাতে সেখানকার জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। প্রবল সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে শত শত বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। বিভিন্ন স্থানে অনেক গাছপালা উপড়ে গেছে। স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৯টার দিকে দক্ষিণাঞ্চলীয় সুমাত্রা এবং পশ্চিমাঞ্চলীয় জাভা উপকূলে আঘাত হানে সুনামি।

 



কর্মকর্তারা জানান, ক্রাকাতাও আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাতের পর সাগরের নিচে ভূমিধসের কারণে এই সুনামির সৃষ্টি। এর সঙ্গে পূর্ণিমার প্রভাব যুক্ত হওয়ায় ব্যাপক শক্তি নিয়ে সৈকতে সুনামির ঢেউ আছড়ে পড়েছে।

সুনামির প্রত্যক্ষদর্শী নরওয়ের আলোকচিত্রী ওয়েস্টিন লান্ড অ্যান্ডারসন বিবিসিকে বলেন, সুনামির সময় পশ্চিম জাভার আনিয়ার সৈকতে ছিলেন তিনি। ওয়েস্টিন বলেন, ‘আমি সৈকতে একা ছিলাম। আর পরিবারের সদস্যরা হোটেলে ঘুমাচ্ছিলেন।  আমি ক্রাকাতোয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ছবি তোলার চেষ্টা করছিলাম। এর আগের দিন সন্ধ্যায় ভারী অগ্ন্যুৎপাত হচ্ছিল।’

তিনি জানান, ঘটনার সময় বড় ঢেউয়ের আঘাতে অগ্ন্যুৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। চারপাশ অন্ধকার হয়ে যায়। হঠাৎ তিনি দেখতে পান, বড় ঢেউ তেড়ে আসছে। সাগর থেকে বিশাল এক ঢেউ সৈকতে উঠে আসতে দেখে উল্টো ঘুরে দৌড়াতে শুরু করেন অ্যান্ডারসন। সুনামির দুটি ঢেউ পরপর উপকূলে আঘাত হানে। এর মধ্যে প্রথমটি তেমন জোরালো না থাকায় তিনি দৌড়ে হোটেলে ফিরতে সক্ষম হন।

 

অ্যান্ডারসন হোটেলে ফিরে স্ত্রী আর সন্তানকে জাগানোর পরপরই দ্বিতীয় ঢেউ আসার শব্দ পান। জানালা দিয়ে তিনি দেখতে পান, ওই ঢেউ ছিল প্রথমটির তুলনায় বেশ বড়। সেই বিপুল জলরাশি যখন হোটেল পেরিয়ে যাচ্ছিল, রাস্তায় থাকা গাড়িগুলোকে ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই পরিস্থিতির মধ্যে অ্যান্ডারসন এবং হোটেলের সবাই আতঙ্কে কাছাকাছি একটি উঁচু জায়গায় বনের মধ্যে সরে যান। তাঁরা সেখানে পাহাড়ের ওপরে অবস্থান করছেন।

সুনামির পর পানডেগলাং, দক্ষিণ ল্যামপাং ও সেরাং অঞ্চলে প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে। তারা জানায়, পূর্ণিমা থাকায় এমনিতে জোয়ার ছিল। ফলে সুনামিতে ঢেউয়ের শক্তি ছিল বেশি।

এর আগে গত সেপ্টেম্বরে দেশটির সুলাওয়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে দুই সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। আর ক্রাকাতাওয়ে ১৮৮৩ সালে ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাতে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। ওই সময় ১৩৫ ফুট উঁচু ঢেউ নিয়ে সৈকতে আঘাত হানে সুনামি। সে সময় এতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সাগরে ভেসে যায়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ডিসেম্বর ২০১৮/সাইফুল/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়