ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বরাদ্দবিহীন প্রকল্প না রাখার নির্দেশনা

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:১০, ২৭ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বরাদ্দবিহীন প্রকল্প না রাখার নির্দেশনা

কেএমএ হাসনাত : সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) প্রকল্প সংখ্যা সীমিত রাখার পাশাপাশি বরাদ্দবিহীন কোনো প্রকল্প না রাখতে মন্ত্রণালয়গুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। নির্দেশনায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সরকারের কৌশলগত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোর আলোকে প্রয়োজনে কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দিতে বলা হয়েছে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সংশোধিত বাজেট প্রাক্কলনে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগের ব্যয় চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে প্রদর্শিত মোট ব্যয়সীমার মধ্যে রাখতে বলা হয়েছে। আর উন্নয়ন ব্যয়ের অব্যয়িত কোনো অর্থ কোনোভাবেই পরিচালন বাজেটে স্থানান্তর না করার জন্য এক প্রতিবেদনে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোর আওতায় চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রাক্কলন ও আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রক্ষেপণে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর জন্য ২৫টি নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এসব নির্দেশনায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এদের অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থাগুলোকে চলতি অর্থবছরের বিদ্যমান বাজেট কাঠামোর সংশোধিত/হালনাগাদ তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও এদের অধীনস্থ দপ্তর/সংস্থাগুলোর রাজস্ব ও মূলধনপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা, প্রাথমিক সম্ভাব্য ব্যয়সীমা ও উন্নয়ন ব্যয়ের বিস্তারিত প্রাথমিক প্রাক্কলন এবং আগামী অর্থবছরের প্রক্ষেপণ জানতে চাওয়া হয়েছে।

অর্থ বিভাগ থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সংশোধিত বাজেটে পরিচালন ব্যয় প্রাক্কলনের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে পূর্ববর্তী দুই অর্থবছরের (২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮) প্রথম ছয় মাসের ও চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের প্রকৃত ব্যয় এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে ব্যয় নির্ধারণে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের প্রকৃত ব্যয় বিবেচনায় নিতে হবে। তবে আগামী অর্থবছরের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে বরাদ্দ চলতি অর্থবছরের তুলনায় সাড়ে ৫ শতাংশ বেশি প্রস্তাব করা যাবে। পরিচালন ব্যয়ের ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধি ছাড়া সরবরাহ ও সেবা খাতে অন্তর্ভুক্ত কোনো আইটেমের বরাদ্দ বাড়ানো যাবে না এবং মূল বাজেটে সংস্থান নেই, এমন কোনো সম্পদ সংগ্রহের জন্য সংশোধিত বাজেটে অর্থ বরাদ্দ রাখা যাবে না। এছাড়া, চলতি অর্থবছরে অপ্রত্যাশিত ব্যয় ব্যবস্থাপনা খাত থেকে কোনো অর্থ বরাদ্দ করা হয়ে থাকলে সংশোধিত বাজেটে এটি উল্লেখ করতে হবে।

চলতি অর্থবছরে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোর অনুকূলে মোট উন্নয়ন বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। উন্নয়ন ব্যয়ের ক্ষেত্রে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্প সংখ্যা সীমিত রাখা এবং বরাদ্দবিহীন কোনো প্রকল্প না রাখার নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, অননুমোদিত কোনো স্কিমের জন্য অর্থ বরাদ্দের কোনো প্রস্তাব করা যাবে না। তবে মোট অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত স্কিমের জন্য বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দিতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেটে চলমান স্কিম এবং ইতোমধ্যে অনুমোদিত নতুন স্কিমের জন্য অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব সংশোধিত প্রাক্কলনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এডিপি বহির্ভূত যেসব প্রকল্প ইতোমধ্যে অনুমোদিত হয়েছে এবং যেগুলোর অনুকূলে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

সংশোধিত এডিপিতে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক ও মানবসম্পদ উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত খাতগুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া, প্রকল্প বাছাইয়ে বৈদেশিক সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা-উত্তর পুনর্বাসন সম্পর্কিত প্রকল্প এবং চলতি অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। একই মন্ত্রণালয়/বিভাগের আওতাধীন একই উদ্দেশ্যে বা একই প্রকৃতির ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রকল্পগুলো পৃথকভাবে না দেখিয়ে গুচ্ছ প্রস্তাব আকারে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে।

ধীর গতিসম্পন্ন প্রকল্প থেকে বরাদ্দ কর্তন করে দ্রুত বাস্তবায়ন গতিসম্পন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে প্রয়োজনানুগ বরাদ্দ প্রদান করতে হবে। বরাদ্দ প্রদানের ক্ষেত্রে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, বন্যা-উত্তর পুনর্বাসন এবং ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত  প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছরের বাজেট উপাত্তে পরিচালন ও উন্নয়নসহ মন্ত্রণালয়/ বিভাগগুলো থেকে মোট রাজস্ব ও মূলধনপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ কোটি ৪২ লাখ ৬৪২ কোটি টাকা। কিন্তু গত নভেম্বরের শেষ দিকে অনুষ্ঠিত বাজেট মনিটরিং কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলো থেকে মোট রাজস্ব ও মূলধনপ্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে ৫ কোটি ৭০ লাখ ১৮৮ কোটি টাকা প্রাক্কলন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। সংশোধিত বাজেট প্রাক্কলনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাজস্ব ও মূলধন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়/বিভাগগুলোকে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রাজস্ব আদায়ের ধারা বিবেচনায় নিয়ে সংশোধিত প্রাক্কলন তৈরি করতে বলা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জানুয়ারি ২০১৯/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়