ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ইরানের দুঃখ ভিএআর

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৯:৫৫, ২০ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইরানের দুঃখ ভিএআর

ক্রীড়া ডেস্ক: প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে ব্যবহার করা হচ্ছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)।

উন্নত এ প্রযুক্তি মাঠের রেফারিকে সহায়তা দিচ্ছে বিশেষ ক্ষেত্রে, গোল হলো কি না, পেনাল্টি কিক দেবার মতো কোন ফাউল হয়েছে কি না, সরাসরি লাল কার্ড দেবার কারণ ঘটেছে কি না অথবা একজনের ফাউলের কারণে আরেকজন শাস্তি পাচ্ছেন কি না। বলার অপেক্ষা রাখে না প্রযুক্তির দারুণ ব্যবহার হচ্ছে বিশ্বকাপে। কিন্তু এ প্রযুক্তিই কাউকে কাঁদাচ্ছে, কাউকে হাসাচ্ছে।
 


গত শনিবার এ প্রযুক্তির কল্যাণে পেনাল্টি আদায় করে নেয় ফ্রান্স। ২-১ ব্যবধানে হারায় অস্ট্রেলিয়াকে। আর বুধবার রাতে এ প্রযুক্তি কাঁদায় ইরানকে। প্রথমবারের মতো ভিএআর প্রযুক্তি বাতিল করল গোল। তাও আবার সমতাসূচক গোল।

‘বি’ গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয় স্পেন ও ইরান। কস্তার ৫৪ মিনিটের গোলে জয় পায় স্পেন। প্রথমে গোল হজমের পর ৬২ মিনিটে সমতায় ফেরে ইরান! কিন্তু স্পেনের খেলোয়াড়দের আপত্তিতে রেফারি ভিএআর প্রযুক্তির সাহায্য চান। তাতেই কপাল পোড়ে ইরানের।
 


তেরেমির ফ্রি কিকে ডি বক্সের ভেতরে জটলার মধ্যে ডান পায়ে শট নিয়ে স্পেনের জালে বল পাঠান এজাতোলাহির। উল্লাসে মেতে ওঠেন ইরানের খেলোয়াড়রা। ডাগ আউট থেকে জড়ো হন অতিরিক্ত খেলোয়াড়, কর্মকর্তরা। কিন্তু সবাইকে হতাশ করে দিয়ে রেফারি অফ সাইডের জন্য গোল বাতিল করেন। ম্যাচটা সেখানেই হেরে বসে ইরান!

না, সেখানেই ম্যাচ হারেনি তারা। ৯৪ মিনিট পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যায় তাঁরা। গোল করতে পারেননি। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্য খেলায় ছাড় দেয়নি। পুরো ম্যাচে মাত্র ২২ শতাংশ বল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিল ইরান। তাতেই স্পেনের ডিফেন্ডারদের নাকানিচুবানি খাইয়েছে। আর ৭৮ শতাংশ বল দখলে রেখেও ইরানের রক্ষণ দুর্গ মাত্র একবার ভাঙতে পারে কস্তা, ইনিয়েস্তা, রামোসরা।
 


কাজান অ্যারেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই রক্ষণাত্মক ফুটবল উপহার দেয় ইরান। ডি বক্সের আশে পাশেই থাকেন তাদের প্রায় সব ফুটবলার। আক্রমণেও খুব একটা যাননি। বলার অপেক্ষা রাখে না, গোল হজম না করার প্রতিজ্ঞা নিয়েই নেমেছিলেন তারা। তাইতো প্রথম ৪৫ মিনিটের লড়াইয়ে স্পেন ৮১ শতাংশ বল দখলে রেখে মাত্র একটি শট অন টার্গেট করে। সেটাও ফেরত আসে।

বিরতির পর নিজেদের ভুলে গোল হজম করে ইরান। পরিকল্পনা পাল্টে রক্ষণভাগ হাল্কা করে ইরান।বিপদ ডেকে আনে সেখানেই। ৫৪ মিনিটে ইনিয়েস্তার বাড়ানো পাসে বল নিজের নিয়ন্ত্রণে নেন কস্তা। ডি বক্সের ভেতরে তার শট ঠেকিয়ে দেন মজিদ হোসেইনি। কিন্তু মজিদের পায়ে বল লেগে আবার লাগে কস্তার পায়ে। সেখান থেকে সোজা জালে। ধারাভাষ্যকাররা গোলটিকে বলছেন,‘আত্মঘাতী’!
 


গোল হজমের পর সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে খেলে ইরান। কিন্তু ভাগ্যকে পাশে পায়নি তারা। রেফারি শেষ বাঁশি বাজালে মাঠেই শুয়ে পড়েন অনেক খেলোয়াড়। মরক্কোর বিপক্ষে ৯৫ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে ২০ বছর পর বিশ্বকাপে জয় পেয়েছিল ইরান। কিন্তু পরের ম্যাচেই ভাগ্যের কাছে হারল তারা। দক্ষিণ কোরিয়ার পর এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে বিশ্বকাপে টানা দুই জয়ের কীর্তি গড়ার অপেক্ষায় ছিল ইরান। কিন্তু কস্তার গোলে সেই স্বাদ পাওয়া হলো না তাদের।

ইরানের শেষ ম্যাচ পর্তুগালের বিপক্ষে আগামী সোমবার। স্পেন খেলবে মরক্কোর বিপক্ষে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ জুন ২০১৮/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়