ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ এখন সময়ের চাহিদা

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৮, ২৪ জুন ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ এখন সময়ের চাহিদা

আবু বকর ইয়ামিন : দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন খাতের বিকাশে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বেশকিছু ইতিবাচক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এর ফলে দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি গ্রাহকদের জন্য ন্যায্যমূল্যে প্রযুক্তিপণ্য পাওয়া নিশ্চিত হবে। তবে এ খাতে আরো বেশি বিনিয়োগের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তারা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পের জন্য উপযুক্ত নীতি গ্রহণের পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন পরিবেশ নিশ্চিত করাও প্রয়োজন। এ খাতে আরো বেশি কারিগরি সহায়তা ও বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি অন্য উদ্যোক্তাদেরও এ খাতের বিনিয়োগে এগিয়ে আসা উচিত। প্রযুক্তি খাত, বিশেষ করে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রির বিকাশ এখন সময়ের চাহিদা।

প্রযুক্তিবিদদের মতে, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে তা স্থানীয় পর্যায়ে মোবাইল ফোনের মাদারবোর্ড, ডিসপ্লে, হাউজিং অ্যান্ড কেসিং, ব্যাটারি, চার্জার, এয়ারফোনসহ সব প্রকার অ্যাক্সেসরিজ উৎপাদন শিল্পের জন্য সহায়ক হবে। এর ফলে এ খাতে দেশীয় বিনিয়োগ বাড়বে, বিদেশনির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

গত ৭ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার বাজেট বক্তৃতায় দেশীয় মোবাইল ফোন উৎপাদন কার্যক্রমকে উৎসাহিত করতে বেশকিছু প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এর মধ্যে মোবাইল ফোন উৎপাদনের ওপর সারচার্জ অব্যাহতি দিয়ে ফোনসেট আমদানিতে ২ শতাংশ সারচার্জ আরোপ, ব্যাটারি ও চার্জার আমদানিতে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং দেশে মোবাইল ফোনসেট উৎপাদন পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি সুবিধা দিয়ে একটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারির কথা বলা হয়েছে।

অর্থমন্ত্রীর প্রস্তাবিত বাজেটকে স্বাগত জানিয়েছেন দেশীয় মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পের উদ্যেক্তারা। তারা প্রস্তাবিত বাজেট দেশীয় প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্পের জন্য সহায়ক বলে বিবেচনা করছেন। তাদের মতে, দেরিতে হলেও সরকার এ বিষয়ে উপযুক্ত নীতি গ্রহণ করেছে। প্রযুক্তি খাতে অগ্রাধিকার এখন সময়ের দাবি। এর ফলে দেশে হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার শিল্পের বিকাশ ঘটবে।

পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট দেশে প্রকৃত মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্প বিকাশের জন্য সহায়ক ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। প্রস্তাবনার মূল লক্ষ্য হচ্ছে- দেশে মোবাইল ফোন সংযোজন শিল্প নয়, বরং ভ্যালু অ্যাডিং ইন্ডাস্ট্রি অর্থাৎ প্রকৃত মোবাইল ফোন উৎপাদন শিল্পের বিকাশ ঘটানো। যাতে শুধু পার্টস সংযোজন করা হয় এমন শিল্পের পরিবর্তে লোকাল কম্পোনেন্ট উৎপাদন বাড়বে এমন ধরনের দেশীয় হ্যান্ডসেট শিল্প গড়ে উঠার দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, যেসব উদ্যোক্তা ইতোমধ্যে দেশে মোবাইল ফোন সংযোজন শিল্পে বিনিয়োগ করেছেন, তৈরি হ্যান্ডসেট আমদানির ওপর শুল্ক আরো বাড়ানোর মাধ্যমে সেসব উদ্যোক্তার স্বল্প মেয়াদে প্রোটেকশন দিতে পারে সরকার। তবে তা যেন দীর্ঘমেয়াদি না হয়। এতে সংযোজন শিল্পের উদ্যোক্তারাও তাদের বিনিয়োগকে লোকাল কম্পোনেন্ট উৎপাদনের দিকে নিয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, এ খাতে আরো বেশি কারিগরি সহায়তা ও বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে। পাশাপাশি অন্য উদ্যোক্তাদেরও এ খাতের বিনিয়োগে এগিয়ে আসা উচিত। কারণ, প্রযুক্তির বিকাশ এখন সময়ের চাহিদা।

ড. আহসান এইচ মনসুর আরো বলেন, ওয়ালটন এ খাতে অভুতপূর্ব সফলতা দেখিয়েছে। এখন ওয়ালটনের ক্ষেত্রে প্রয়োজন হবে মূল্য সংযোজন, তা যেন আস্তে আস্তে আরো বাড়ে। এর মূল কারণ হচ্ছে- দীর্ঘ সময়ের বাস্তবতায় মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিটা দেশীয় এবং স্বনির্ভর পজিশনে দাঁড়াতে পারে। শুধু প্রোটেকটেড সিস্টেমের ওপর ডিপেন্ড না করে এটা যেন কম্পিটেটিভ হয় এবং নিজের পায়ে শক্ত করে দাঁড়াতে পারে।

তিনি বলেন, বড় একটি বিষয় হচ্ছে- এ উদ্যোগের কারণে প্রযুক্তির ব্যবহার ও প্রযুক্তিভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রি বাড়বে। বিশেষ করে আইটি ক্ষেত্রে, মোবাইল টেলিকম, অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য, অটো পার্টসসহ বিভিন্ন ধরনের ইন্ডাস্ট্রি বাড়বে। আর একটি দেশের বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যেতে এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ জুন ২০১৮/ইয়ামিন/হাসান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়