ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

রাসায়নিক অস্ত্র শরীরে যা ঘটায়

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৭, ২৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাসায়নিক অস্ত্র শরীরে যা ঘটায়

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : স্যারিন এবং ভিএক্সের মতো রাসায়নিক অস্ত্রগুলো পুরুষ, নারী ও শিশুদেরকে মারাত্মক দক্ষতার সঙ্গে হত্যা করার জন্য পরিচিত।

যদিও অস্ত্রগুলোর নাম আলাদা কিন্তু উভয়ই মানুষের তৈরি রাসায়নিক পদার্থের একটি বড় গ্রুপের সদস্য, যা নার্ভ এজেন্ট হিসেবে পরিচিত এবং এগুলোর কাজ একই অর্থাৎ সবগুলোই শরীরের একই সিস্টেমকে টার্গেট করে।

রাসায়নিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার জন্য সংস্থার (অর্গানাইজেশন ফর দ্য প্রোহিবিশন অব কেমিক্যাল ওয়েপনস) তথ্যানুসারে, সবচেয়ে কমন পাঁচটি নার্ভ এজেন্ট (রাসায়নিক অস্ত্রের জন্য ব্যবহৃত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ) হচ্ছে- ট্যাবুন, স্যারিন, সোমান, জিএফ এবং ভিএক্স। বিশুদ্ধ অবস্থায় এগুলোর প্রতিটিই বর্ণহীন এবং বেশিরভাগই গন্ধহীন তরল।

যেকোনো নার্ভ এজেন্ট একজন মানুষের ত্বক, শ্বাস, খাবার বা এই তিনভাবেই প্রবেশ করতে পারে- রাসায়নিক পদার্থটির ওপর নির্ভর করে এবং কিভাবে তার ব্যবহার করা হয়েছে সেটার ওপর নির্ভর করে।

উদাহরণস্বরুপ, ভিএক্স রাসায়নিক পদার্থটি পুরু তেলের মতো কিন্তু পানিতে এটিকে মেশানো যায় (এর মাত্র এক ফোঁটা কিম জং উন এর ভাইকে হত্যাকান্ডের জন্য যথেষ্ট ছিল)। অন্যদিকে স্যারিন (৪ এপ্রিল সিরিয়ায় ইদ্রিল প্রদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল) দ্রুত বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে।

এসব তরল রাসায়নিক পদার্থ দ্বারা তৈরি বিশেষ বোমাগুলো দ্রুত বাতাসে মিশে যায়।

নিচে দুইটি গ্রাফিক্সে তুলে ধরা হল, মানব শরীরে নার্ভ এজেন্ট কি ধরনের প্রভাব ফেলে এবং সেগুলো কিভাবে তাদের কাজ করে।




 

মাঝারি মাত্রায় প্রভাব

* মস্তিষ্কে বিভ্রান্তি, তদ্রাচ্ছন্নভাব এবং মাথাব্যথা।

* চোখ দিয়ে পানি ঝরা, ঝাপসা দেখা।

* মুখে লালা ঝরা, কফ জমা এবং নাকের পানি ঝরা।

* হার্টে অস্বাভাবিক রক্তচাপ ও হার্ট রেট বৃদ্ধি এবং দুর্বলতা।

* ফুসফুসের ক্ষেত্রে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা এবং বুকের চাপ বৃদ্ধি।

* হজমের ক্ষেত্রে বমি বমি ভাব, পেট ব্যথা, প্রস্রাব বৃদ্ধি, ডায়রিয়া।

* ত্বকের ক্ষেত্রে অত্যাধিক ঘাম, পেশীতে টান।

প্রাণঘাতী প্রভাব

* খিঁচুনি : নার্ভ এজেন্টরা শরীরের পেশীর সঙ্গে সংযুক্ত স্নায়ু অর্থাৎ নার্ভ সিস্টেমেকে মূলত লক্ষ্যবস্তু বানায়।  

* চেতনা হ্রাস : শ্বাস নিয়ন্ত্রণকারী পেশীগুলি প্রভাবিত হতে পারে, যা মস্তিষ্ককে অক্সিজেনের অভাব তৈরি করে।

* শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ : যদি কেউ একটি চালের সমতুল্য ভিএক্স এর শ্বাস নেন, তাহলে তা তার মৃত্যু ঘটানোর জন্য যথেষ্ট।

* পক্ষাঘাত : পেশী শিথিলে সাহায্যকারী এনজাইমের ওপর প্রভাব বিস্তার করে শরীর নিশ্চল করে দিতে পারে।

* মৃত্যু : প্রাণঘাতী ব্যবহারে সাধারণত ২০-৩০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু ঘটায়। 

নার্ভ এজেন্ট শরীরে কোলিনার্জিক সিস্টেমে কি উপায়ে আক্রমণ করছে তার ওপর নির্ভর করে এসব এবং অন্যান্য উপসর্গ দেখা দেয়।


বিশেষ করে এই বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থগুলো স্নুায়ু কোষ এবং পেশী কোষগুলোর মধ্যেবর্তী স্থানগুলোয় স্থানান্তরিত হয় এমন একটি এনজাইমকে টার্গেট করে থাকে।

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ এপ্রিল ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়