ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

নাসার আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাই ...

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ১৫ জুলাই ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নাসার আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাই ...

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা গত পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে বলে এসেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাবে। যা মানবজাতির জন্য পৃথিবীর বাইরের বসবাসের ক্ষেত্রে মহান এক উদ্যোগ হবে।

সংস্থাটি এজন্য নতুন রকেট লঞ্চ সিস্টেম ও পরীক্ষামূলক ভাবে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর সবচেয়ে উন্নত মহাকাশযান ওরিয়ন তৈরি করেছে, যা মানুষ নিয়ে মঙ্গলে পৌঁছাবে।

তবে নাসা তাদের স্বপ্নের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হতে পারে, এমন সতর্কতাও প্রচলিত ছিল। যেমন একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে সতর্ক করা হয়েছিল যে, ‘নাসা মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাতে খুব বেশি কাজ করেছে এবং তহবিল খুবই কম, যা লক্ষ্য পূরণে ভয়ানক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে।’

অবশেষে সেই আশঙ্কাই সত্যি হল! নাসা স্বীকার করে নিয়েছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর মতো পর্যাপ্ত অর্থ তাদের হাতে নেই।

বুধবার আমেরিকান ইনস্টিটিউট ফর অ্যারোনেটিক্স অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনেটিক্সের এক সভায় নাসার হিউম্যান স্পেসফ্লাইটের প্রধান উইলিয়াম গর্স্টেনমাইয়ার জানিয়েছেন, তিনি মিশনের তারিখ নির্ধারণ করতে পারেননি।

এ প্রসঙ্গে আর্স টেকনিকাকে তিনি বলেন, ‘মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর তারিখ নির্ধারণ করাটা সম্ভব হয়ে উঠছে না। এর প্রধান কারণ হলো, বাজেট সীমাবদ্ধতা। এই মিশনের যে বাজেট লেভেল তা মাত্র ২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে মঙ্গল গ্রহে মানুষ নিয়ে প্রবেশ এবং অবতরণ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।’

এটা সাধারণ একটা বিবৃতি মনে হতে পারে। কিন্তু নাসা বিগত বছরগুলোতে ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠানোর যে প্রচারণা চালিয়েছে, এরপর জনসম্মুখে ব্যর্থতা কবুল করাটা খুবই বড় একটা ঘটনা। বাস্তবতা হলো, নতুন রকেট লঞ্চ সিস্টেম এবং ওরিয়ন মহাকাশযান নির্মাণে নাসার এত অর্থ ব্যয় হয়েছে যে, মঙ্গল গ্রহে অবতরণ বা সেখানে চলাচলের মতো কোনো যান ডিজাইন করাটা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

নাসার এই কর্মকর্তা চাঁদে ফিরে যাওয়া এবং মঙ্গলের মতো সেখানেও তাদের গবেষণার রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা চাঁদে পানির খোঁজ পাই, তাহলে সেখানে আরো বিস্তৃত গবেষণা করতে চাইবো। আমাদের সে সক্ষমতা রয়েছে। আমরা যদি কেবলমাত্র মঙ্গলের ওপর আমাদের দৃষ্টি রাখি, তারপরও চাঁদকে সঙ্গে রাখতে পারি।’

আর্স টেকনিকা তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, বাস্তবতা হচ্ছে অবস্থার পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত সম্ভবত নাসা মঙ্গল এবং চাঁদ কোথাও যেতে পারবে না। যদি স্পেস লঞ্চ সিস্টেমের ওপর ভরসা করা হয় তাহলে চাঁদে বড় ঘাটি নির্মাণের জন্য সংস্থাটির তহবিল নেই। যা বছরে সাধারণত একবারই উড়ে যায় ১ বিলিয়ন ডলার খরচ করে। মঙ্গল মিশন স্পষ্টতই চাঁদের তুলনায় আরো অনেক বড় ও ব্যয়বহুল মিশন, প্রচলিত পদ্ধতিতে সেখানে প্রতি মিশনে পাঁচটি বা তার বেশি রকেট লঞ্চের প্রয়োজন হবে।

কম ব্যয়বহুল রাস্তাও অবশ্য নাসার সামনে খোলা রয়েছে। যেমন বেসরকারি রকেট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স, ব্লু অরিজিন এবং ইউনাইটেড লঞ্চ অ্যালায়েন্স দ্বারা নির্মিত আংশিকভাবে বা সম্পূর্ণভাবে পুনঃব্যবহারযোগ্য সিস্টেম ও রকেটের ওপর নির্ভরশীল হওয়া।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ জুলাই ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়