ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

বাড়ি ফিরছেন মণিরামপুরের পানিবন্দি মানুষ

বিএম ফারুক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বাড়ি ফিরছেন মণিরামপুরের পানিবন্দি মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর : যশোরের মণিরামপুর উপজেলার শ্যামকুড় ও চালুয়াহাটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে রাস্তার টং ঘরে আশ্রিতরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

জলাবদ্ধতার কারণে বসত ঘর ডুবে যাওয়ায় এদেরকে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হয়েছিল।ঘর-বাড়ি থেকে পানি সরে পড়ায় ঈদের পর থেকে তারা বসত ভিটায় ফিরতে শুরু করেছেন। আবার অনেকের বাড়িতে পানি থাকলেও দুর্ঘটনার ভয়ে তারা রাস্তার টংঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন।

বসত বাড়িতে পানি বেড়ে যাওয়ায় এই দুই ইউনিয়নের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষকে গত দেড় মাস ধরে উঁচু সড়কের দু’ধারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিতে হয়েছিল।

অনেকের বাড়ি এখনো পানি পুরোপুরি না নেমে গেলেও বেপরোয়া যান চলাচল, নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা টং ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই আবার এই বন্যা পরিস্থিতিতে বসতঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও হারিয়েছেন। তাদের বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও  তারা নিজ নিজ বাড়িতে গিয়ে পলিথিনের চালায় ঝুপড়ি বেঁধে সেখানে থাকছেন।

যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ফকিররাস্তা সড়কের রাস্তার পাশের টং ঘর ভেঙে নিজের ভিটায় ফিরতে থাকা হাসাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, ‘এখানে টং ঘরে মা একা থাকত। আমি বাইরে থাকতাম। বাড়ির উঠানে হালকা পানি আছে কিন্তু ঘর থেকে পানি নেমে পড়ায় বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি মাকে। তাছাড়া রাস্তায় থাকা নিরাপদ নয়।’

একই গ্রামের সালমা বেগম বলেন, ‘নাতিপুতিসহ ছয়জন গত দেড়মাস ধরে রাস্তায় ছিলাম। ৫-৬ দিন হবে বাড়ির পানি সরে গেছে। উঠোনে কাদা আছে, তাও ফিরতিছি। আর কয়দিন রাস্তায় থাহা যায়।’

শ্যামকুড় ইউনিয়নের চিনাটোলা ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হালিম জানান, পানিবন্দি হওয়ায় তার ওয়ার্ডের ৯৪টি পরিবার বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছিল। ইতিমধ্যে ১৫-২০ টি পরিবার বাড়ি ফিরেছে।

চালুয়াহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ইউনিয়নে ৮২ টি পরিবার রাস্তায় উঠেছিল। পানি সরে যাওয়ায় দুই-একটি পরিবার বাদে বাকিরা বাড়ি ফিরেছে।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইয়ারুল হক বলেন, ‘কয়েকদিন বেশ খরা হওয়ায় জলাবদ্ধ সব এলাকা থেকে পানি নেমে যাচ্ছে। অনেক এলাকা থেকে পানি সরেও পড়েছে। ফলে রাস্তাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেওয়া লোকজন বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আর কাউকে রাস্তায় থাকতে হবে না।’

প্রসঙ্গত, গত ২২ ও ২৩ জুলাই প্রবল বর্ষণে মণিরামপুরের ১৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে ১২ টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। পানি উঠে মানুষের বসতঘরেও। ফলে শ্যামকুড় ও চালুয়াহাটি ইউনিয়ের প্রায় সাড়ে আটশ’ পরিবারের ঠাঁই হয় রাস্তায়।

 

 

রাইজিংবিডি/যশোর/১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭/বি এম ফারুক/রুহুল/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়