ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পুরুষ সাইক্লিস্টদের জন্য সুখবর

মনিরুল হক ফিরোজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১৬ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুরুষ সাইক্লিস্টদের জন্য সুখবর

প্রতীকী ছবি

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক : পুরুষরা নিশ্চিতে নিয়মিত সাইক্লিং করতে পারেন। কারণ একটি নতুন গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, সাইক্লিং পুরুষের যৌনজীবনে কোনো সমস্যা তৈরি করে না। নিয়মিত সাইকেল চালালে পুরুষের যৌনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

নিয়মিত সাইক্লিং করার ফলে দীর্ঘ সময় শক্ত সিটে বসে থাকায় যৌন অক্ষমতা এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ হতে পারে বলে এর আগে উদ্বেগ প্রকাশ করে সতর্ক করা হলেও, সানফ্রান্সিসকো এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফলে বলা হয়েছে, সাইকেল চালানো পুরুষদের প্রজনন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। 

গবেষণায় দেখানো হয়েছে যে, সাইকেল চালকদের যৌন এবং মূত্র স্বাস্থ্য সাতারু এবং দৌড়বিদদের মতো  একই, এমনকি যারা নিয়মিত দীর্ঘ সময় সাইকেল চালান, তাদের যৌন স্বাস্থ্য আরো বেশি ভালো।

গবেষকদের মতে, সাইকেল চালানো থেকে যৌন সমস্যার কোনো ঝুঁকি নেই এবং তাদের প্রত্যাশা, সাইকেল চালানোর ফলে যে কার্ডিওভাসকুলার সুবিধা পাওয়া যায়, তাতে ফিরে আসতে সাইক্লিস্টদের উৎসাহ বাড়াবে এই গবেষণার ফলাফল।

সানফ্রান্সিসকো এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ৪০০০ হাজার সাইক্লিস্ট, সাঁতারু এবং দৌড়বিদদের ওপর বড় ধরনের এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত প্রশ্নাবলী জিজ্ঞাসা এবং আন্তর্জাতিক প্রোস্টেট নির্ণায়ক স্কোর বুঝতে তাদের ব্যায়াম রুটিন, মূত্রনালীর সংক্রমণ, যৌন অক্ষমতা, সাইকেলের সিট থেকে ‍সৃষ্টি ঘা বা সাইকেল চালানো থেকে ‍সৃষ্টি অস্বস্তি ইতিহাস পর্যালোচনা করেন গবেষকরা। এই জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ২৭৭৪ জন সাইক্লিস্ট, ৫৩৯ জন সাঁতারু এবং ৭৮৯ জন দৌড়বিদ ছিলেন।

সাইক্লিস্টরা দুইটি গ্রুপে বিভক্ত ছিল- একটি হচ্ছে হাই-ইনটেনসিটি সাইক্লিস্ট অর্থাৎ যারা ২ বছরের বেশি সময় ধরে সাইকেল চালান, প্রতি সপ্তাহে ৩ দিনের বেশি সাইকেল চালান এবং গড়ে প্রতিদিন ২৫ মাইল সাইকেল চালান। আরেকটি গ্রুপ হচ্ছ, লো-ইনটেনসিটি সাইক্লিস্ট অর্থাৎ যারা কম সাইকেল চালান। সাতারু এবং দৌঁড়বিদরাও লো-ইনটেনসিটি গ্রুপে ছিলেন।

অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তাদের সাইকেলের ধরন, সিটের ধরন, সিটের অ্যাঙ্গেল, হ্যান্ডেলবারের উচ্চতা এবং তারা কতটা সময় ধরে সাইকেল চালিয়ে থাকেন। এছাড়াও গবেষকরা অনুসন্ধান করেছেন সাইকেল চালানোর সময় কি ধরনের গিয়ার ব্যবহার করা হয়, এমনকি প্যাডযুক্ত হাফপ্যান্ট বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ইউরোলজি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, সাইক্লিস্টদের যৌন এবং মূত্র স্বাস্থ্য সাঁতারু এবং দৌঁড়বিদদের সঙ্গে তুলনীয়। চমকপ্রদ ব্যাপার হচ্ছে, নিয়মিত যারা বেশি সাইকেল চালান, তাদের সামগ্রিক যৌন স্বাস্থ্যে ভালো দেখা গেছে।

যা হোক, সাইকেলের হ্যান্ডেলবার সিটের তুলনায় নিচে থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই অসারতা এবং ব্যথার অভিজ্ঞতা সাইক্লিস্টদের হতে পারে।

গবেষণার প্রধান লেখক ডা. বেঞ্জামিন ব্রেয়ার বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি গবেষণার ফলাফলগুলো সাইকেলিস্টদের উৎসাহ বাড়াবে। কার্ডিওভাসুকলার স্বাস্থ্যের জন্য সাইক্লিং অসাধারণ এবং জয়েন্টগুলোতে কম প্রভাব ফেলে। আমরা বিশ্বাস করি, সাইকেল চালানোর ফলে স্বাস্থ্যগত যে উপকারিতা তা মানুষজন উপভোগ করবে।’   

নতুন গবেষণার এ ফলাফল সাইক্লিস্টদের জন্য খুবই স্বস্তিদায়ক। কেননা ২০১২ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জানিয়েছিলেন, নিয়মিত যারা বেশি সাইকেল চালিয়ে থাকেন, তাদের হরমোনে ভারসাম্যহীনতা এবং যৌন স্বাস্থ্যে সমস্যা হতে পারে। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, সাইকেল চালানোর ফলে শরীরের স্পর্শকাতর অংশটিতে দীর্ঘ চাপ পড়ে, যা থেকে যৌন অক্ষমতা তৈরি হতে পারে।

তবে নতুন গবেষক দলটি আগের গবেষণার ফলাফলগুলোকে প্রত্যখান করেছেন, কারণ সেগুলো সীমিত সংখ্যক মানুষের ওপর করা হয়েছিল। ডা. ব্রেয়ার বলেন, ‘এটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বৃহত্তম তুলনামূলক গবেষণা, যেখানে সাইক্লিং এবং যৌন ও মূত্রনালীর সমস্যার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নাবলী করা হয়েছে।’

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ জানুয়ারি ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়