‘মৃত শিশুর পরিচয় নিয়ে সন্দেহ’, তদন্ত কমিটি গঠন
নিজস্ব প্রতিবেদক : জন্মের সময় চিকিৎসকরা শিশুকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন। শিশুটিকে দাফন করার উদ্দেশ্যে যখন গোসল করানো হচ্ছিল তখন সে বেঁচে ওঠে। এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অনেকে চিকিৎসা ব্যবস্থায় জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।
এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দায় এড়াতে দায় চাপাচ্ছে ওই পরিবারের ওপর। শিশুটির মাতৃ পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শারমিন নামে এক নারী একটি মৃত সন্তান জন্ম দেন বলে চিকিৎসকরা তার স্বজনদের জানান। পরে দাফনের জন্য শিশুটিকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শিশুটিকে দাফনের আগে গোসল করাতে গেলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকে। এরপর তাকে দ্রুত আজিমপুর মাতৃসদন ও পরে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিষয়টি জানার পর ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই শিশুটি শারমিনের কী-না তা আগে স্পষ্ট হতে হবে। এজন্য শিশু ও শারমিনের ডিএনএ পরীক্ষার একটি উদ্যোগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করবে বলে জানা গেছে।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দীন বলেন, শারমিন নামে এক রোগী আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি ২৭ সপ্তাহের প্রেগন্যান্সি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। আজ যখন তার ডেলিভারি হয়েছে তখন একটা মৃত সন্তান জন্ম হয়েছে। সে অনুযায়ী এখনও তার ব্লিডিং হচ্ছে। সেজন্য তার চিকিৎসা চলছে। এখানে তার আত্মীয়-স্বজনদের কাছে মৃত সন্তানটি দেওয়া হয়েছিল।
তিনি বলেন, শারমিনের মৃত সন্তান জন্ম হয়েছে। এখন যে শিশুকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে তার মা যে শারমীন- সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। এটা স্পষ্ট করতে আমরা ডিএনএ পরীক্ষা করব। এ ঘটনা তদন্তের চার সদস্যের কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
সাধারণত হাসপাতালে শিশু জন্মগ্রহণ করলে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সে অনুযায়ী ওই শিশুকেও তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও সেটি করেছে। তাহলে এখন কেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে যে শিশুটি শারমিনের নয়?
আশিক মাহমুদ নামে একজন রাইজিংবিডিকে বলেন, এখানে হাসপাতালের দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাদের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা না থাকায় মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সব বিষয় উঠে আসে না। যেসব বিষয় সামনে উঠে আসে সেসব বিষয় থেকে শিক্ষা গ্রহণ না করে দায় চাপানোর একটা সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে তৈরি হয়ে গেছে। এর থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে একজনের শিশু অন্যজনের বলে চালিয়ে দেওয়া হয় মাঝে মধ্যে। সুস্থ সন্তান জন্ম দেওয়ার পরও মাকে মৃত সন্তান ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাছাড়া চিকিৎসকদের অবহেলায় শিশুর মারা যাওয়ারও অভিযোগ পাওয়া যায়। বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে এসব নিয়ে লেখালেখিও হয়েছে। ভুক্তভোগীরা প্রতিকার চাইলেও সঠিক বিচার পান না বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ এপ্রিল ২০১৮/নূর/মুশফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন