ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

১৯৩৪ বিশ্বকাপ : ‘আজ্জুরি’দের মাথায় সাফল্যের মুকুট

মুহাম্মদ মেহেদী হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:২৭, ১৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
১৯৩৪ বিশ্বকাপ : ‘আজ্জুরি’দের মাথায় সাফল্যের মুকুট

দ্বিতীয় বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ইতালি। ম্যাচ শেষে উৎসবে মাতেন ইতালি খেলোয়াড়রা

অপেক্ষা আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা! তার পরেই শুরু `গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ`। বিশ্বকাপ ফুটবল। এক মাস সারা পৃথিবীকে এক সুরে বেঁধে রাখবে সেই এক খেলা। সারা বিশ্ব জুড়ে কয়েক কোটি মানুষ টিভির পর্দাতেই রোনালদো, মেসি, নেইমারদের পায়ের জাদুতে মগ্ন হবেন। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে এসে গেল ফুটবল বিশ্বকাপের মৌসুম। দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ ফুটবলের মাসকট ‘জাভিবাকা’।

প্রায় শতবর্ষের কাছাকাছি চলে যাওয়া এই টুর্নামেন্টের শুরুটা হয়েছিল কিভাবে? ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসই বা কি ছিল? বিশ্বকাপের আগের আসরগুলো কেমন ছিল? রাশিয়া বিশ্বকাপের আগে এ প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে অনেকের মনে। তাঁদের জন্য রাইজিংবিডি’র বিশেষ আয়োজন ‘‘ফিরে দেখা বিশ্বকাপ’’। ধারাবাহিকভাবে প্রচার করা হবে বিশ্বকাপের আগের ২০টি আসর। আজ প্রকাশ করা হচ্ছে দ্বিতীয় পর্ব।


১৯৩৪ বিশ্বকাপ:
১৯৩২ সালের অলিম্পিকে ছিলো না ফুটবল। তাই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরে সবারই ছিলো বাড়তি নজর। কিন্তু আসরের আগেই বিপত্তি। আগের বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে সাফ জানিয়ে দেয় ইতালিতে বিশ্বকাপ হলে খেলবে না তারা। কারণ তাদের দেশে আয়োজিত প্রথম বিশ্বকাপে খেলতে যায়নি ইতালি! বারংবার বোঝানোর পর ব্যর্থ হয়ে চ্যাম্পিয়ন দলকে ছাড়াই বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় ফিফা। বিশ্বকাপের ইতিহাসে চাম্পিয়ন দেশের পরের টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ না করার ঘটনা এই একটিই। আর বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসরেও চ্যাম্পিয়ন হয় স্বাগতিক দলই।

প্রথম বিশ্বকাপে দলগুলোকে আমন্ত্রণের মাধ্যমে আয়োজন করা হলেও দ্বিতীয় বিশ্বকাপ থেকেই শুরু হয় বিশ্বকাপের বাছাই পর্ব। ১৬টি দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেই ফিফা। কিন্তু এ আসরে খেলতে আগ্রহ দেখায় তার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি দেশ। তাই বাধ্য হয়েই বাছাই পর্ব আয়োজন করতে বাধ্য হয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। ৩৪টি দেশ বাছাই পর্ব খেলে। সুযোগ পাওয়া ১২টি দলই ছিলো ইউরোপের –অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেকোস্লোভাকিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ডস, রোমানিয়া, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও স্বাগতিক ইতালি। ল্যাটিন আমেরিকা থেকে ছিল ২টি দল- আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল। আফ্রিকা থেকে ওই আসরে প্রথমবার বিশ্বকাপে সুযোগ পায় মিশর। বাকি দলটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
 


মোট ৮টি ভেন্যু ব্যবহার করা হয় দ্বিতীয় বিশ্বকাপে। আর আসরে মোট ম্যাচ হয় ১৬টি। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা অংশগ্রহণ না করলে বিশ্বকাপের রঙ কিছুটা হারায় বটে। তবে টুর্নামেন্টই ঠিকই তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখে। বিতর্কও যে হয়নি, তাও নয়। আগের বিশ্বকাপে ৪টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলা হলেও এ বিশ্বকাপ হয় নকআউট পর্বের। অনেকেই বলে থাকেন স্বাগতিকদের চ্যাম্পিয়ন করতেই এ অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এ বিতর্ক উঠবেই না কেন? আগের বিশ্বকাপে ১৩টি দলকে নিয়ে চার গ্রুপ কিছুটা কঠিন থাকা সত্ত্বেও হয়েছে। অন্যদিকে এ আসরে ১৬টি দল নিয়ে গ্রুপিং করা সহজ হলেও তা করা হয়নি।

বিতর্ক আরও বাড়ে শুরুতেই ইউরোপের বাইরের দলগুলো বাদ পড়ে যাওয়ায়। আগের বারের ফাইনালিস্ট আর্জেন্টিনাকে বিদায় নিতে হয় মাত্র ১ ম্যাচ খেলেই। কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে –অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, জার্মানি, হাঙ্গেরি, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও ইতালি। কোয়ার্টার ও সেমিফাইনাল শেষে ফাইনালের টিকেট পায় চেকোস্লোভাকিয়া ও ইতালি। আর ফাইনালে ২-১ গোলে চেকোস্লোভাকিয়াকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপায় চুমু খায় আজ্জুরিরা।
 


দ্বিতীয় বিশ্বকাপের ফাইনালের ম্যাচে ইতালির নেতৃত্ব দেন জিয়ামপেইরো কম্বি আর চেকোশ্লাভাকিয়ার ফ্রান্তিসেক প্লানিকা। মজার ব্যপার দুজনেই ছিলেন গোলরক্ষক। এ আসর থেকে শুরু হয় তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। জার্মানি পায় তৃতীয় স্থান। আসরে মোট গোল হয় ৭০টি। এ আসরেই ইতালির এ্যানজেলো শিহাবো বিশ্বকাপের শততম গোলটি করেন। আর সর্বাধিক ৫টি গোল করেন চেক ফুটবলার অলডিচ নেজলি।
 


 

রাইজিংবিডি/১৬ মে ২০১৮/মুহাম্মদ মেহেদী হাসান/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়