ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

তারবিহীন হেডফোনে ক্যানসারের ঝুঁকি

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:২০, ১৮ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তারবিহীন হেডফোনে ক্যানসারের ঝুঁকি

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : আপনি কি ওয়্যারলেস বা তারবিহীন ব্লটুথ হেডফোন ব্যবহার করেন? তাহলে এ খবর সম্ভবত আপনার জন্য দুঃসংবাদ: অয়্যারলেস হেডফোনের ব্যবহারে ক্যানসারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। মিডিয়াম ডটকমে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক প্রতিবেদন এমনটা দাবি করছে।

অ্যাপল এয়ারপডের মতো যত দামি অয়্যারলেস হেডফোনই ব্যবহার করেন না কেন, আপনি থাকতে পারেন এই ঝুঁকির আওতায়। এই খবর কি এটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে এসব ব্লুটুথ হেডফোনের পরিবর্তে পুরোনো মডেলের তারযুক্ত হেডফোন ব্যবহার করা উচিৎ? এর উত্তর দেওয়া খুব একটা সহজ নয়।

গত সপ্তাহে মিডিয়াম ডটকমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন এয়ারপড ও অন্যান্য ব্লুটুথ হেডফোনের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। প্রতিবেদনটিতে কলোরাডো স্প্রিংসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর প্রাণরসায়নের অধ্যাপক জেরি ফিলিপস ব্লুটুথ হেডফোন সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে, আমরা অয়্যারলেস হেডফোনকে যতটা নিরাপদ ভাবি আসলে তা নয়। তিনি বলেন, ‘এয়ারপড নিয়ে আমার উদ্বেগ হলো, ইয়ার ক্যানেল বা কানপথে এসব ওয়্যারলেস হেডফোন স্থাপনে মাথার টিস্যুতে তুলনামূলক উচ্চ মাত্রার রেডিওফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন এক্সপোজ হয়।’ ড. ফিলিপস বলেন, ‘ঝুঁকির মধ্যে কোষের অস্বাভাবিক কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত, যা টিউমার অথবা অন্যান্য স্বাস্থ্য দুর্দশার কারণ হতে পারে।’

প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ রয়েছে যে, ব্লুটুথ ডিভাইসের জন্য নির্দেশিকা ও নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা জোরদার করার লক্ষ্যে জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে একটি পিটিশন পেশ করা হয়েছে। ডকুমেন্টটিতে ৪০টিরও বেশি দেশের ২৫০ জন গবেষক স্বাক্ষর করেছেন- তারা সতর্ক করেছেন যে কিছু ডিভাইসের ব্যবহার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। কিন্তু পিটিশনটি নতুন নয়, এটির উৎপত্তি ২০১৫ সালে এবং তাতে লিপিবদ্ধ আছে যে নন-আয়নাইজিং ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড (যা সকল ব্লুটুথ ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়) এবং রেডিওফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন নির্গতকারী ডিভাইস (যেমন- মোবাইল ফোন ও ওয়াই-ফাই) বিপজ্জনক।

কোনো সন্দেহ নেই যে ব্লুটুথ হেডফোন রেডিয়েশন নির্গত করে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে আপনি এসব জিনিস ব্যবহার করবেন না, বলেন নিউ ইয়র্কের লেক সাকসেসে অবস্থিত নর্থওয়েল হেলথ’স ব্রেইন টিউমার সেন্টারের পরিচালক ডা. মাইকেল শুল্ডার। তিনি যোগ করেন, ‘যদিও সকল বিশেষজ্ঞ একমত যে রেডিয়েশনের কোনো নিরাপদ মাত্রা নেই, কিন্তু রেডিয়শনকে সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। আমাদের জীবনে আমরা রেডিয়েশনকে পুরোপুরি এড়াতে পারব না, এমনকি যান্ত্রিক জীবন ছেড়ে সম্পূর্ণ গ্রাম্য পরিবেশে বাস করলেও।’ এর কারণ হলো, আমাদের খাবার, গাছপালা, আকাশপথে ভ্রমণ এবং এমনকি সূর্যেও রেডিয়েশন রয়েছে। তাহলে এখন বড় প্রশ্ন হলো, আপনি কতটুকু রেডিয়েশনের সংস্পর্শে আসবেন?

ডা. শুল্ডার বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে ব্লুটুথ হেডফোনের বাড়তি সুবিধা আমাকে প্রলুব্ধ করতে পারবে না, তাই আমি ব্যবহার করব না।’ কিন্তু যদি আপনি সত্যিই ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করতে চান, তাহলে করতে পারেন- সেটা আপনার বিবেচনা। ডা. শুল্ডার বলেন, ‘ব্লুটুথ হেডফোন অন্যান্য গ্যাজেট বা ডিভাইসের (যেমন- মোবাইল) তুলনায় কম রেডিয়েশন নির্গত করে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মোবাইল ফোন ব্রেইন টিউমার সৃষ্টি করে এটা নিশ্চিতভাবে বলার মতো তেমন কোনো বড় কোনো প্রমাণ নেই এবং আমরা জানি যে মোবাইল ফোনের চেয়ে ব্লুটুথের রেডিয়েশন কম।’

পরিশেষে, আপনি এয়ারপড বা অন্যান্য তারবিহীন ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার করবেন কিনা তা আপনার বিবেচনার ওপর ছেড়ে দেওয়া হলো।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মার্চ ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়