ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

হাইকোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর সাজা

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৯ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
হাইকোর্টের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীর সাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক : জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং তা দখলে রাখার অভিযোগে দুদকের দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের কোর্ট কিপার শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও তার স্ত্রীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।

প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. গোলাম ফারুককে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭০ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

স্বামীর অর্জিত সম্পদ বেনামদার হিসেবে দখলে রেখে স্বামীকে অপরাধে সহযোগিতা করার অপরাধে স্ত্রী মিসেস সৈয়দা মমতাজকে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২)/ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

আগামী ৬০ দিনের মধ্যে দু’জনের অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে আদায়ের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আসামি মো. গোলাম ফারুক কর্তৃক জ্ঞাত আয় বর্হিভূত সম্পদ নিজ দখলে রাখার অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায়  তাকে আরো ৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

গোলাম ফারুক কর্তৃক অবৈধভাবে তার দখলে রাখা সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দেয়া হয়েছে। আর তার দণ্ড একটির পর অপরটি কার্যকর হবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ দুই আসামি পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, দুদক  গোলাম ফারুককে সম্পদের বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিলে তিনি তা দাখিল করেন। সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক দেখে গোলাম ফারুক তার নিজ নাম ও দুই স্ত্রীর নামে সর্বমোট ৩ কোটি ২৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকার সম্পদের হিসাব ও দায় হিসেবে মোট ১ কোটি ২৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে বলে বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। এতে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়ায় এক কোটি ৯৯ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ টাকা।

গোলাম ফারুক নিজ নামে ও তার ২য় স্ত্রী সৈয়দা মমতাজের নামে মোট ৬১ লাখ টাকার জমি অর্জন করেন মর্মে বিবরণীতে উল্লেখ করেন। অথচ তিনি ৭৩ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩ টাকা বিনিয়োগ করে অর্জন করেন। এতে তিনি ১২ লাখ ৮২ হাজার ৮০৩ টাকা  মিথ্যা ও ভিত্তিহীণ তথ্য গোপন করেন। গোলাম ফারুক তার স্ত্রী মমতাজের নামে হাজারীবাগের রায়ের রাজার ৬ নং রোডে সিকদার রিয়েল এস্টেটে আড়াই কাঠা জমির ওপর ৬ তলা বাড়ি নির্মাণ করেন। ওই জমি তিনি এক লাখ টাকা মূল্যে তার স্ত্রীর নামে ক্রয় করেন। এতে তিনি ৪৯ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি নির্মাণ করেন বলে বিবরণীতে উল্লেখ করেন। কিন্তু দুদকের অনুসন্ধানে এক কোটি ৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪৯৩ লাখ ব্যয় করেন মর্মে দেখা যায়।

গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে সর্বমোট ৭০ লাখ ৫১ হাজার ২৯৬ টাকা জ্ঞাত আয় বর্হির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং আর এতে তাকে সাহায্য করার অভিযোগে সৈয়দা মমতাজের বিরুদ্ধে রমনা থানায় ২০১২ সালের ১৪ জুন দুদকের উপপরিচালক মোজাহার আলী সরদার মামলাটি দায়ের করেন। তিনিই মামলাটি তদন্ত করে পরের বছর ২ জুন  আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করেন। মামলাটির বিচারকাজ চলাকালে আদালত চার্জশিটভূক্ত ৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ মে ২০১৯/মামুন খান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়