মায়ের বাড়িতে মাথা নত করে থাকতে হবে-পু্ত্রবধূকে আদালত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাড়ি তার, অথচ তাকেই উৎখাত করে দিয়েছেন পুত্রবধূ। মায়ের এই অভিযোগ শুনে পুত্রবধূকে তীব্র ভর্ৎসনা করে কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, মায়ের বাড়িতে থাকতে হলে মাথা নত করে, শিরদাঁড়া ঝুঁকিয়ে থাকতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গের বাগুইআটি থানার দেশবন্ধুনগর তেঁতুলতলার বাসিন্দা শান্তি মোদকের অভিযোগ, বাড়ি থেকে তাকে উৎখাত করে দিয়েছেন ছেলে ও বৌমা। তিনি কখনও মেয়ের বাড়িতে, কখনও অন্যত্র থাকছেন। পুত্রবধূর বিরুদ্ধে তিনবার বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। অনুরোধ করেছেন, তিনি যাতে নিজের বাড়িতে ফিরতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হোক। পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে নিরুপায় হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি।
শান্তিদেবীর আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় আদালতে জানিয়েছেন, তার মক্কেলের স্বামী ক’বছর আগে মারা গিয়েছেন। তিনি স্ত্রীর নামে তিন কাঠা জমি কিনে সেখানে দোতলা একটি বাড়ি তৈরি করে দিয়ে যান। কিন্তু পুত্রবধূ সেই বাড়ি নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য বৃদ্ধাকে চাপ দিতে থাকেন। তখন এক প্রোমোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন শান্তিদেবী। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে প্রোমোটারের সঙ্গে চুক্তি হয় যে, তাকে তিনটি ফ্ল্যাট দেবেন প্রোমোটার। একটিতে থাকবেন শান্তিদেবী, একটিতে পুত্রবধূ। তৃতীয়টি বিক্রি করে সেই টাকা ব্যাঙ্কে রেখে নিজের খরচ চালাবেন। কিন্তু পুত্রবধূ তাতে রাজি নন। সেই জন্যই বিবাদ এবং যার ফলে শান্তিদেবীর বাড়ি থেকে উৎখাত হওয়া।
শান্তিদেবীর ছেলে শান্তনু মোদকের আইনজীবী অবশ্য এ দিন আদালতে দাবি করেন যে, তার মক্কেল তার মাকে যথেষ্ট ভালবাসেন। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয়।
সেই দাবি অবশ্য মানতে চাননি বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। উল্টে কড়া ভাষায় পুত্রবধূকে তিরস্কার করে তিনি পুলিশকে নির্দেশ দেন, অবিলম্বে বৃদ্ধাকে নিরাপত্তা দিয়ে বাড়ি ফেরাতে হবে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, এর পরেও পুত্রবধূ গোলমাল করলে প্রবীণ নাগরিকদের নিরাপত্তা ও ভরণপোষণ আইনের সাহায্য নিয়ে আদালতে যেতে পারবেন শান্তিদেবী।
সূত্র : আনন্দবাজার
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/শাহেদ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন