ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

রাস্তা দখল করে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৪৬, ২১ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাস্তা দখল করে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলামোড় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। ব্যস্ততম এই এলাকার উভয় পাশের রাস্তা দখল করে মহাসমাবেশ করেছে চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন।

আদালত থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের আগ থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাস্তা দখল করে এ কর্মসূচি পালন করে দলটি।

সমাবেশকে ঘিরে দুপুর ১২টা থেকে পল্টন মোড় থেকে দৈনিক বাংলামোড় পর্যন্ত রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দলটির নেতাকর্মীরা। যান চলাচল যাতে করতে না পারে এজন্য তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ দুই মোড়ে অবস্থান নেয়। এ সময় ওই পথে চলাচলকারী পথচারীদের অন্যপথ ঘুরে গন্তব্যে যেতে হয়েছে। এতে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পথচারীদের চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয়।

মহাসমাবেশ বাদ জুমা হওয়ার কথা থাকলেও তারা জুমার আগেই রাস্তার দুপাশে অবস্থান নেয়। জুমার নামাজ শেষে সমাবেশ শুরু হয়। রাস্তা দখল করে কর্মসূচি পালন করলেও দায়িত্বরত পুলিশ প্রশাসন ছিল নীরব। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ বায়তুল মোকাররম উত্তর এলাকাসহ পল্টন এলাকায় মোতায়েন করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কোনোপ্রকার অঘটন ছাড়াই রাস্তা দখল করে মহাসমাবেশ শেষ করে ইসলামী আন্দোলন।

বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ থেকে রোজার আগেই আদালত থেকে ভাস্কর্য সরানোর আল্টিমেটাম দেন দলটির আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।

তিনি সরকারকে হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, রমজানের আগে ভাস্কর্য সরিয়ে নেন, না হলে ঈদের পরেই সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও করে দাবি আদায় করা হবে।

তিনি বলেন, মূর্তির জায়গা মন্দিরে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে এই মূর্তি সরাতে হবে। মূর্তি না সরালে ১৭ রমজান সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচিও ঘোষণা করেন চরমোনাই পীর।

‘স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা শঙ্কিত। জাতীয় ঈদগাহের পাশে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবীর ‘মূর্তি’ স্থাপন করে মুসলমানদের ধর্মীয় চেতনায় সবচেয়ে বড় আঘাত হানা হয়েছে’ বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের দৃষ্টান্ত টেনে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, এখানে ‘মূর্তি’ কীভাবে এলো, কে বসাল, তিনি তা জানেন না। শুনেছি প্রধান বিচারপতির একক সিদ্ধান্তে ‘মূর্তি’ স্থাপিত হয়েছে।  কাদের স্বার্থে গ্রিক ‘মূর্তি’ সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হলো? এটা জনতার প্রশ্ন।

তিনি দাবি করেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টান অধ্যুষিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের সামনেও সর্বোচ্চ আইনদাতা হিসেবে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নাম স্থাপিত আছে। আর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্রে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবীর মূর্তি। প্রকৃতপক্ষে মাটি বা ধাতবের তৈরি ‘মূর্তি’ ন্যায়বিচারের প্রতীক হতে পারে না।

মহাসমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, মাওলানা আব্দুল হক আজাদ, মাওলানা আব্দুল আউয়াল পীর সাহেব খুলনা, মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, রাজনৈতিক উপদেষ্টা অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যাপক এটিএম হেমায়েত উদ্দিন, হাফেজ মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ আল ফরিদী প্রমুখ।

মহাসমাবেশ উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ থেকে তাদের নেতাকর্মীরা এ মহাসমাবেশে যোগ দেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২১ এপ্রিল ২১০৭/নঈমুদ্দীন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়