ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিপিএলের যত ফাইনাল

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:১৮, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিপিএলের যত ফাইনাল

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো মাঠে গড়ায় চার-ছক্কার ধুন্ধুমার আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ক্রিকেট তথা বিপিএল। প্রথম আসরেই পেয়ে যায় তুমুল দর্শকপ্রিয়তা। সেই জনপ্রিয়তার রেশ ধরে ২০১২-১৩ মৌসুমে মাঠে গড়ায় বিপিএলের দ্বিতীয় আসর। এরপর ফিক্সিং কেলেঙ্কারি কালিমা লেপে দেয় বিপিএলের গায়ে। সেই কালিমা নিয়ে দুই বছর বন্ধ থাকে দর্শকপ্রিয় এই মারমার-কাটকাট টুর্নামেন্ট।

ফিক্সিং কেলেঙ্কারির বিচার শেষে ২০১৫-১৬ মৌসুমে আবার মাঠে গড়ায় বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় এই লিগ। ২০১৬-১৭ মৌসুমের পর শেষের পথে বিপিএলের পঞ্চম আসর তথা ২০১৭-১৮ মৌসুম। আজ সন্ধ্যায় বিপিএলের পঞ্চম আসরের ফাইনালে লড়বে রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটস। এর মধ্য দিয়ে পর্দা নামবে পঞ্চম আসরের।

তার আগে চলুন স্মৃতির পাতা থেকে রোমন্থন করে আসা যাক। দেখে নেওয়া যাক কেমন ছিল বিপিএলের আগের চার আসরের ফাইনাল :

প্রথম আসর : ২০১২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি মাঠে গড়ায় বিপিএলের প্রথম আসর। সেবার অংশ নেয় ছয়টি দল। লিগ পর্বে যোগ্যতার প্রমান দিয়ে দুরন্ত রাজশাহী, খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলস, ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স ও বরিশাল বার্নার্স সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। নিয়মানুযায়ী পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা দুরন্ত রাজশাহীর সঙ্গে খেলে চতুর্থ স্থানে থাকা বরিশাল বার্নার্স। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলসের সঙ্গে খেলে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। ২৮ ফেব্রুয়ারি সেমিফাইনালে খুলনাকে হারিয়ে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স ও রাজশাহীকে হারিয়ে ফাইনালে আসে বরিশাল বার্নার্স। ২৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় ফাইনাল। বরিশাল প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ব্রাড হজের অপরাজিত ৭০ রানে ভর করে ১৪০ রানের সংগ্রহ পায়। জবাবে ইমরান নাজিরের ৭৫ ও এনামুল হকের অপরাজিত ৪৯ রানে ভর করে ১৫.৪ ওভারে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় মাশরাফি বিন মুর্তজার ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। শোকেসে তোলে বিপিএলের প্রথম আসরের শিরোপা।

ম্যাচসেরা হন ইমরান নাজির। আর সিরিজ সেরা হন সাকিব আল হাসান।
 


দ্বিতীয় আসর : বিপিএলের দ্বিতীয় আসর মাঠে গড়ায় ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি। দ্বিতীয় আসরে দলসংখ্যা  বেড়ে হয় ৭। লিগ পর্ব থেকে প্লে-অফে জায়গা করে নেয় ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স, সিলেট রয়্যালস, চিটাগং কিংস ও দুরন্ত রাজশাহী।রেস টু ফাইনালে মুখোমুখি হয় ঢাকা ও সিলেট। ঢাকা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ক্রিস গেইলের ৫১ বলে করা ১১৪ রানের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করে। জবাবে সিলেটও কম যায়নি। মুশফিকুর রহিমের ৪৪ বলে করা ৮৬ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানে থামে সিলেটের ইনিংস। ৪ রানের জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে চলে যায় ঢাকা গ্লাডিয়েটর্স। এলিমিনেশন ম্যাচে রাজশাহীকে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় চিটাগং। সেখানে তারা রেস টু দ্য ফাইনালে হার মানা সিলেট রয়্যালসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। ১৯ ফেব্রুয়ারির ফাইনালে ঢাকা প্রথমে ব্যাট করতে নেমে এনামুল হক বিজয়ের ৩৬ বলে করা ৫৮ ও সাকিব আল হাসানের ৪১ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭২ রান সংগ্রহ করে। জবাবে ঢাকার বোলারদের বোলিং তোপে ১৬.৫ ওভারে মাত্র ১২৯ রানে অলআউট হয়ে যায় চিটাগং। ৪৩ রানের জয়ে ব্যাক টু ব্যাক শিরোপা জিতে নেয় ঢাকা ডায়নামাইটস। ফাইনালে ঢাকার আলফোনসো থমাস ও মোশাররফ হোসেন রুবেল ৩টি করে উইকেট নেন। ম্যাচসেরা হন মোশাররফ হোসেন রুবেল। আর ঢাকার মতো ব্যাক টু ব্যাক সিরিজ সেরা হন সাকিব আল হাসান।
 


তৃতীয় আসর : বিপিএলের তৃতীয় আসর মাঠে গড়ায় ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বর। এই আসরে ছয়টি দল অংশ নেয়। গ্রুপপর্ব থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, বরিশাল বুলস, রংপুর রাইডার্স ও ঢাকা ডায়নামাইটস। প্রথম কোয়ালিফায়ারে রংপুর রাইডার্সকে ৭২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েই ফাইনালে নাম লেখায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এলিমিনেটর ম্যাচে ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৮ রানে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে জায়গা করে নেয় বরিশাল বুলস। সেখানে রংপুর রাইডার্সকে ৫ উইকেটের ব্যবধানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে তারা। ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ফাইনালে বরিশাল বুলস প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৫৬ রান তোলে। জবাবে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে কুমিল্লা। জিতে নেয় শিরোপা।

ফাইনালে ম্যাচসেরা হন অলক কাপালি। আর সিরিজ সেরা হন আসহার জাইদি।
 


চতুর্থ আসর :২০১৬ সালের ৮ ডিসেম্বর মাঠে গড়ায় বিপিএলের চতুর্থ আসর। এই আসরে অংশ নেয় ৭টি দল। লিগপর্ব থেকে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ঢাকা ডায়নামাইটস, খুলনা টাইটান্স, চিটাগং ভাইকিংস ও রাজশাহী কিংস।

প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হয় ঢাকা ও খুলনা। খলুনাকে মাত্র ৮৬ রানে অলআউট করে ৫৪ রানের জয় তুলে নিয়ে ফাইনালে নাম লেখায় বিপিএলের সবচেয়ে সফল দল ঢাকা। এলিমিনেটর ম্যাচে চিটাগং ভাইকিংসকে হারিয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে নাম লেখায় রাজশাহী কিংস। সেখানে খুলনা টাইটান্সকে ৭ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে ঢাকার সঙ্গী হয় ড্যারেন স্যামির নেতৃত্বাধীন রাজশাহী কিংস।

ফাইনালে এভিন লুইসের ৪৫ ও কুমার সাঙ্গাকারার ৩৬ রানে ভর করে ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ রান সংগ্রহ করে ঢাকা ডায়নামাইটস। জবাবে রাজশাহী কিংস ১৭.৪ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। ৫৬ রানের জয়ে বিপিএলের চতুর্থ আসরে তৃতীয় শিরোপা ঘরে তোলে ঢাকা ডায়নামাইটস।

ফাইনালের ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন কুমার সাঙ্গাকারা। আর টুর্নামেন্ট সেরা হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/আমিনুল/শামীম

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়