ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

চাঁদার দাবিতে যুবককে নির্যাতন ছাত্রলীগ নেতার!

তানজিমুল হক || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৫৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চাঁদার দাবিতে যুবককে নির্যাতন ছাত্রলীগ নেতার!

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈমুল হাসান নাঈমের বিরুদ্ধে নেতা-কর্মীদের নিয়ে যুবককে আটকে রেখে নির্যাতনের পর চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী আমজাদ হোসেনের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে তাকে ধরে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ নেতা নাঈমের অনুসারীরা। এরপর তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বাড়িতে ফোন দিয়ে দাবি করা হয় চাঁদা। পরে রাতে নগরীর মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে থেকে আমজাদকে উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সোহাগ নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করা হয়েছে।

আহত আমজাদকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) ভর্তি করা হয়েছে। তিনি রাজশাহীর মোহনপুরের গোছাবাজার গ্রামের তৈয়ব আলীর ছেলে। পড়াশোনা শেষে তিনি নেটওয়ার্ক মার্কেটিংয়ের ব্যবসা করেন।

আমজাদ বলেন, ‘বুধবার দুপুরে নগরীর শিরোইল এলাকায় অবস্থান করছিলাম। এ সময় ছাত্রলীগ কর্মী রকি আমাকে সাহেববাজারে ডাকেন। রকির বাড়িও মোহনপুরের গোছাবাজার। তিনি আমার প্রতিবেশী। এরপর আমি সাহেববাজার গেলে ছাত্রলীগ নেতা নাঈমের নেতৃত্বে রকি, আশরাফুল, শরিফুল, রায়হান ও রতনসহ কয়েকজন কথা আছে বলে রাজশাহী সিটি কলেজ হোস্টেলের দোতলায় নিয়ে যান। এরপর আমাকে লাঠি ও লোহার পাইপ দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। পরে আমার পরিবারের সদস্যদের ফোন দিয়ে দেড় লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন নাঈম। প্রথমে বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার এবং পরে আমাকে ফেরতের সময় বাকি টাকা দেওয়ার কথা হয়।’

এদিকে এ ঘটনার পর আমজাদের স্ত্রী জেসমিন খাতুন পুলিশে অভিযোগ করেন। এরপর আমজাদের মোবাইলফোন নম্বর ট্রেস করে তার অবস্থান নিশ্চিত হয় পুলিশ। বিষয়টি বুঝতে পেরে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা আমজাদকে মালোপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ সময় সোহাগ নামের এক ছাত্রলীগ কর্মীকে আটক করে পুলিশ।

অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা নাঈম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা সঠিক না। নাঈম নামে আরেকজন ছাত্রদল কর্মী আছেন। তিনি ছাত্রদল রাজশাহী কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুর রহমান সৌরভের অনুসারী। ছাত্রদল কর্মী নাঈম এ কাজটি করে থাকতে পারেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আমরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ব্যস্ত ছিলাম।’

আমজাদকে নির্যাতনে নিজ দলের কর্মীদের উপস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের নাম পরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এ ধরনের ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না।’

তবে এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদল নেতা খন্দকার মাকসুদুর রহমান সৌরভের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

নগরীর বোয়ালিয়া থানার উপপরির্দশক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় আমজাদের স্ত্রী অভিযোগ দিয়েছেন। সোহাগ নামের একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের আটকের জন্য অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। তবে তারা ছাত্রলীগের নেতাকর্মী কি না, সেটি বলতে পারব না।’

 

 

রাইজিংবিডি/রাজশাহী/১১ জানুয়ারি ২০১৮/তানজিমুল হক/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়