ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ব্যাংকগুলোর দেউলিয়াপনায় অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি

আসাদ আল মাহমুদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:১০, ২৩ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ব্যাংকগুলোর দেউলিয়াপনায় অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, সংসদ থেকে : দি ফারমার্স ব্যাংক জলবায়ু ট্রাস্টের ৫০৮ কোটি টাকা নিয়েও ফেরৎ দিতে না পারায় এবং দেশের অধিকাংশ ব্যাংক নিয়ম না মেনে প্রচুর পরিমাণ ঋণ দিয়ে আদায় করতে না পেরে দেউলিয়াপনা অবস্থায় এসেছে, জনগণের অর্থ লুটপাট করেছে।

বিশেষ করে বেক্সিমকো গ্রুপকে খেলাপি ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এ বিষয়ে এবং দেশের ৪৮টি ব্যাংকের আর্থিক অবস্থা কী তা জানাতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বিবৃতি দাবি করেছেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের দশম অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছে। অধিকাংশ ব্যাংকের প্রচুর পরিমাণ অর্থ অনাদায় থাকায় (ঋণখেলাপির) কারণে দেউলিয়া দশায় পড়েছে, তারা জনগণের অর্থ লুটপাট করেছে। তারা টাকা দিয়ে তুলতে পারছে না। এর ফলে দেশের উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দি ফারমার্স ব্যাংক জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের ৫০৮ কোট টাকা নিয়ে ফেরৎ দিতে পারছে না। অধিকাংশ ব্যাংক জনগণের অর্থ নিয়ে আর দিতে পারছে না। এর দায়-দায়িত্ব কে নেবে? এজন্য অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দীন আহমেদ বাবলু।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ ব্যাংক প্রচুর পরিমাণ টাকা বিভিন্ন সংস্থা বা কোম্পানিকে ঋণ হিসেবে দিয়ে আর আদায় করতে পারছে না। এখন তারা শুধু সুদটুকু দিতে পার্টিকে অনুরোধ করছে। কেননা, তারা ঋণ রিসিডিউল করতে চায়। এখন জণগণের অর্থ আর ব্যাংকে সুরক্ষিত নয়। তারা জনগণের অর্থও ফেরৎ দিতে পারছে না। এ যদি ব্যাংকগুলোর বর্তমান অবস্থা এমন হয় তা হলে আমরা জিডিপি ৭.২ কীভাবে অর্জন করব।

তিনি আরো বলেন, আজকে যারা ঋণখেলাপি তারা বহু তাগাদা সত্ত্বেও টাকা ফেরৎ দিচ্ছে না। এমনকি সুদও দিচ্ছে না। এখন রিসিডিউল করে কোনো মতে ব্যাংকগুলো তাদের রিপোর্ট ভাল দেখাতে চাইছে। এই নিয়ম ভেঙে ঋণ দেওয়ার সঙ্গে ব্যাংকের এমডিসহ অনেকই জড়িত। এভাবে ব্যাংকের অর্থ লুটপাট হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়েছে। কিন্তু দিচ্ছে না। আদায় হচ্ছে না। বেক্সিমকোসহ কয়েকটি ঋণখেলাপি কোম্পানির নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের এসব বড় বড় কোম্পানির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দেশের ৪৮টি ব্যাংকের কোনোটির কী অবস্থা তা আমরা জানতে চাই।

তিনি বলেন, মাননীয় অর্থমন্ত্রী আমরা কি ডুবন্ত নৌকায় নাকি ভাসন্ত নৌকায়, তা জানা প্রয়োজন। আমি এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করছি।

এর পরে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম  বলেন, বিশ্বব্যাংক আমাদের ২০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা আটকে দিয়েছে। ‘ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রকল্প চলমান ছিল যা ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছিল। প্রকল্পটি শেষ হওয়ার পরে দেখা যায়, মাত্র ১১ কোটি টাকা বেঁচে গেছে। যা বিশ্বব্যাংকে ফেরৎ দেওয়ার কথা। কিন্তু  স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মাত্র ১১ কোটি উদ্বৃত্ত টাকা ফেরৎ না দেওয়ায় বিশ্বব্যাংক সব টাকা অর্থাৎ ৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় বন্ধ করে দিয়েছে। এভাবে যদি চলে তবে ভবিষ্যতে বিশ্বব্যাংক উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেবে। এ বিষয়টি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৮/আসাদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়