ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

২০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে ছয় ব্যাংক

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:০৪, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
২০ হাজার কোটি টাকা চেয়েছে ছয় ব্যাংক

কেএমএ হাসনাত : রাষ্ট্রীয় খাতের ব্যাংকগুলো দুর্নীতি আর অনিয়মের কারণে চরমভাবে মূলধন ঘাটতিতে ভুগছে। এ অবস্থায় রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি ব্যাংক আর্থিক খাতে টিকে থাকতে সরকারের কাছে আবার অর্থ বরাদ্দ চেয়েছে। এ অর্থের পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকারও বেশি।

বুধবার সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের মূলধন সংক্রান্ত বৈঠকে এ অর্থ চাওয়া হয়েছে।

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব মোহাম্মদ ইউনুসুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠকে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট  ব্যাংকগুলোর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই অর্থ সরকার ‘নগদ’দিতে পারে। ‘গ্যারান্টি’আকারেও দিতে পারে। অর্থাৎ সরকারি ব্যাংকগুলো অন্য কোনো খাত থেকে মূলধন ঘাটতি পূরণে টাকা কর্জ করবে। তবে সে ক্ষেত্রে গ্যারান্টার হতে হবে সরকারকে। তবে এই বিষয়ে এখনো অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ চেয়েছে সোনালী ব্যাংক। রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বৃহত্তম এই ব্যাংকটি মূলধন ঘাটতি পূরণে চেয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা। অন্যদিকে, দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যাংক জনতা চেয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা।

দুর্নীতির কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং বহুল আলোচিত অপর ব্যাংক বেসিকও মূলধন পূরণে চেয়েছে আড়াই হাজার কোটি টাকা। মূলধন ঘাটতি মেটানোর জন্য রূপালী ব্যাংকের প্রয়োজন সাড়ে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, বিশেষায়িত ব্যাংক বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ৭ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক চেয়েছে ৮০০ কোটি টাকা।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ‘মূলধন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ’খাতে বরাদ্দ রয়েছে সাকুল্যে ২ হাজার কোটি টাকা। তাই মন্ত্রণালয় বছর জুড়ে এই পরিমাণ অর্থই তাদের দিতে পারে। তবে এজন্য ব্যাংকগুলোকে বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে- গত অর্থবছরে মূলধন পুনর্গঠনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া অর্থের বিষয়ে অর্থ বিভাগের আরোপিত শর্তাবলী প্রতিপালিত হয়েছে কি না? ব্যাংকের মূলধন পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য ব্যাংকগুলো কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে? মূলধন পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ার কারণ কী? ব্যাংকগুলোর সেবার মান বৃদ্ধিকল্পে এবং অটোমেশন কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? খেলাপি ঋণ আদায়ে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ‘ব্যাসেল-থ্রি’ (আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী মূলধনের পরিমাণ) অর্জনে ব্যাংকসমূহের বর্তমান অবস্থা কী?

যদি এসব প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর পাওয়া যায় তবে সে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংককে মূলধন ঘাটতি পূরণে টাকা দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সোনালীকে দেওয়া হতে পারে ৪৫০ কোটি টাকা। জনতাকে ২০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংককে ২৫০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংককে ৫৫০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংককে ৪০০ কোটি টাকা, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংককে দেওয়া হবে ১৪৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। অন্যদিকে গ্রামীণ ব্যাংকের অংশের পরিশোধিত মূলধনের জন্য দেওয়া হবে আরো ২১ লাখ টাকা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়