ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ভারতকে হারালেই শিরোপা বাংলাদেশের

আমিনুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১৭ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভারতকে হারালেই শিরোপা বাংলাদেশের

ক্রীড়া প্রতিবেদক : ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচ খেললে সেখানে ভারত ফেভারিট। তাদের বিপক্ষে ফুটবল খেললে সেখানেও তারা ফেভারিট। শুধু ক্রিকেট-ফুটবল নয়, অন্যান্য যেকোনো ক্রীড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারত ফেভারিট। কিন্তু শনিবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে ভারত নয়, বাংলাদেশ ফেবারিট। ফেবারিটের তকমা গায়ে মেখেই বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায় ফাইনালে মাঠে নামবে গোলাম রাব্বানী ছোটনের শিষ্যরা।

অবশ্য ফেবারিট হওয়ার যুক্তিযুক্ত কারণও রয়েছে। এই টুর্নামেন্টের প্রথম আসরে ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। এবারের আসরে দুই দলের পারফরম্যান্স বিবেচনা করলে সেখানেও বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ভারতের চেয়ে উজ্জ্বল। গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনাল মিলিয়ে যে তিনজন সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকায় শীর্ষে আছেন তাদের দুইজনই বাংলাদেশের (শামসুন্নাহার জুনিয়র ও তহুরা খাতুন, ৪ গোল)। তাদের পারফরম্যান্সে ভর করে আরো একবার ভারতকে হারিয়ে শিরোপা জেতার অপেক্ষায় গোটা বাংলাদেশ।





ফাইনাল ম্যাচকে সামনে রেখে প্রস্তুত বাংলাদেশের কিশোরীরা। ফাইনালকে সামনে রেখে আজ শুক্রবার সকালে চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মেয়েরা ৩৯ মিনিট রিকভারি ট্রেনিং করে। এরপর অনুশীলন করে। দলের সবাই সুস্থ্য আছে। শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট আছে। প্রধান কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন ও টেকনিক্যাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক ডিরেক্টর থমাস পল স্মলি বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের নানাভাবে অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করছেন। মেয়েরা ফাইনালে তাদের সেরাটা দিয়ে খেলে শিরোপা জিততে প্রস্তুত।

অনুশীলন শেষে কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন বলেন, ‘এই ম্যাচে আমরা আমাদের সামর্থের সবকুটু দিয়ে খেলব যাতে শিরোপা জিততে পারি। এই টুর্নামেন্ট খেলতে আসার আগে এটাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনালে আমরা আমাদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলেছি। ফাইনালে এসেছি। এই টুর্নামেন্টের জন্য গেল ৭ মাস আমরা অনুশীলন করেছি। দেশের সবাই আমাদের দলের জন্য দোয়া করবেন।’

বাংলাদেশ দলের গোলপোস্ট অক্ষত রাখার দায়িত্ব গোলরক্ষক মাহমুদা আক্তারের কাঁধে। গ্রুপ পর্ব ও সেমিফাইনাল- তিন ম্যাচেই তিনি গোলপোস্ট অক্ষত রেখেছেন। ফাইনালেও তেমনটা রাখতে চান, ‘স্বাগতিক ভুটানের বিপক্ষে সেমিফাইনালে বড় ব্যবধানে জিতে ফাইনালে আসতে পেরে আমি খুবই খুশি। এখন আমাদের আরো ভালো খেলতে হবে। আমি আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে চেষ্টা করব যাতে ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে জয় পাই। গোলরক্ষক হিসেবে আমি আমাদের গোলপোস্ট অক্ষত রাখার চেষ্টা করব। যেমনটা আগের তিন ম্যাচে করেছি। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’



বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪টি করে গোল করেছেন শামসুন্নাহার জুনিয়র ও স্ট্রাইকার তহুরা খাতুন। ফাইনালেও তহুরা যত দ্রুত সম্ভব গোল করতে চান, ‘আমরা ফাইনালে উঠেছি। এখন ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে আমরা আমাদের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করব জেতার এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। সাফ-২০১৮ এর শিরোপা জেতাটা আমার স্বপ্ন। ফাইনালে আমি যত দ্রুত সম্ভব গোল করতে চাই। যেমনটা আগের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ দলের হয়ে আমি করেছি।’

ভারতের বিপক্ষে নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলাদেশের কিশোরীরা। তারা জয় ভিন্ন অন্য কিছু চিন্তা করছে না। যেমনটা জানিয়েছেন অধিনায়ক মারিয়া মান্ডা, ‘এটা আমাদের ফাইনাল ম্যাচ। আমরা প্রস্তুত। সবাই প্রতিজ্ঞা করেছি ফাইনালে নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলব। যাতে ভারতের বিপক্ষে জয় পাই এবং শিরোপা জিততে পারি। ভারতকে শুরু থেকেই চাপে রেখে খেলার চেষ্টা করব এবং যত দ্রুত সম্ভব গোল আদায় করে নিব। যদিও ভারত ভালো দল এবং তাদের কয়েকজন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় রয়েছে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ফাইনাল ম্যাচ জিতে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা অক্ষুন্ন রেখে দেশে ফেরা। আমাদের জন্য সবাই দোয়া করবেন। যাতে শিরোপা জিততে পারি।’

সহ-অধিনায়ক আঁখি খাতুন স্বপ্ন পূরণ করে শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরতে চান, ‘আমার স্বপ্ন হচ্ছে ফাইনাল ম্যাচ জেতা এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে শিরোপা নিয়ে দেশে ফেরা।’



গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪-০ ব্যবধানে জয় পায়। এরপর নেপালের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে ওঠে। সেমিফাইনালে স্বাগতিক ভুটানকে ৫-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করে। তিন ম্যাচে বাংলাদেশ ২২ গোল করেছে। বিপরীতে একটি গোলও খায়নি। ফাইনালেও কী বাংলাদেশ তাদের স্কোরশিট ক্লিন রাখতে পারবে?

সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ এর দ্বিতীয় আসরে বাংলাদেশ দলের টিম স্পন্সর হিসেবে আছে ক্রীড়াবান্ধব প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন গ্রুপ। এর আগে ওয়ালটন ভারতে অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল। পাশাপাশি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৬ জাতীয় নারী ফুটবল দলের জাপান, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, চীন ও হংকং সফরেও তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিল।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৮/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়