ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মাশরাফির স্বস্তি-অস্বস্তি যেখানে

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৫৩, ২৩ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মাশরাফির স্বস্তি-অস্বস্তি যেখানে

ইয়াসিন হাসান, চট্টগ্রাম থেকে : সাগরপাড়ের শহরে প্রচন্ড গরম। ড্রেসিং রুম থেকে মাশরাফি যখন বেরিয়ে এলেন তখন রীতিমত ঘামছেন। সূর্য মামা তখন মধ্যগগণে। প্রখর রোদে মাশরাফি কিংবা উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের ইচ্ছে নেই পুরো মাঠ পেরিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যাওয়ার! তাই ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলন হলো প্রাণবন্ত আড্ডায়। মধ্যমনি হয়ে সবার মাঝে মাশরাফি। এভাবেই চলল প্রায় ১৪ মিনিটের সংবাদ সম্মেলন।

দল যখন ভালো করে তখন খারাপ দিকগুলো আড়ালে চলে যায়। আবার দল যখন খারাপ করে তখন ভালো জিনিসগুলোও চোখে পড়ে না। এ যেন জগতেরই নিয়ম।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডের কথাই ধরা যাক! ব্যাটিং বিপর্যয়ে না পড়লে সাইফউদ্দিনের ব্যাটিং সামর্থ্য জানাই যেত না। এজন্য ব্যাটিং বিপর্যয়কে আর্শীবাদ বলছেন মাশরাফি। স্বস্তিও পাচ্ছেন অধিনায়ক। তবে অস্বস্তিতেও ভুগছেন ভিন্ন কারণে। শেষ দুই ওয়ানডেতে দুই ওপেনার পেয়েছেন সেঞ্চুরি। অথচ দলের রান তিন’শ পৌঁছায়নি। মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগেছে বাংলাদেশ। তাতে কিছুটা চিন্তিত অধিনায়ক। সব মিলিয়ে নিজেদের ব্যাটিং নিয়ে দোটানায় বাংলাদেশ। তবে ইতিবাচক মাশরাফি ভাবছেন নিজেদের পক্ষে আসা সাফল্যগুলো নিয়ে।

‘ব্যাটিং বিপর্যয়কে দুদিক থেকে চিন্তা করতে হবে। বরঞ্চ আমি আমার দিক থেকে খুশি হয়েছি! সাইফউদ্দিন রান করায় আমি খুশি। এই পজিশনগুলো দেখা কিন্তু কঠিন। হয়তো আদর্শ পরিস্থিতি না। কিন্তু এ সমস্ত সুযোগ গুলো যদি না আসতো তাহলে কিন্তু ওদেরও আত্মবিশ্বাস বাড়ত না। আমাদের দলেরও আত্মবিশ্বাসের লেভেল বাড়ত না।’

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে দুবার ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ল বাংলাদেশ। দুবারই দারুণভাবে ফিরে এসেছে বাংলাদেশ। ১৭ রানে ২ উইকেট নেই বাংলাদেশের। সেখান থেকে ১৩৭ রান পর্যন্ত যেতেই আরও ৪ উইকেট নেই। সপ্তম উইকেটে ইমরুল ও সাইফউদ্দিন রেকর্ড ১২৭ রানের জুটিতে বাংলাদেশ পায় ২৭১ রানের পুঁজি। ইমরুল ১৪৪ ও সাইফউদ্দিন ৫০ রান করেন। ইমরুল ও সাইফউদ্দিনের এমন দৃঢ়তায় বেশ খুশি মাশরাফি। 

‘অনেক সময় যেটা হয়, টপ অর্ডারে রান হলে মিডল অর্ডারে এক্সপোজ হয় না। আমাদের ক্ষেত্রে লেট মিডল অর্ডারও এক্সপোজ হয়ে যায়। এবার সেখান থেকে ফিরে আসতে পেরেছি। এটা কিন্তু আমাদের ‍উপরে যেতে সহায়তা করবে। সব সময় যদি মুশফিক-রিয়াদ পর্যন্ত গিয়ে খেলা শেষ করেন এবং বড় স্টেজে গিয়ে যখন এটা (ব্যাটিং বিপর্যয়) হয় তখন কিন্তু দল মনোবল হারায়। তাই বলছি এটা এক দিক থেকে ভালো। মিডল অর্ডারের পরও লেট মিডল অর্ডার এক্সপোজ হয়েছে। ওরা রান করেছে।’



স্বস্তির মধ্যেও মাশরাফির অস্বস্তি দলীয় রান তিন’শ না ছোঁয়ায়। তার ভাষ্য,‘পরপর তিন উইকেট পড়াটা আদর্শ না। সবাই (মুশফিক, মিথুন, মাহমুদউল্লাহ) রানে আছে। ওদের রানে ফেরাটা সময়ের ব্যাপার। পরপর দুই ম্যাচে তামিমকে ছাড়া, ব্যাক টু ব্যাক ওপেনারদের সেঞ্চুরি পাওয়া ভালো। এটা অনেক বড় পাওয়া। কারণ ওপেনিংয়ে আমরা অনেক দিন থেকে ভুগছিলাম। পরপর দুই ম্যাচে ওপেনাররা সেঞ্চুরি করল অথচ রান তিন’শ হলো না। টপ অর্ডারে একজন এক’শ করলে কিন্তু রান তিন’শ হওয়া স্বাভাবিক। এই জায়গা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। যে এক’শ করছে তাকে অন্য কেউ সাহায্য করছে না। তার এক’শ এতো পরে গিয়ে হচ্ছে যে রানটা আর বড় হচ্ছে না। এই অ্যাডজাস্টমেন্টটা এখন হচ্ছে না। এখানে দ্রুত মানিয়ে নিতে হবে।’

মিরপুরে প্রথম ওয়ানডেতে দলীয় রান তিন’শ হয়নি ব্যাটসম্যানদের কারণে। ৬৬ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ইমরুল ও মিথুন ৭১ রান যোগ করেছিলেন। তাদের ব্যাটিংয়ে ভরসা পাচ্ছিলেন মাশরাফিও। কিন্তু হঠ্যাৎ জারভিসের আক্রমণে ১ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। একে একে সাজঘরে ফেরেন মিথুন, মাহমুদউল্লাহ ও মিরাজ। সেখান থেকে ফিরে এসে বাংলাদেশ চালকের আসনে বসলেও আরো ভালো ব্যাটিংয়ের প্রত্যাশায় মাশরাফি। এ নিয়ে মাশরাফি বলেছেন,‘মিথুন ও ইমরুল যেভাবে ব্যাটিং করছিল ওখান থেকে আরামে ৩০০ বা ৩১০-৩১৫ সম্ভব ছিল। এখানে (চট্টগ্রামে) উইকেট ফেয়ার থাকে। ফ্লাট হয়। আরও বেশি রান হয়। সেক্ষেত্রে কোনো অঘটন না হলে আমরা এখানে বড় রান আশা করছি। স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করা যাবে।’



রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২৩ অক্টোবর ২০১৮/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়