ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

মিরপুরে উড়ল বিজয়ের পতাকা

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৭, ১৫ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মিরপুরে উড়ল বিজয়ের পতাকা

ইয়াসিন হাসান : মিরপুর যেন বাংলাদেশের টেস্ট জয়ের পয়মন্ত ভেন্যু। ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট জয় তো হোম অব ক্রিকেটেই। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এ দুটি টেস্ট জয়ই তো সবথেকে বড়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর আবার মিরপুরে জিতল বাংলাদেশ।

এবারের জয়টি অনেক আরাধ্য, অনেক কাঙ্খিত। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় প্রাপ্তির খাতায় শুধু একটি জয়ই দেখাবে। কিন্তু এ টেস্ট জয়ের পিছনে তো রয়েছে অনেক গল্প। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিলেট টেস্ট হারের পর বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্বে লেগেছিল ‘কালিমা’। প্রশ্ন উঠেছিল বাংলাদেশ কি আসলেও টেস্ট খেলতে পারে? মাহমুদউল্লাহ যেমন হারের পর বলেছিলেন, ‘এভাবে টেস্ট খেলার কোনো অর্থ নেই’।



ঢাকা টেস্টে জিম্বাবুয়েকে ২১৮ রানে হারিয়ে সেই কালিমায় কিছুটা হলেও গৌরবের রং মেশালেন মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, মুমিনুলরা। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজ সমতায় শেষ করল। সাত ম্যাচ পর বাংলাদেশ জিতল টেস্ট ম্যাচ, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ষষ্ঠ এবং সব মিলিয়ে ড্র করল অষ্টম সিরিজ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পতপত করে উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা। রঙিন পোশাকে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে গেলেও টেস্টে ব্যাকগিয়ারে হাঁটা শুরু করেছিল। ঢাকা টেস্টের আগে দলের পরিসংখ্যান তো তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিল। টানা আট টেস্ট ইনিংসে ছিল না কোনো সেঞ্চুরি, দলের রান দুই’শ ছাড়ায়নি, বোলারদের নির্বিষ বোলিংয়ের সঙ্গে ছিল বাজে ফিল্ডিং। সব মিলিয়ে সাদা পোশাকে বাংলাদেশ দলটাই ছিল ছন্নছড়া।



দুর্বল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে দল হজম করে আরও বড় ধাক্কা। র‌্যাঙ্কিংয়ে হারায় ১০ রেটিং পয়েন্ট। তাইতো ঢাকা টেস্ট ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। শেষ পর্যন্ত জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে অন্তত মান বাঁচিয়েছেন ক্রিকেটাররা।

পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য জিম্বাবুয়ের ৮ উইকেট লাগত বাংলাদেশের, জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৩৬৭ রান। ৭৬ রানে দিন শুরু করা জিম্বাবুয়ে ১৪৮ রান তুলে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র। ২২৪ রানে অলআউট তারা। শেষ দিনে অবশ্য তাদের সবথেকে বড় প্রাপ্তি ব্রেন্ডন টেলরের সেঞ্চুরি। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি পেয়েছেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান।



শেষ দিনে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। ডানহাতি স্পিনার নিয়েছেন ৪ উইকেট। আগের দিনের ১ উইকেটের সঙ্গে সব মিলিয়ে তার শিকরা ৫টি। সিরিজ সেরা নির্বাচিত হওয়া তাইজুল নিয়েছেন ২ উইকেট। আর মুস্তাফিজুর রহমানের পকেটে গেছে ১ উইকেট।

প্রথম সেশনে ৮৮ রান তুলে জিম্বাবুয়ে হারায় ২ উইকেট। মুস্তাফিজের হাত ধরে আসে প্রথম সাফল্য। শন উইলিয়ামসকে বোল্ড করেন বাঁহাতি পেসার। এরপর তাইজুলের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরতি ক্যাচ দেন রাজা। সিরিজে সব মিলিয়ে তার শিকার ১৮ উইকেট।



বিরতি থেকে ফেরার পর মিরাজের বোলিং আক্রমণে উড়ে যায় জিম্বাবুয়ে। পিটার মুরকে ফিরিয়ে টেলর ও মুরের ৬০ রানের জুটি ভাঙেন মিরাজ। এরপর ৬৮ বলে শেষ ৪ উইকেট হারায় অতিথীরা। ৩টি উইকেটই পান মিরাজ। মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৮৭ মিনিটেই শেষ জিম্বাবুয়ে।



শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণে বাংলাদেশ সফল। সফল ব্যক্তিগত সাফল্যেও। মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি, মুমিনুলের দেড়’শ আর মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি যেন পুরো দলকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলার জন্য যথেষ্ট। আর তাইজুলের ১৮ উইকেট র্কীতি তো প্রাপ্তির সবথেকে বড় আনন্দ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ নভেম্বর ২০১৮/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়