ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার ‘ঘরে’ জামায়াতের প্রার্থী?

ফরহাদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৭, ১৭ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খালেদা জিয়ার ‘ঘরে’ জামায়াতের প্রার্থী?

রুহুল আমিন ভুঁইয়া

লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদর একাংশ) আসন খালেদার ঘর হিসেবে পরিচিত। এ আসন থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুইবার সংসদ নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন।

সেই খালেদার ঘরকে নিজেদের দখলে নিতে চায় নিবন্ধন হারানো জামায়াতে ইসলামী। জোটগতভাবে মনোনয়ন না দিলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়বেন তারা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দা-কুমড়া সম্পর্ক। হামলা-মামলার শিকার নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা ও খোঁজ-খবর না নেওয়ায় এখন আর বিএনপির সঙ্গী হতে চাচ্ছে না তারা।

স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন এস ইউ এম রুহুল আমিন। তিনি জেলা জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায় সদর মডেল থানা সূত্রে।

এ আসনে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। পরে দুই বারই তিনি আসন ছেড়ে দেন। এতে ৯৬ সালের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী মওদুদ আহমদকে হারিয়ে আওয়ামী লীগের হারুনুর রশিদ জয়ী হন। ২০০১ সালে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের হারুনুর রশিদকে হারিয়ে বিএনপির আবুল খায়ের ভূইয়া জয়ী হন।

২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনে দলের টিকিটে আবুল খায়ের ভূঁইয়া দ্বিতীয় বারের মতো এমপি হন। সর্বশেষ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জোটগত কারণে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি মোহাম্মদ নোমান এমপি নির্বাচিত হন।

লক্ষ্মীপুর-২ আসনে শুক্রবার পর্যন্ত বিএনপির দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক জাকির হোসেন ভূঁইয়া, ঢাকা কলেজের সাবেক ভিপি হারুনুর রশিদ, খালেদা জিয়ার সাবেক প্রধান নিরাপত্তা সমন্বয়কারী লে. কর্নেল (অব.) এম এ মজিদ, সদর উপজেলা (পশ্চিম) বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম হিরু চৌধুরী, জেলা বিএনপির সদস্য আবুল ফয়েজ ভূঁইয়া, ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মঞ্জুর এলাহী ও বিএনপির নেতা শাহেনা আক্তার নিলু।

রায়পুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম মিঠু বলেন,  এই আসনে বিএনপির ভোট ব্যাংক রয়েছে। পাশাপাশি এখানে দলের নেতাকর্মীরা সংগঠিত। নির্বাচনের জন্য তাদের একক সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। জোটগত ইস্যুতে জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। 

একাধিক জামায়াত নেতা জানান, বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে এ আসনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী হামলা-মামলার শিকার ও কারাবরণ করেছে। জেলা আমিরও ৩৮ দিন কারাগারে ছিলেন। কিন্তু স্থানীয় বিএনপির সিনিয়র নেতারা তাদের পাশে দাঁড়াননি। বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। বিএনপির এমন কর্মকাণ্ডে জামায়াতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা  ক্ষুব্ধ। তাই এবার আসনে বিএনপিকে ছাড় দিতে চাচ্ছে না তারা।

জেলা জামায়াতের আমির এস ইউ এম রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জামায়াত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। সেটি জোটগত অথবা এককভাবে। আর খালেদার ঘর বুঝি না, এখানে আমাদের ভোট ব্যাংক রয়েছে। এই আসনে ৯১ সালের নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী দ্বিতীয় হয়েছে।’’ এবার সুষ্ঠু ভোট হলে শতভাগ বিজয়ের আশা ব্যক্ত করেন এই জামায়াত নেতা।

১৪টি মামলার বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে মাত্র তিনটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তিনি জামিনে রয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি আবুল খায়ের ভূঁইয়া বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটে জামায়াত রয়েছে। এখন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও যুক্ত হয়েছে। দলের সিনিয়র নেতারা বসে আসন বণ্টন করবেন। ৯১ সাল থেকে আসনটি বিএনপির অনুকূলে রয়েছে। তাই লক্ষ্মীপুর-২ আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেওয়ার যৌক্তিকতা নেই।



রাইজিংবিডি/লক্ষ্মীপুর/১৭ নভেম্বর ২০১৮/ফরহাদ হোসেন/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়