ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

ভ্যাট আদায়ে নিউজিল্যান্ড ডেইরিকে চিঠি, শুনানি ২৬ ডিসেম্বর

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৮, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ভ্যাট আদায়ে নিউজিল্যান্ড ডেইরিকে চিঠি, শুনানি ২৬ ডিসেম্বর

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান নিউজিল্যান্ড ডেইরির কাছে বাকেয়া প্রায় ১৩ কোটি টাকার ভ্যাট আদায়ে শুনানিতে অংশ নিতে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) বৃহৎ করদাতা ইউনিট।

২০১৫ ও ২০১৬  এই দুই বছরে প্রতিষ্ঠানটির কাছে বকেয়া ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার ২৫ টাকার ভ্যাট আদায়ে নোটিশ দেয় বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ), মূল্য সংযোজন কর। কিন্তু নিউজিল্যান্ড ডেইরি প্রোডাক্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষ থেকে নোটিশের কোনো জবাব না দেওয়ায় এলটিইউ কর্তৃপক্ষ শুনানিতে অংশ নিতে আগামী ২৬ ডিসেম্বর হাজির হওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এলটিইউ’র কমিশনার মুহাম্মদ মুবিনুল কবীর সই করা চিঠির সূত্রে বকেয়া ভ্যাটের বিষয়টি জানা গেছে।

বাজারে থাকা নিউ জিল্যান্ড ডেইরি ব্র্যান্ডের গুড়ো দুধগুলো হলো ডিপ্লোমা, রেড কাউ, অ্যাংকর, সেইফ আপ মিল্ক, ফার্মল্যান্ড গোল্ড ও ফার্মল্যান্ড মিল্ক পাউডার। এছাড়া রয়েছে রেড কাউ বাটারওয়েল। নন ডেইরি পণ্যের মধ্যে রয়েছে-ডুডলস ইন্সট্যান্ট নুডলস, ডুডলস স্টিক নুডলস, পপাস চিপ ও ডেটস চিপ।

চিঠির সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের ভুলতা রূপগঞ্জ এলাকায় অবস্থিত নিউ জিল্যান্ড ডেইরি প্রতিষ্ঠানটি এনবিআরের আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)-মূল্য সংযোজন কর শাখার ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিক্রয় তথ্য গোপন করে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখতে প্রতিষ্ঠানটির দাখিলপত্র নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় এলটিইউ। সে অনুযায়ী চলতি মাসের ২ অক্টোবর এনবিআরের কর্মকর্তারা নিউজিল্যান্ড ডেইরির প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের পর প্রতিষ্ঠানটির সফটওয়্যার থেকে বিক্রয় বিবরণী ও দলিলাদি নিয়ে আসা হয়।

এনবিআর সূত্র জানায়, বিক্রয় বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা যায়-প্রতিষ্ঠানটি ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫২৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকার পণ্য বিক্রয় করেছে। অথচ তাদের মাসিক দাখিলপত্রে বিক্রি দেখানো হয়েছে ৪৪৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। দাখিলপত্রে প্রায় ৭৯ কোটি টাকা কম দেখানো হয়েছে। যার ওপর ১৫ শতাংশ হারে প্রযোজ্য ভ্যাট প্রায় ১১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

এছাড়া সফটওয়্যার থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছে প্রায় ৪৯৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটি দাখিলপত্রে বিক্রি দেখিয়েছে প্রায় ৪৮৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। সফটওয়্যারের চেয়ে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য গোপন করা হয়েছে প্রায় ৭ কোটি ২৮ লাখ টাকা। যার ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রায় এক কোটি ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ ২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছরে ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৫৯ হাজার ২৫ টাকার ভ্যাট প্রদেয়, যা প্রতিষ্ঠানটি পরিশোধ করেনি।

চিঠিতে আরো বলা হয়, প্রতিষ্ঠানটির এমন কার্যকলাপ মূসক আইন ১৯৯১ এর ধারা-৫, ৬, ৩১, ৩২ ও ৩৫ এবং মূসক বিধিমালার বিধি ৩,১৬,২২ ও ২৩ এর লঙ্ঘন। তাই মূসক আইন ১৯৯১ এর ধারা-৫৫ এর উপধারা (১) অনুযায়ী ওই টাকা দাবি করা হলো। আর এ দাবিনামা জারি করে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে চিঠি দিয়েছিল এলটিইউ কর্তৃপক্ষ।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৬ ডিসেম্বর ২০১৮/এম এ রহমান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়