ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ঢাকাসহ ৩০ জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাকাসহ ৩০ জেলায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকাসহ ৩০ জেলায় পুলিশি হয়রানি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের নির্যাতন বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

সোমবার দুপুরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠিটি ইসির সঙ্গে বৈঠককালে উপস্থাপন করা হয়।

৮ পৃষ্ঠার এই চিঠিতে অভিযোগ করা হয়, রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগরের কদমতলী থানা বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মীর হোসেন মীরুর বাড়িতে গোয়েন্দা বিভাগের একজন সহকারী পুলিশের কমিশনারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা হানা দেয় ও তাকে খুঁজতে থাকে। এ সময় ধানের শীষে প্রচার চালানো যাবে না বলে হুমকি দিয়ে যায়। অন্য নেতাকর্মীদের বাসায় বাসায় পুলিশি তল্লাশির নামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আগামী নির্বাচনে ভোট থেকে বিরত রাখার জন্য পুলিশ অস্ত্র দেখিয়ে হুমকি দেয়।

ঢাকা-৯ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস ১২ ডিসেম্বর জনসংযোগে বের হলে আকস্মিকভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আক্রমণ চালায় ও ধানের শীষের লিফলেট কেড়ে নেওয়া হয়। তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এ সময় বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম, বিএনপি নেতা রিপন, সিরাজসহ অনেকেই গুরুতর জখম হন।

নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারীকে সাদা পোশাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। একইভাবে মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবদুল হামিদের বাসায় তল্লাশির নামে পুলিশ হামলা চালায়।

নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তাসহ সকল থানার ওসিদের প্রত্যাহার করলে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে পাওয়া যাবে বলে চিঠিতে বলা হয়।

গতকাল রোববার চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানা বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রার্থী আবদুল মান্নানসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে পুলিশ বাধা দেয়। এমনকি গুলিও করা হয়েছে বলে চিঠিতে অভিযোগ করা হয়।

কুমিল্লা জেলা শহরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে শহরে বের হলে তাদেরকে বাধা দেয় পুলিশসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে বিএনপির পাঁচ নেতাকর্মী গুরুতর জখম হন। এ সময় তিনজন সমর্থকের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হলে, নৌকা মার্কা ছাড়া এলাকায় কেউ থাকতে পারবে না বলে পুলিশ সুপারের অফিস থেকে জানানো হয়।

জামালপুর-৩ আসনের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলসহ নেতাকর্মীরা হজরত শাহ কামাল (রা.) এর মাজার জিয়ারত করতে গেলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ১০-১২ জনকে গুরুতর জখম করে।

ভোলা-৪ আসনের প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলমের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

চট্টগ্রাম জেলায় রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির প্রার্থী আসলাম চৌধুরীর বাড়িতে নির্বাচনী সভা চলছিল। সভা থেকে বের হওয়ার পর ২৫ জনের বেশি নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। চট্টগ্রাম-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে অবৈধ অস্ত্র ধরিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলা বিএনপির নির্বাচনী পথসভায় পুলিশ আক্রমণ চালিয়ে পণ্ড করে। গতকাল ফরিদপুর শহরে চার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শহরের ২/৩ নং ওয়ার্ডে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর, নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, রাজশাহী, যশোর, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, নাটোর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, রংপুর, পাবনা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, সিরাজগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায়।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ ডিসেম্বর ২০১৮/হাসিবুল/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়